ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ

পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড.ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ

সরকারি উন্নয়ন ব্যয় না বাড়লে অর্থনীতির মন্দা অবস্থা তৈরি হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক: পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, ‘রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে, বিশৃঙ্খলার কারণে বেসরকারি খাতে উৎপাদনে স্থবিরতা দেখা যাচ্ছে। গার্মেন্ট খাতে স্থবিরতা আছে। তার ওপর সুদহার অনেক বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। বেসরকারি খাতে নতুন বিনিয়োগ আসছে না। সরকারি উন্নয়ন ব্যয়ও যদি না বাড়ে তাহলে তো অর্থনীতির মন্দা অবস্থা তৈরি হবে।’

 সোমবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এ সভা হয়।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সরকার কী করবে, এমন প্রশ্নে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘এর জন্য নতুন উদ্ভাবনী ও মানবসম্পদের উন্নয়নে দ্রুত সময়ের মধ্যে নতুন প্রকল্প তৈরির কথা চিন্তা করছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।’ এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলে সব উপদেষ্টাকে চিঠি পাঠানো হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নের ধীরগতি কাটিয়ে বাস্তবায়ন বাড়ানোর তাগিদ দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।

উপদেষ্টাকে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ না হলে প্রবৃদ্ধির কী হবে। উত্তরে তিনি বলেন, ‘এক বছর বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ না হলেও অনেক প্রবৃদ্ধি হতে পারে।’

আওয়ামী লীগ সরকারের নেয়া বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার ছোট করে আনার কথা জানিয়ে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘আমরা প্রথম দিকেই বলছিলাম, প্রতি বছরই বাজেটের থেকে কম বাস্তবায়ন হয়। এবার নানা কারণে উন্নয়ন বাজেটটাই ছোট করব। যেসব প্রকল্প ছিল কিংবা যেগুলো নতুন করে প্রস্তাব করা হয়েছে, তার অনেকগুলোই বাদ দিতে হয়েছে। সেগুলোর মধ্যে অনেক প্রকল্প তো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব প্রকল্প ব্যয় অনুযায়ী সুফল বয়ে আনবে, সেটা আমাদের মনে হয়নি। এগুলো বাদ দেয়া হয়েছে।’

চলতি বছরের প্রথম চার মাসে এডিপি বাস্তবায়নের হার ১৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম। এর কারণ জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘এটা আমাদের বাজেট নয়; আগের সরকারের বাজেট।’

একনেক বৈঠকে চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে ৫ হাজার ১৫২ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর এটিই সবচেয়ে বড় প্রকল্প।

এ বিষয়ে পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, ‘পৃথিবীর একমাত্র জায়গা যেখানে দোতলায় বন্যা হয়, ফ্লাইওভারেও বন্যা হয়। ওপরে হয়, নিচেও হয়। তাই এ প্রকল্প জরুরি।’

বৈঠকে আরো চারটি প্রকল্পের অনুমোদন দেয় একনেক। এগুলো হলো খুলনার মোংলা বন্দরে আধুনিক বর্জ্য ও নিঃসৃত তেল অপসারণ ব্যবস্থাপনা; বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘পূর্বাঞ্চলীয় গ্রিড নেটওয়ার্কের পরিবর্ধন এবং ক্ষমতা বর্ধন’; শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ‘ক্যাপাসিটি বিল্ডিং অব ইউনিভার্সিটিজ ইন বাংলাদেশ টু প্রমোট ইয়ুথ অন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ’ এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ‘ইমার্জেন্সি মাল্টি-সেক্টর রোহিঙ্গা ক্রাইসিস রেসপন্স প্রজেক্ট (২য় সংশোধিত)’।

বিনিয়োগবার্তা/এসএএম//


Comment As:

Comment (0)