ইপিবির হালনাগাদ প্রতিবেদন
১০ মাসে ৪৭ দশমিক ৪৭ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রফতানি
নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ থেকে চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) বিশ্ববাজারে ৪ হাজার ৪৭৪ কোটি ১৭ লাখ ৭০ হাজার বা ৪৭ দশমিক ৪৭ বিলিয়ন ডলারের বেশি পণ্য রফতানি হয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরের একই সময়ে রফতানি হয়েছিল ৪ হাজার ৫৬৭ কোটি ৭৬ লাখ ২০ হাজার ডলারের পণ্য। সে হিসাবে এবার ৩ দশমিক ৯৩ শতাংশ বেশি রফতানি হয়েছে।
তবে গত এপ্রিলে বাংলাদেশ থেকে রফতানি কমেছে দশমিক ৯৯ শতাংশ। গত মাসে ৩৯১ কোটি ৬৯ লাখ ৯০ হাজার ডলারের পণ্য বিশ্ববাজারে রফতানি হয়েছিল। আগের বছরের একই মাসে রফতানি হয়েছিল ৪৭০ কোটি ৭০ লাখ ডলারের পণ্য।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে এ দাবি করেছে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)।
খাতসংশ্লিষ্টদের অবশ্য ইপিবি প্রকাশিত রফতানি তথ্য নিয়ে বেশ অনাস্থা রয়েছে। তাদের মতে, প্রতি মাসে প্রকাশিত এ পরিসংখ্যান রফতানিমুখী প্রতিষ্ঠানগুলোর বাস্তব পরিস্থিতির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। ইপিবি প্রকাশিত পরিসংখ্যানে রফতানির প্রবৃদ্ধি প্রকাশ পেলেও বাস্তবতা হচ্ছে, ক্রয়াদেশ সংকটে কারখানাগুলোয় এখন রফতানি নিম্নমুখী। কাস্টমসের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) মোট রফতানির অ্যাসেসড ভ্যালু ২৬ বিলিয়ন ডলার। অথচ ইপিবি প্রকাশিত পরিসংখ্যান বলছে, একই সময়ে বাংলাদেশ থেকে রফতানি হয়েছে ৩৩ বিলিয়ন ডলারের পণ্য।
বিভ্রান্তিকর এ চিত্র নিয়ে তৎপর হয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ও। পরিসংখ্যানে বড় ধরনের ফারাক রফতানির আড়ালে বিদেশে অর্থ পাচারের ইঙ্গিত বহন করছে কিনা এ নিয়েও অনেকটা উদ্বেগ রয়েছে সরকারের নীতিনির্ধারণী মহলে। এ ফারাকের কারণ অনুসন্ধান ও তা কমিয়ে আনার বিষয়ে করণীয় নির্ধারণেও পদক্ষেপ নিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। এ বিষয়গুলো দেখতে সম্প্রতি তিনটি সংস্থাকে নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটির ৩১ মার্চের মধ্যে এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন দেয়ার কথা ছিল। ঈদের আগে এ কমিটির প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে এপ্রিলের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছিল বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
ইপিবির গতকাল প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, অর্থমূল্য বিবেচনায় বাংলাদেশ থেকে রফতানি হওয়া শীর্ষ পণ্যগুলো হলো পোশাক, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, কৃষিপণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য এবং হোম টেক্সটাইল। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে দেশের মোট রফতানির ৯১ দশমিক ৭৬ শতাংশজুড়েই ছিল এসব পণ্য। তবে শীর্ষ পণ্যগুলোর মধ্যে পোশাক ও কৃষি ছাড়া বাকিগুলো রফতানিতে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে।
আগের অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসের তুলনায় চলতি অর্থবছরের একই সময়ে পোশাক রফতানি বেড়েছে ৪ দশমিক ৯৭ শতাংশ। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রফতানি অবশ্য ১৩ দশমিক ৩২ শতাংশ কমেছে। কৃষিপণ্য রফতানি বেড়েছে ৬ দশমিক ১২ শতাংশ। পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানি কমেছে ৭ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ। হোম টেক্সটাইল পণ্য রফতানিও ২৫ দশমিক ৩২ শতাংশ কমেছে।
ইপিবি প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, অর্থমূল্য বিবেচনায় বাংলাদেশ থেকে মোট রফতানির ৮৫ দশমিক ৩০ শতাংশই ছিল তৈরি পোশাক। চলতি অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল পর্যন্ত বিশ্ববাজারে ৪ হাজার ৪৯ কোটি ৪২ লাখ ৬০ হাজার ডলারের তৈরি পোশাক রফতানি করেছে বাংলাদেশ। আগের অর্থবছরের একই সময় ৩ হাজার ৮৫৭ কোটি ৭৫ লাখ ১০ হাজার ডলারের পণ্য রফতানি হয়েছিল। এবার নিটওয়্যার তৈরি পোশাক রফতানিতে ৯ দশমিক ১১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। ওভেনে প্রবৃদ্ধি বেড়েছে দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ।
বিনিয়োগবার্তা/এসএএম//