বাংলাদেশের এসিড সন্ত্রাস এখন লন্ডনে
বিনিয়োগবার্তা ডেস্ক, ঢাকা : বাংলাদেশের এসিড সন্ত্রাস এখন লন্ডনে। এক সময় এই এসিড সন্ত্রাস বাংলাদেশে নিয়মিতভাবে ঘটত। জনসচেতনতা ও এসিড বিক্রি আইন কঠোর হওয়ায় এই ঘটনা এখন অনেক কমেছে।
কিন্ত এসিড নিক্ষেপের মতো বাংলাদেশের এই জঘন্য অপরাধটি এখন ইংল্যান্ডের রাজধানী লন্ডনে ঘটনা ভয়াবহ আকারে বেড়েছে।
বর্ণবাদ, ছিনতাই, ধর্ষণ, ব্যক্তিগত আক্রোশের কারণেই এসিড নিক্ষেপের ঘটনা বেশি ঘটছে শহরটিতে। সম্প্রতি বাংলাদেশের ক্রিকেটার তামিম ইকবালও সেখানে কাউন্টি খেলতে গিয়ে স্বপরিবারে এসিড সন্ত্রাসীদের কবলে পড়েন বলে গণমাধ্যমের বলা হয়। তবে কোন কারণে তামিম এই ঘটনার কথা অস্বীকার করে।
গত বৃহস্পতিবারও উত্তর-পূর্ব লন্ডনে মাত্র ৯০ মিনিটে পাঁচটি এসিড হামলার ঘটনা ঘটেছে।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১০ সালে থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত মোট ১৮০০ টি এসিড সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটেছে।
আর ২০১৬ সালের শেষের দিক থেকে ২০১৭ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে ২০৮টি। এর মধ্যে ৩৮ ব্যক্তি আহত হন। আর এসিড নিক্ষেপ করে ছিনতাই এর ঘটনা ঘটেছে ১১১টি। এছাড়া এই সময়ে ২ নারীকে ধর্ষণের পর এসিডে ঝলসে দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।
খবরে বলা হয়ে, কেবল ২০১৭ সালের মার্চ পর্যন্ত ৪৯টি এসিড সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটেছে লন্ডনে।
এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে ২০১০ সালে শহরটিতে এসিড সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটে ২৯৩টি। এর পরের বছর ২০১১ সালে কিছুটা কমলেও ২৫৯টি ঘটনা ঘটে।
২০১২ সালে এই ধরনের ঘটনা অনেক কমে আসে। ওই বছর মাত্র ১৬৯টি এসিড সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটে। ২০১৩ সালে এই অপরাধ প্রবণতা আবার বাড়তে শুরু করে। সে বছর ২১০টি এসিড সন্ত্রাসে ঘটনা ঘটে। আর ২০১৪ সালে ১৬৬টি এসিড হামলার ঘটনা ঘটে যুক্তরাজ্যের রাজধানীতে।
২০১৫ সালে শহরজুড়ে মোট ২৬১টি এসিড হামলার খবর পায় পুলিশ। তবে ২০১৬ সালে এই সংখ্যা এক লাফে দ্বিগুণ হয়ে যায়। ওই বছর সর্বোচ্চ ৪৫৮টি হামলার ঘটনা ঘটে।
এসিড হামলার ঘটনা বৃদ্ধি বিষয়ে মিডলসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিষয়ক গবেষক ড. সিমন হার্ডিং বলেন, ‘এটা খুব ভয়াবহ বিষয় যে সন্ত্রাসীরা এখন চাকু বা ছুড়ির বদলে এসিডকে তাদের অস্ত্র হিসেবে বেছে নিয়েছে।’
এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, তাদের দেশে চাকু দিয়ে হামলার ঘটনা ঘটালে তা ‘হত্যা চেষ্টা’র অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়। তবে এসিড নিক্ষেপের কারণে সাজা হয় তার কম। এছাড়া লন্ডনে চাইলেই এসিড মতো সহজেই কেনা যায়। চাইলে অনলাইনেও অর্ডার করে সন্ত্রাসীরা এই বস্তুটি পেতে পারে।
সিমনের মতে, ‘সহজ লভ্যতা ও লঘু সাজার কারণেই সাম্প্রতিক সময়ে এই ধরনের ঘটনা বেড়েছে।’
(এম আর / ১৫ জুলাই, ২০১৭)