মেটা

আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ

২০২৪ সালে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি পেয়েছে মেটা

ডেস্ক রিপোর্ট: ২০২৪ সালের চতুর্থ প্রান্তিকসহ (অক্টোবর-ডিসেম্বর) পূর্ণ বছরের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান মেটা। সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মে বিজ্ঞাপন থেকে আয় বৃদ্ধি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির চাহিদা বাড়ার কারণে এ সময় আয় ও মুনাফার উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি পেয়েছে কোম্পানিটি। খবর: এবিসি নিউজ।

গত বুধবার প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ডিসেম্বরে শেষ হওয়া প্রান্তিকে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় মেটার আয় ২১ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৮৩৯ কোটি ডলার। গত এক বছরে ফেসবুকের প্যারেন্ট কোম্পানিটি আয় করেছে ১৬ হাজার ৪৫০ কোটি ডলার।

মেটার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মার্ক জাকারবার্গ বলেন, ‘এ বছর অত্যন্ত বুদ্ধিমান ও আরো উন্নত এআই অ্যাসিস্ট্যান্ট ১০০ কোটি মানুষের কাছে পৌঁছবে। আমার প্রত্যাশা, সে নেতৃস্থানীয় এআই অ্যাসিস্ট্যান্ট হবে মেটা।’ তিনি জানান, এআই চশমা ও সোশ্যাল মিডিয়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে আরো গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে মেটা।

চলতি প্রান্তিকের আয়ের পূর্বাভাসও প্রকাশ করেছে ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানটি। মেটার প্রত্যাশা, ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে ৩ হাজার ৯৫০ থেকে ৪ হাজার কোটি ডলার ছাড়াবে কোম্পানির আয়। বছরওয়ারি হিসাবে ২০২৫ সালেও আয়ের শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি আশা করা হচ্ছে।

জাকারবার্গ জানান, এছাড়া কোম্পানিটি প্রায় ১২ হাজার কোটি ডলার পর্যন্ত ব্যয়ের প্রত্যাশা করছে। এ ব্যয় বাড়ার মূল কারণ হলো মেটার অবকাঠামো খরচ ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতা। আগের বছরের তুলনায় মেটার কর্মী সংখ্যা ১০ শতাংশ বেড়েছে গত বছর। ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মেটার মোট কর্মীর সংখ্যা ছিল ৭৪ হাজার ৬৭ জন।

ইনভেস্টিংডটকমের বিশ্লেষক জেসি কোহেন এ বিষয়ে বলেছেন, ‘মেটার চতুর্থ প্রান্তিকের ফলাফল বলছে যে ডিজিটাল বিজ্ঞাপন বাজারের অনিশ্চিত পরিস্থিতিতেও কোম্পানিটি স্থিতিশীল রয়েছে। আয় ও মুনাফার পূর্বাভাসকে ছাড়িয়ে গিয়ে তারা প্রমাণ করেছে, খরচ নিয়ন্ত্রণ ও কাজের দক্ষতা বৃদ্ধির প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়নি। মেটা এআই অবকাঠামো ও মেটাভার্স পরিকল্পনায়ও আরো জোর দিচ্ছে।’

যুক্তরাষ্ট্রে ২০২৩ সালে এআই অ্যাসিস্ট্যান্ট ‘মেটা এআই’ উন্মোচন করে ফেসবুকের প্যারেন্ট কোম্পানিটি। এ ফিচার ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুক, মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ ও ওয়েবে ব্যবহার করা যায়। ডাটা বিশ্লেষণ প্লাটফর্ম ডিমান্ডসেইজের ২০২৪ সালের হালনাগাদ তথ্যানুযায়ী, বিশ্বব্যাপী ৫০ কোটি ব্যবহারকারী নিয়ে শীর্ষ পাঁচ চ্যাটবটের তালিকায় প্রথম অবস্থানে আছে প্রতিষ্ঠানটি। চলতি বছর এআই অবকাঠামোয় ৬ হাজার ৫০০ কোটি ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনাও করছে মেটা প্লাটফর্মস। এ বিনিয়োগ কোম্পানিকে ওপেনএআই ও গুগলের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে সহায়তা করবে বলে ধারণা করছেন প্রযুক্তিসংশ্লিষ্টরা।

এক ফেসবুক পোস্টে জাকারবার্গ বলেছেন, ‘২০২৫ হবে এআইয়ের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বছর। এটি একটি বিশাল প্রচেষ্টা। আগামী বছরগুলোয় প্রযুক্তিটি আমাদের মূল পণ্য ও ব্যবসাকে এগিয়ে নেবে।’

২০০৪ সালে মার্ক জাকারবার্গ ও তার কলেজ রুমমেটরা মিলে সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম ‘ফেসবুক’ প্রতিষ্ঠা করেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কোম্পানিটি ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ ও অকুলাসের মতো প্লাটফর্মকে নিজেদের অধীনে নিয়ে আসে। ২০২১ সালে ফেসবুকের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘মেটা’। এ পরিবর্তনের মূল কারণ ছিল, কোম্পানিটির নতুন লক্ষ্য মেটাভার্স প্রযুক্তির দিকে মনোনিবেশ করা। মেটাভার্স হলো একটি ভার্চুয়াল জগৎ, যেখানে মানুষ অনলাইনে একে অন্যের সঙ্গে আরো বাস্তবসম্মত উপায়ে যোগাযোগ করতে পারবে।

বিনিয়োগবার্তা/এসএএম//


Comment As:

Comment (0)