নীতিমালা অনুমোদন
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক শান্তি পুরস্কার দেবে বাংলাদেশ
নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে আন্তর্জাতিক শান্তি পুরস্কার দেবে বাংলাদেশ। এজন্য ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আন্তর্জাতিক শান্তি পদক নীতিমালা, ২০২৪’ এর খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
সোমবার (২০ মে) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে সভাপতিত্ব করেন।
বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, প্রতি দুই বছরে এ পুরস্কার দেওয়া হবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এক্ষেত্রে সাচিবিক দায়িত্ব পালন করবে।
একটি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার দেওয়া হবে। পুরস্কারের মূল্যমান এক লাখ মার্কিন ডলার ও ১৮ ক্যারেটের ৫০ গ্রাম ওজনের সোনার পদক।
সাধারণত প্রতি দুই বছরে দেশি বা বিদেশি একজন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে এ পুরস্কার দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
তিনি বলেন, ১৯৭৩ সালের ২৩ মে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জুলিও কুরি শান্তি পদকে ভূষিত করা হয়েছিল। এটির ৫০ বছর পূর্তি আমরা গত বছর উদযাপন করেছি। সেখানে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন যে বঙ্গবন্ধুর নামে একটি শান্তি পুরস্কার তিনি প্রবর্তন করতে চান। সেই পরিপ্রেক্ষিতে আজ একটি নীতিমালা আমরা উপস্থাপন করেছি। মন্ত্রিসভা সেটি আজ অনুমোদন করেছে।
তিনি বলেন, এই নীতিমালার আওতায় বাংলাদেশ ও বিশ্বের যে কোনো প্রান্ত বা বিশ্বব্যাপী শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা সংস্থাকে কয়েকটি ক্ষেত্রে অবদানের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শান্তি পুরস্কার দেওয়া যাবে।
বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখা, যুদ্ধ নিরসনে কার্যকর উদ্যোগ ও অবদান রাখা, দ্বন্দ্ব-সংঘাতময় পরিস্থিতিতে শান্তি প্রতিষ্ঠায় কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বিশ্ব গঠনে কার্যকর ভূমিকা রাখা, টেকসই সামাজিক পরিবেশগত অর্থনৈতিক উন্নয়নের মাধ্যমে রাষ্ট্র ও সমাজের সামগ্রিক কল্যাণ সাধন- পুরস্কার দেওয়ার ক্ষেত্রে এ ক্ষেত্রগুলো বিবেচনায় নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন মাহবুব হোসেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও বলেন, ৫০ গ্রাম ওজনের ১৮ ক্যারেটের সোনার একটি পদক এবং এক লাখ মার্কিন ডলার সমপরিমাণ মূল্যের পুরস্কার দেওয়া হবে। একই সঙ্গে একটি সনদপত্রও দেওয়া হবে।
পুরস্কারটি প্রতি দুই বছরে একবার দেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, পুরস্কার দেওয়ার ক্ষেত্রে পৃথিবীর যে কোনো দেশ থেকে প্রস্তাব নেওয়া যাবে। কারা প্রস্তাব করতে পারবে নীতিমালায় সেটিরও বর্ণনা দেওয়া আছে। একটি দেশের সরকার, রাষ্ট্রপ্রধান বা সে দেশের সংসদ সদস্যরা প্রস্তাব পাঠাতে পারবেন। নোবেল বা অন্য কোনো আন্তর্জাতিক শান্তি পুরস্কারপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি কারও নাম প্রস্তাব করতে পারবেন।
‘বাংলাদেশে অবস্থিত বিদেশি যত দূতাবাস রয়েছে সেই দূতাবাসের প্রধানরা বা আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানরা পুরস্কারের জন্য নাম প্রস্তাব করতে পারবেন। বিদেশে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশন বা দূতাবাসের প্রধানরাও প্রস্তাব পাঠাতে পারবেন। জাতিসংঘের কোনো সংস্থাপ্রধানও নাম প্রস্তাব করতে পারবেন। তবে কোনো ব্যক্তি নিজে পুরস্কারের জন্য দাবি জানাতে পারবেন না।’
নীতিমালা অনুযায়ী একটি জুরি বোর্ড গঠন করা হবে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, জুরিবোর্ডের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। নিরপেক্ষ ও খ্যাতিসম্পন্ন লোকদের দ্বারাই জুরিবোর্ড গঠন হবে। ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবসে পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নাম ঘোষণা করা হবে। ২৩ মে বা কাছাকাছি সময়ে এ পুরস্কার প্রদান করা হবে।
অর্থ বিভাগ এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দ দেবে। আগামী বছর (২০২৫) প্রথমবারের মতো এ পুরস্কার দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
মাহবুব হোসেন বলেন, মন্ত্রিসভা থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, নীতিমালা দিয়ে কাজটি যেন শুরু করা হয়। এটিকে (নীতিমালা) যেন পরবর্তীকালে আইনে রূপান্তর করা হয়। আইনের মধ্যে একটি তহবিল তৈরি করতে বলা হয়েছে, যে তহবিলে সরকার বা বাইরের যে কোনো ব্যক্তি অনুদান দিতে পারবেন। পরে তহবিল থেকেই ব্যয়ভার নির্বাহ করা হবে। তার আগ পর্যন্ত সরকারই এ ব্যয়ভার বহন করবে।
বিনিয়োগবার্তা/এসএএম//