GP Learning & Sharing Session on digital inclusion

প্রান্তিক মানুষের ক্ষমতায়নে কাজ করেছে গ্রামীণফোন ও প্ল্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক: ডিজিটাল অন্তর্ভূক্তিতে রূপান্তরের যে সক্ষমতা রয়েছে, তা তুলে ধরতে বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) রাজধানীর জিপি হাউজে একটি লার্নিং অ্যান্ড শেয়ারিং সেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ ও টেলিনরের অংশীদারিত্বে গ্রামীণফোন আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে মূলত “সেফ ডিজিটাল স্পেস ফর গার্লস অ্যান্ড ইয়ুথ (এসডিএসজিওয়াই)" প্রকল্পটি কীভাবে একটি নিরাপদ এবং আরও ক্ষমতায়িত ডিজিটাল ভবিষ্যত গড়ে তোলার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখছে তা নিয়ে আলোকপাত করা হয়। ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তির এ উদ্যোগটি আটটি প্রান্তিক সম্প্রদায়ের ২৯ লাখ মানুষের ক্ষমতায়নে রূপান্তরকারী ভূমিকা পালন করেছে, যেখানে নারীদের উন্নয়নকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। এই যুগান্তকারী প্রকল্পটির মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীদের অত্যাবশ্যকীয় বিভিন্ন ডিজিটাল দক্ষতার বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান এবং অনলাইন নিরাপত্তা সচেতনতা বাড়ানোয় গুরুত্ব দেয়া হয়, যাতে তারা আত্মবিশ্বাসের সাথে ও নিরাপদে ডিজিটাল জগতে বিচরণ করতে পারে।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন গ্রামীণফোনের চিফ কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার তানভীর মোহাম্মদ। গ্রামীণফোনের প্রজেক্ট লিড আনজুম রাসনা হাসান ও প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের প্রজেক্ট লিড খুরশিদ আরা প্রকল্পটির অগ্রগতি ও প্রভাব তুলে ধরে অনুষ্ঠানের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। দুটি আলাদা সেশনের মডারেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর কবিতা বোস এবং গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইয়াসির আজমান। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ আমিনুল হক এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব কাজী মোখলেছুর রহমান। এছাড়া প্রকল্পের সুবিধাভোগী, অংশীদার এবং অন্যান্য বিশিষ্ট অতিথিরা এতে উপস্থিত ছিলেন।

সিলেটের লাক্কাতুরা চা বাগানের বৃষ্টি গোয়ালার কথায় উঠে আসে অনলাইনে কেনাকাটা করা ও সরকারি পরিষেবা ব্যবহারের বিভিন্ন বিষয় তিনি কীভাবে এ প্রকল্পের মাধ্যমে শিখেছেন। নতুন নতুন এসব দক্ষতা অর্জনের বিষয়টি নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন তিনি।

ট্রান্সজেন্ডার নারী হিসেবে নিজের নানা চ্যালেঞ্জ এবং সামাজিকভাবে কটুক্তি ও লাঞ্ছনার শিকার হওয়ার বিষয়টি অনুষ্ঠানের একটি সেশনে তুলে ধরেন নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা ২৩ বছর বয়সী নিয়াশা চৌধুরী মিম। তার জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তনের সুযোগ করে দেয়ায় এসডিএসজিওয়াই প্রকল্পটি নিয়ে কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, সমাজে তার মতো প্রান্তিক মানুষকে সহায়তা দিতে এ ধরণের আরো উদ্যোগ চালু করা হয়।

রাজশাহী থেকে আসা শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধী আতিকুর রহমান জানান, এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তিনি শিখতে পেরেছেন কীভাবে নিরাপদে ও কার্যকরভাবে ইন্টারনেট ব্যবহার করা যায়। এই শিক্ষা তার খুব কাজে লেগেছে, জীবনটা অনেক সহজ হয়ে গেছে।

এই প্রকল্পের মাধ্যমে ই-কমার্সের ওপর প্রশিক্ষণ পেয়েছেন বলে জানান বাল্য বিয়ের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া লালমনিরহাটের খুশি। এরপর তিনি অনলাইনে পোশাক বিক্রির ব্যবসা শুরু করেন যা এখন বেশ সম্ভবনাময়।

প্রাণঘাতী ক্যান্সারের কারণে আর কলেজে যেতে পারেননি গাইবান্ধার সীমা আখতার স্মৃতি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেই কাটত তার অলস সময়। এসময় রেডিও সারাবেলার মাধ্যমে তিনি অনলাইন বুলিং ও হয়রানি সম্পর্কে জানতে পারেন। এমন একটি কার্যকর প্রকল্প চালু করার জন্য গ্রামীণফোন ও প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।

গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইয়াসির আজমান বলেন, “অন্তর্ভুক্তিমূলক ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে সংকল্পবদ্ধ গ্রামীণফোন। প্রান্তিক জনগোষ্ঠী বিশেষ করে নারী ও তরুণদের জন্য ডিজিটাল শিক্ষার বৈষম্য দূর করা, অনলাইন নিরাপত্তা জোরদার করা এবং নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে এই পদক্ষেপ।”

প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর কবিতা বোস বলেন, “আজকের বিশ্বে তরুণদের বিশেষ করে মেয়েদের ক্ষমতায়নের জন্য ডিজিটাল দক্ষতা আবশ্যক। এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য শুধু ইন্টারেনট ব্যবহার শেখানো নয়; বরং প্রত্যেককে এমন শিক্ষা ও দক্ষতা প্রদান করা যাতে সে ডিজিটাল স্পেসকে নিরাপদ ও কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে পারেন।”

ডিজিটাল বৈষম্য রোধে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য ডিজিটাল সুবিধা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে গ্রামীণফোন। এই ধারা অব্যহত রাখতে সংকল্পবদ্ধ কোম্পানিটি।
 
বিনিয়োগবার্তা/ডিএফই//


Comment As:

Comment (0)