BRAC Bank-UNCDF

ব্র্যাক ব্যাংকের গল্প স্থান পেল ইউএনসিডিএফ’র কেস স্টাডিতে

নিজস্ব প্রতিবেদক: ইউনাইটেড ন্যাশনস ক্যাপিটাল ডেভেলপমেন্ট ফান্ড  (UNCDF)-এর কেস স্টাডিতে ব্র্যাক ব্যাংক-এর ডিজিটাল রেমিট্যান্সের সাফল্যের গল্প তুলে ধরা হয়েছে।

'মহামারির সময় নগদ লেনদেন থেকে ডিজিটাল রেমিট্যান্সে স্থানান্তর:  বাংলাদেশে ব্র্যাক ব্যাংক-এর একটি কেস স্টাডি'  শীর্ষক গবেষণাটিতে ডিজিটাল সার্ভিস কীভাবে সাধারণ মানুষকে আর্থিক খাতে অন্তর্ভুক্ত করেছে এবং তাদের আর্থ-সামাজিকভাবে ক্ষমতায়িত করেছে, তার উপর আলোকপাত করা হয়েছে।

ইউএনসিডিএফ ব্লগে প্রকাশিত এই কেস স্টাডি রেমিট্যান্স বাজারের অন্তর্দৃষ্টি এবং যে দেশটি প্রতি  বছর ২২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স গ্রহণ করে,  সে দেশে রেমিট্যান্স কীভাবে আর্থ-সামাজিক কাঠামোতে প্রভাব ফেলে সে বিষয়ে বিস্তারিত উল্লেখ করে।

কোভিড-১৯ মহামারির কারণে ডিজিটাল মাধ্যমে রেমিট্যান্সের পরিমাণ বেড়েছে। ২০২০ সালের প্রথমে মহামারির শুরুর দিকে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স কমে যাওয়ার আশংকা সুষ্টি হয়েছিল; যা অর্থনীতিতে, বিশেষ করে অভিবাসী পরিবারগুলোতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারত। কিন্তু ২০২০ সালে বিশ্বের নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে রেমিট্যান্স ১.৬ শতাংশ হ্রাস পেলেও,  বাংলাদেশে এর বিপরীত প্রভাব ঘটেছে। ইউএনসিডিএফ-এর পাওয়া তথ্যানুসারে বাংলাদেশে বৈদেশিক রেমিট্যান্স বেড়েছে ১৮ শতাংশ।

“২০১৯ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত, ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড - এর রেমিট্যান্সে ডিজিটাল লেনদেন - ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা মোবাইল ওয়ালেট - ৩৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ৭৫ শতাংশ হয়েছে। ডিজিটাল ট্রান্সফার নগদ রেমিট্যান্সের চেয়ে শুধু সাশ্রয়ী, দ্রুত ও নিরাপদই নয়; এর মাধ্যমে আরও ক্ষুদ্র অংকের, আরও বেশি বেশি লেনদেন করা সম্ভব। বিকাশ মোবাইল ওয়ালেটের মাধ্যমে প্রাপ্ত লেনদেনের প্রায় ৮৬ শতাংশই ২০০ মার্কিন ডলারের কম, যার পরিমাণ ব্যাংক অ্যাকাউন্টে প্রাপ্ত লেনদেনের ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশ এবং নগদ অর্থের ক্ষেত্রে ১৯ শতাংশ।” - তথ্যানুসারে জানা যায়।

এর আগে, বাংলাদেশি রেমিট্যান্স গ্রহীতাদের ডিজিটাল চ্যানেলে অ্যাক্সেস উন্নত করতে এবং রেমিট্যান্স - লিঙ্কড,  ভ্যালু-অ্যাডেড সার্ভিসের ব্যবহার জোরদার করতে ব্র্যাক ব্যাংক ইউএনসিডিএফ-এর সাথে অংশীদারিত্ব করে। গবেষণার অংশীদারিত্ব শুরু করার জন্য দু’টি সংস্থাই প্রাতিষ্ঠানিক এবং ড্যাটা ম্যাপিং পরিচালনা করার পাশাপাশি বাংলাদেশের রেমিট্যান্স বাজারের একটি বিশদ মার্কেট  পর্যালোচনা করেছে এবং প্রায় আট লাখ আন্তর্জাতিক রেমিট্যান্স গ্রাহককে নিয়ে ৩.৮ মিলিয়ন সংখ্যক লেনদেনের রেকর্ড বিশ্লেষণ করেছে।

২০২০ সালের মে মাসে তাদের অংশীদারিত্ব চালু করার পর ইউএনসিডিএফ-এর বিনিয়োগের সহায়তায় ব্র্যাক ব্যাংক বিদ্যমান ডিজিটাল রেমিট্যান্স ডেলিভারি চ্যানেল—  যেমন ব্যাংক সরাসরি ক্রেডিট এবং বিকাশ মোবাইল ওয়ালেট সেবাকে আরো উন্নত করেছে।

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে নগদ থেকে ডিজিটাল রেমিট্যান্স চ্যানেলে লেনদেনের এ পরিবর্তনের ফলে রেমিট্যান্স সংশ্লিষ্ট আর্থিক সার্ভিস - যেমন দেশের অভ্যন্তরের পেমেন্ট, আমানত, সঞ্চয় এবং বীমার মাধ্যমে বিস্তৃত পরিসরে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। যেসব ক্ষেত্রে ডিজিটাইজেশন এই রেমিট্যান্স ব্যবহারে সহায়তা করতে পারে তার মধ্যে আছে - শিক্ষা, স্বাস্থ্য বা ইউটিলিটি বিল পেমেন্ট। ব্র্যাক ব্যাংক এবং ইউএনসিডিএফ অংশীদারিত্ব এই ধরনের মূল্য সংযোজন সার্ভিসগুলোকে আরো বিস্তৃত করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

ব্র্যাক ব্যাংক-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও সেলিম আর. এফ. হোসেন বলেন - “আমরা অত্যন্ত সম্মানিত যে, আমাদের ডিজিটাল রেমিট্যান্সের সাফল্যের গল্পটি ইউএনসিডিএফ তুলে ধরেছে। এর থেকে এটাই প্রমাণিত হয় যে, ভালো কাজগুলো আড়ালে থাকে না। ডিজিটালাইজেশনের পরিধি ও বিস্তৃতি আরও বাড়াতে এই স্বীকৃতি আমাদের অনুপ্রাণিত করবে।” 

তিনি আরও বলেন - “মহামারির শুরুতে আউটলেট থেকে নগদ সংগ্রহ করা ঝুঁকিপূর্ণ ছিল, অনেকের কাছেই তা অ্যাক্সেসযোগ্যও ছিল না। সেই সময় ক্যাশলেস রেমিট্যান্স চ্যানেলের প্রচার এবং স্বীকৃতি দেয়া ইউএনসিডিএফ (UNCDF)-এর একটি খুব সময়োপযোগী পদক্ষেপ ছিল। আমরা যে রকম সাড়া পেয়েছি, তা আগামী দিনে ডিজিটাল রেমিটেন্সের বিশাল সম্ভাবনার কথাই বলে।” 

হুলসাও,  রবিন গ্রেভ স্টেজন এবং প্রেমাশিষ মুখার্জী’র লেখা এই কেস স্টাডির বিস্তারিত জানা যাবে এই লিঙ্কে:  https://migrantmoney.uncdf.org/case-study-of-brac-bank-in-bangladesh

ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড সম্পর্কে:
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) খাতের অর্থায়নে অগ্রাধিকার দেয়ার ভিশন নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড ২০০১ সালে যাত্রা শুরু করে, যা এখন পর্যন্ত দেশের অন্যতম দ্রুত প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী একটি ব্যাংক। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ‘BRACBANK’ প্রতীকে ব্যাংকটির শেয়ার লেনদেন হয়। ১৮৭টি শাখা, ৩৭৩টি এটিএম, ৪৫৬টি এসএমই ইউনিট অফিস, ৭৫০টি এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট এবং ৮ হাজারেরও বেশি মানুষের বিশাল কর্মীবাহিনী নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক কর্পোরেট ও রিটেইল সেগমেন্টেও সার্ভিস দিয়ে আসছে। ব্যাংকটি দৃঢ় ও শক্তিশালী আর্থিক পারফরম্যান্স প্রদর্শন করে এখন সকল প্রধান প্রধান মাপকাঠিতেই ব্যাংকিং ইন্ডাস্ট্রির শীর্ষে অবস্থান করছে। তের লাখেরও বেশি গ্রাহক নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক বিগত ২০ বছরেই দেশের সবচেয়ে বৃহৎ জামানতবিহীন এসএমই অর্থায়নকারী ব্যাংক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দেশের ব্যাংকিং খাতে সুশাসন, স্বচ্ছতা ও নিয়মানুবর্তিতায় অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ব্র্যাক ব্যাংক।   
বিনিয়োগবার্তা/ডিএফই//


Comment As:

Comment (0)