BD Zimbwe T20 Win

বাংলাদেশের বড় জয়

ডেস্ক রিপোর্ট: অভিষেক ম্যাচেই ব্যাট হাতে আলো ছড়ালেন তানজিদ হাসান তামিম। বাংলাদেশকে এনে দিলেন ৮ উইকেটের বড় জয়। অভিষেক ম্যাচেই পেয়েছেন হাফ সেঞ্চুরির স্বাদ। বিশ্বকাপের আগে ব্যাটে-বলে বাংলাদেশের প্রস্তুতিটা বেশ ভালোভাবেই শুরু হয়েছে। জিম্বাবুয়েকে মাত্র ১২৪ রানেই আটকে দিয়েছিলেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন-তাসকিন আহমেদরা। সেই লক্ষ্য ২৮ বল হাতে রেখেই পেরিয়ে গেছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল।

ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দেখেশুনে শুরু করেছিলেন লিটন দাস ও তানজিদ। জিম্বাবুয়ের পেসার রিচার্ড এনগারাভার করা প্রথম ওভারে দুই ওপেনার মিলে তুলেছিলেন ৫ রান। ব্লেসিং মুজারাবানির দ্বিতীয় ওভারেই বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন লিটন। তাতেই ওপেনিং জুটি ভাঙে বাংলাদেশের। মুজারাবানির গুড লেংথের বল লিটনের ব্যাট ও প্যাডের ফাঁক গলে আঘাত হানে স্টাম্পে। মাত্র ১ রান করেই ফিরে যেতে হয় লিটনকে। এক ওভার পরেই চট্টগ্রামে আঘাত হানে বৃষ্টি। এর ফলে প্রায় আধা ঘণ্টা বন্ধ থাকে খেলা। খেলা শুরু হওয়ার পর আক্রমণাত্মক হতে গিয়ে উইকেট দিতে বসেছিলেন তানজিদ।

চতুর্থ ওভারের তৃতীয় বলে মুজারাবানিকে পুল করতে গিয়ে টপ এজ করেছিলেন। তবে ক্যাচ ধরতে গিয়ে উইকেটরক্ষক ক্লাইভ মাদান্দের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় বোলার মুজারাবানির। ফলে জীবন পান তানজিদ। এরপর হাতখুলে খেলেছেন বাংলাদেশের এই ওপেনার। সিকান্দার রাজার ওভারে দুটি ছক্কা হাঁকান তিনি। এরপর তানজিদের ছন্দে আবারও বাগড়া বাঁধায় বৃষ্টি। ফলে আরও আধা ঘণ্টা বন্ধ থাকে খেলা। এরপর দ্রুত ফিরে যান শান্ত। লুক জঙ্গুয়ের করা ১০ম ওভারের দ্বিতীয় বলে মিড উইকেট দিয়ে টেনে ছক্কা মারতে গিয়ে শন উইলিয়ামসকে ক্যাচ দেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।

১ চারে ২৪ বলে ২১ রান আসে তার ব্যাট থেকে। এরপর তাওহীদ হৃদয়কে নিয়ে বাংলাদেশের ইনিংস টানেন তানজিদ। ৩৬ বলে তিনি অভিষেকেই তুলে নেন হাফ সেঞ্চুরি। জুনায়েদ সিদ্দিকীর পর বাংলাদেশের দ্বিতীয় ব্যাটার হিসেবে অভিষেকেই পঞ্চাশ ছুঁয়েছেন তানজিদ। শেষ পর্যন্ত ৪৭ বলে ৬৭ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি। হৃদয় ১৮ বলে ৩৩ রান করে তাকে সঙ্গ দেন। এই ম্যাচে টসে হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ভালো শুরুর আভাস দিয়েও মাত্র ৯ বলের ব্যবধানে ৫ উইকেট হারিয়ে বসে জিম্বাবুয়ে। ৪১ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে জিম্বাবুয়ে তখন নিজেদের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে সর্বনিম্ন রানে অল আউট হওয়ার শঙ্কায়। এমন সময় সফরকারীদের হয়ে হাল ধরেন ক্লাইভ মাদান্দে এবং ওয়েলিংটন মাসাকাদজা। অষ্টম উইকেট জুটিতে তারা দুজনে মিলে করেছেন ৭৫ রান। হাফ সেঞ্চুরি করতে না পারা মাদান্দে ৪৩ রানে ফেরার পর মাসাকাদজা আউট হয়েছেন ৩৪ রানে। তাদের দুজনের ব্যাটেই শেষ পর্যন্ত ১২৪ রানের পুঁজি পায় জিম্বাবুয়ে।

শরিফুল ইসলামের করা প্রথম ওভারে দুই চার মেরে জিম্বাবুয়ের শুরুটা করলেন জয়লর্ড গাম্বি। তবে পরের ওভারেই বদলে যায় দৃশ্যপট। এক পাশে শরিফুল শুরু করলেও অন্যপ্রান্তে নাজমুল হোসেন শান্ত বল তুলে দেন শেখ মেহেদীর হাতে। বোলিংয়ে এসে নিজের করা দ্বিতীয় ডেলিভারিতেই ফিরিয়েছেন ক্রেইগ আরভিনকে। মেহেদীর একটু টার্ন করা লেংথ ডেলিভারিতে বলের লাইন মিস করে বোল্ড হয়েছেন বাঁহাতি এই ওপেনার। দুই বল খেলা আরভিন সাজঘরে ফিরেছেন রানের খাতা খোলার আগেই।

দ্বিতীয় ওভারে উইকেট হারালেও ব্রায়ান বেনেটকে সঙ্গে নিয়ে জিম্বাবুয়েকে এগিয়ে নিতে থাকেন গাম্বি। যদিও তাদের দুজনের জুটি খুব বেশি বড় হতে দেননি মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। ১৮ মাস পর জাতীয় দলের জার্সিতে ফিরেই নিজের প্রথম ওভারে উইকেট তুলে নিয়েছেন ডানহাতি এই পেসার। সাইফউদ্দিনের লেগ স্টাম্পে করা ফুলার লেংথ ডেলিভারিতে ফ্লিক করে ফাইন লেগ দিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন গাম্বি। শর্ট ফাইন লেগে দাঁড়িয়ে তাসকিন আহমেদ দারুণ এক ক্যাচ নিলে ১৭ রানে ফিরতে হয় ডানহাতি এই ওপেনারকে।

পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার আগে বেনেটকে ফিরিয়েছেন মেহেদী। ডানহাতি এই অফ স্পিনারের বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ঠেলে এক রান নিতে চেয়েছিলেন কিন্তু তার ডাকে সাড়া দেননি শন উইলিয়ামস। অনেকটা বেরিয়ে যাওয়ায় ফিরে এসে সময় মতো স্ট্রাইক প্রান্তে পৌঁছাতে পারেননি বেনেট। তিনে নামা এই ব্যাটার ফেরার আগেই মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের থ্রোতে রান আউট হয়েছেন ফিরেছেন তিনি। বেনেটের ব্যাট থেকে এসেছে ১৬ রান।

পরের বলে সিকান্দার রাজাকেও নিজের শিকার বানিয়েছেন মেহেদী। ডানহাতি এই স্পিনারের বলে প্যাডল সুইপ করতে গিয়ে লিটন দাসের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক। আইপিএল থেকে বাংলাদেশে খেলতে আসা রাজা এদিন রানের খাতাই খুলতে পারেননি। পরের ওভারে বোলিং এসে তাসকিন নিয়েছেন দুই উইকেট। ফিরিয়েছেন উইলিয়ামস এবং রায়ান বার্লকে। হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগলেও তাসকিনের ব্যাক অব লেংথ ডেলিভারিতে খেলার কোন চেষ্টাই করেননি লুক জংওয়ে।

এরপর বোলিংয়ে এসে সেই জংওয়েকে ফিরিয়েছেন সাইফউদ্দিন। ডানহাতি এই পেসারের শর্ট লেংথ ডেলিভারিতে উড়িয়ে মারতে গিয়ে টপ এজ হয়ে তাওহীদ হৃদয়ের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন। মিড অনে দাঁড়িয়ে দুর্দান্ত এক ক্যাচ লুফে নেন হৃদয়। মাত্র ৪১ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে জিম্বাবুয়ে। সেখান থেকে সফরকারীদের টেনে তোলার চেষ্টা করেন মাদান্দে ও মাসাকাদজা।

অষ্টম উইকেট জুটিতে তারা দুজনে মিলে যোগ করেন ৭৫ রান। মাদান্দেকে ফিরিয়ে সেই জুটি ভাঙেন তাসকিন। ডানহাতি এই পেসারের দুর্দান্ত এক ইয়র্কারে বোল্ড হয়ে ফিরেছেন ৪৩ রানের ইনিংস খেলা মাদান্দে। শেষ ওভারে ব্লেসিং মুজারাবানি ফিরেছেন ১ রানে। ইনিংসের শেষ বলে মাসাকাদজা আউট হয়েছেন ৩৪ রানে। বাংলাদেশের হয়ে তাসকিন ও সাইফউদ্দিন নিয়েছেন তিনটি করে উইকেট। এ ছাড়া দুটি উইকেট পেয়েছেন মেহেদী।

বিনিয়োগবার্তা/ডিএফই//


Comment As:

Comment (0)