যুক্তরাজ্যের মূল্যস্ফীতি

সাড়ে তিন বছর পর ২ শতাংশের নিচে নামল যুক্তরাজ্যের মূল্যস্ফীতি

ডেস্ক রিপোর্ট: যুক্তরাজ্যের মুদ্রাস্ফীতি প্রায় সাড়ে তিন বছর পর ২ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। দেশটির জাতীয় পরিসংখ্যান অফিসের তথ্যানুযায়ী, ভোক্তা মূল্য সূচক (সিপিআই) ২ দশমিক ২ শতাংশ থেকে কমে গত সেপ্টেম্বরে ১ দশমিক ৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। মূল্যস্ফীতি ২ শতাংশের নিচে নেমে আসায় যুক্তরাজ্যের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওপর সুদহার কমানোর জন্য নতুন করে চাপ সৃষ্টি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। খবর গার্ডিয়ান

পরিসংখ্যানে দেখা যায়, সেপ্টেম্বরে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের মূল্য কমার পাশাপাশি দেশটিতে পেট্রল ও ডিজেলের দামও কমেছে। তবে খাদ্য ও কিছু কোমল পানীয়ের দাম বাড়ায় মূল্যস্ফীতি এর থেকে বেশি কমানো সম্ভব হয়নি।

দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয়ের মুখ্য সচিব ড্যারেন জোনস বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি হ্রাস লাখ লাখ মানুষের জন্য স্বস্তির কারণ হতে পারে। কিন্তু কর্মজীবী মানুষের জীবন স্বচ্ছন্দ করতে এখনো আরো অনেক কিছু করা বাকি।’

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, সম্প্রতি দেশটির চাকরির বাজারও কিছুটা মন্থর। এর মধ্যে মূল্যস্ফীতি হ্রাসের খবর ব্যাংকগুলোর ওপর সুদহার কমানোর জন্য চাপ সৃষ্টি করতে পারে। আগামী নভেম্বরের জন্য সুদহার এক-চতুর্থাংশ কমিয়ে ৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ করার প্রত্যাশার কথাও জানিয়েছেন তারা।

ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টসের অর্থনীতি বিভাগের পরিচালক সুরেন থিরু বলেন, ‘যদিও নভেম্বরে সুদহার কমানোর জন্য বর্তমান পরিস্থিতি অনুকূল বলেই মনে হচ্ছে, তবু আসন্ন বাজেট এক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। নীতিনির্ধারকরা কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে অবশ্যই মূল্যস্ফীতির প্রভাবকে পুনর্মূল্যায়ন করতে চাইবেন।’

২০২২ সালের অক্টোবরে সর্বোচ্চ ১১ দশমিক ১ শতাংশ মূল্যস্ফীতি দেখেছিল যুক্তরাজ্য। এরপর তাদের মূল্যস্ফীতি ক্রমাগত কমছে। তবে ব্যবসায়ীরা আশঙ্কা করছেন, সেপ্টেম্বরের মুদ্রাস্ফীতির এ চিত্র অল্পদিনেই উল্টে যেতে পারে। কেননা চলতি মাসের শুরুতে শীর্ষস্থানীয় জ্বালানি বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান অফজেমের প্রাইস ক্যাপ বেড়েছে।

রেজল্যুশন ফাউন্ডেশনের বরাতে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম বলছে, সাময়িকভাবে মূল্যস্ফীতি ২ শতাংশের নিচে নেমে আসার ঘটনা লাখ লাখ পরিবারের আয়ের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। কারণ মূল্যস্ফীতি হ্রাসের কারণে অনেকের আয় কমে যাবে।

মূল্যস্ফীতি হ্রাস যদি স্থায়ী হয়, সেটি সাধারণ মানুষের জীবনমান উন্নয়ন কিংবা সুদহার নিয়ন্ত্রণে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। আবার এটি হয়ে উঠতে পারে কোনো দেশের অর্থনৈতিক দুর্বলতারও প্রতিফলন। যদি দ্বিতীয়টি হয়, তাহলে যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির সরকার ও অর্থনৈতিক নীতিনির্ধারকদের জন্য মূল্যস্ফীতি হ্রাসই হয়ে উঠতে পারে অস্বস্তির কারণ।

বিনিয়োগবার্তা/এসএএম//


Comment As:

Comment (0)