Bank Asia Aquisition of Bank Alfalah 180424

ব্যাংক আলফালাহর বাংলাদেশের ব্যবসা অধিগ্রহণ করবে ব্যাংক এশিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক: পাকিস্তানভিত্তিক ব্যাংক আলফালাহর বাংলাদেশের ব্যবসা, সম্পদ ও দায় অধিগ্রহণ করছে ব্যাংক এশিয়া পিএলসি। দেশের বেসরকারি খাতের ব্যাংকটি এর আগে ব্যাংক আলফালাহর কাছে এ বিষয়ে প্রস্তাব দিয়েছিল, এরই মধ্যে যা অনুমোদন করেছে বিদেশী ওই ব্যাংকটির পর্ষদ। পাকিস্তান স্টক এক্সচেঞ্জে গতকাল দেয়া এক নোটিসে ব্যাংক আলফালাহ এ তথ্য জানিয়েছে।

অধিগ্রহণের বিষয়ে পাকিস্তান স্টক এক্সচেঞ্জকে দেয়া ওই নোটিসে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ব্যবসা, সম্পদ ও দায় অধিগ্রহণের বিষয়ে ব্যাংক এশিয়ার কাছ থেকে পাওয়া প্রস্তাবে পর্ষদ নীতিগতভাবে অনুমোদন দিয়েছে। সব ধরনের প্রযোজ্য আইন ও বিধি-বিধান এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন সাপেক্ষে এটি বাস্তবায়ন করা হবে। অধিগ্রহণ কার্যক্রম সম্পন্ন করতে এখন পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক তথা স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের অনুমোদন চাইবে ব্যাংক আলফালাহ।

১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠার পর এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো কোনো বিদেশী ব্যাংকের বাংলাদেশে থাকা কার্যক্রম কেনার পদক্ষেপ নিয়েছে ব্যাংক এশিয়া। এর আগে কানাডাভিত্তিক নোভা স্কোটিয়া ও পাকিস্তানের মুসলিম কমার্শিয়াল ব্যাংকের বাংলাদেশ কার্যক্রম অধিগ্রহণ করেছিল বেসরকারি খাতের এ ব্যাংকটি।

ব্যাংক আলফালাহর বাংলাদেশে থাকা কার্যক্রম অধিগ্রহণের বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যাংক এশিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সোহেল আর কে হুসেইন বলেন, ‘এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হলে পরে জানানো হবে।’

আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, সমাপ্ত ২০২৩ হিসাব বছরে ব্যাংক আলফালাহর বাংলাদেশের সম্পদ দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ১৪৩ কোটি টাকা। আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৩ হাজার ১০৯ কোটি টাকা। আলোচ্য হিসাব বছর শেষে ব্যাংকটির মোট দায় ২ হাজার ৫২৪ কোটি টাকা, আগের বছরে যা ছিল ২ হাজার ৫২৩ কোটি টাকা। ব্যাংক আলফালাহর বাংলাদেশের শেয়ারহোল্ডারদের ইকুইটির পরিমাণ ৬১৯ কোটি টাকা, আগের হিসাব বছর শেষে ছিল ৫৮৬ কোটি টাকা। 

২০২৩ সাল শেষে ব্যাংক আলফালাহর বাংলাদেশে সুদ আয় হয়েছে ১৫৯ কোটি টাকা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ১১৭ কোটি টাকা। আলোচ্য হিসাব বছরে ব্যাংকটির পরিচালন আয় হয়েছে ১৩৮ কোটি টাকা, আগের বছরে যা ছিল ১০৯ কোটি টাকা। কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ৪৩ কোটি টাকা, আগের হিসাব বছর শেষে যা প্রায় ১৪ কোটি টাকা ছিল। 

এদিকে অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৩ হিসাব বছরের তিন প্রান্তিকে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) ব্যাংক এশিয়ার শেয়ারপ্রতি সমন্বিত আয় (ইপিএস) হয়েছে ৩ টাকা ৬ পয়সা। এর আগের হিসাব বছরে একই সময়ে যা ছিল ২ টাকা ৬৮ পয়সা। গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংকটির সমন্বিত শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ২৬ টাকা ২৬ পয়সায়। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ২৪ টাকা ৫১ পয়সায়। 

৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০২২ হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ১৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে ব্যাংক এশিয়া। আলোচ্য হিসাব বছরে ব্যাংকটির সমন্বিত ইপিএস হয়েছে ২ টাকা ৬২ পয়সা। এর আগের বছরে যা ছিল ২ টাকা ৩৪ পয়সা। ওই বছরের ৩১ ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকটির সমন্বিত এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ২৪ টাকা ৪১ পয়সায়। আগের বছর শেষে যা ছিল ২৩ টাকা ৩৩ পয়সায়। 

২০০৪ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া ব্যাংক এশিয়ার অনুমোদিত মূলধন ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। পরিশোধিত মূলধন ১ হাজার ১৬৫ কোটি ৯১ লাখ টাকা। রিজার্ভে রয়েছে ১ হাজার ৬৮০ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। মোট শেয়ার ১১৬ কোটি ৫৯ লাখ ৬ হাজার ৮৬০টি। এর মধ্যে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের কাছে ৫৩ দশমিক ২২ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ৩৬ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে বাকি ১০ দশমিক ৭৮ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল ব্যাংক এশিয়ার শেয়ারের সর্বশেষ ও সমাপনী দর ছিল ১৮ টাকা ৪০ পয়সা। গত এক বছরে শেয়ারটির সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ দর ছিল যথাক্রমে ১৭ টাকা ৮০ পয়সা ও ২০ টাকা ৮০ পয়সা।

বিনিয়োগবার্তা/ডিএফই//


Comment As:

Comment (0)