জার্মানিতে ভোট চলছে, জরিপে এগিয়ে কারা?
ডেস্ক রিপোর্ট: জার্মানিতে আগাম জাতীয় নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। স্থানীয় সময় রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে শুরু হওয়া এ ভোটের দিকে অধীর আগ্রহে তাকিয়ে আছে ইউরোপ। কেননা এটি একটি যুগান্তকারী ভোট, যা দেশের রাজনৈতিক দৃশ্যপটকে নতুন করে রূপ দিতে পারে।
গত নভেম্বরে সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এসপিডি) চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস তার অর্থমন্ত্রীকে বরখাস্ত করেন। এরপর শোলজ আস্থা ভোটে হেরে যাওয়ায় আগাম পার্লামেন্ট নির্বাচন শুরু হয়।
বিশ্বের শীর্ষ ধনী ও মার্কিন ট্রাম্প প্রশাসনের আস্থাভাজন ইলন মাস্ক নির্বাচনী প্রচারণায় নেমে অতি ডানপন্থি দল অল্টারনেটিভ ফর জার্মানির (এএফডি) প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেছেন।
জার্মান সরকারের তথ্য অনুযায়ী, ৫ কোটি ৯০ লাখেরও বেশি নাগরিক নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন। এর মধ্যে ২৩ লাখ প্রথমবার ভোট দেবে।
কিছু জার্মান ইতিমধ্যে বিদেশ থেকে তাদের 'মেইল-ইন ব্যালট' জমা দিয়েছেন। বিদেশে বসবাসরত হাজার হাজার নাগরিক সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছেন, তাদের পোস্টাল ভোটের কাগজপত্র সময়মতো পৌঁছায়নি।
রক্ষণশীল মার্জকে ফেভারিট হিসেবে দেখা হচ্ছে:
বিরোধীদলীয় নেতা ফ্রেডরিখ মার্জের খ্রিস্টান ডেমোক্র্যাটস দল (সিডিইউ/সিএসইউ) নির্বাচনে জয়লাভের দিকে এগিয়ে আছে। যদিও তারা এককভাবে সরকার গঠনের জন্য পর্যাপ্ত আসন পাবে না বলে মনে করা হচ্ছে।
আইএনএসএ'র সর্বশেষ জরিপের তথ্যে দেখা গেছে, চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এসপিডি) চেয়ে ১৪ পয়েন্টের বেশি ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছে মধ্য-ডানপন্থী সিডিইউ/সিএসইউ জোট।
আরেক অতি ডানপন্থী দল অলটারনেটিভ ফর জার্মানি (এএফডি) সর্বশেষ জরিপে ২১ শতাংশে পৌঁছেছে। ফেডারেল নির্বাচনে তারা এ যাবতকালের সবচেয়ে শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। তারা এখন দেশটিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
এক জরিপে দেখা গেছে, প্রায় ২৭ শতাংশ ভোটার নির্বাচনের মাত্র কয়েকদিন আগে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন, তারা ভোট দেবেন কি না বা কোন দলকে সমর্থন করবেন, তা নিশ্চিত নন।
জার্মানির জটিল নির্বাচন পদ্ধতি:
জার্মানির চ্যান্সেলর পরোক্ষভাবে নির্বাচিত হন। ভোটাররা নতুন পার্লামেন্ট সদস্যদের বেছে নেন। এরপর নিজেদের মধ্যে ভোটের মাধ্যমে নতুন চ্যান্সেলর নির্বাচন করেন।
বিজয়ী দল যদি পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে বা নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে একটি জোট সরকার গঠন করতে সক্ষম হয়, তবে তাদের প্রার্থী দেশের পরবর্তী চ্যান্সেলর হবেন।
জার্মানি একটি মিশ্র ভোটদান ব্যবস্থার আয়োজন করে, যেখানে প্রতিটি নাগরিক দুটি ব্যালটে ভোট দেয়। প্রথম ভোটের মাধ্যমে তারা তাদের স্থানীয় জেলার প্রতিনিধিত্ব করার জন্য একটি নির্দিষ্ট প্রার্থী বেছে নেয়। দ্বিতীয় ভোটটি একটি রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করে, যা ৬৩০ আসনের সংসদে দলের মোট প্রতিনিধিত্ব নির্ধারণ করে।
বাজেট, কল্যাণ কর্মসূচি, জলবায়ু লক্ষ্যমাত্রা এবং বিনিয়োগের জন্য নতুন ঋণ নেওয়া হবে কি না তা নিয়ে মতবিরোধের কারণে গত নভেম্বরে চ্যান্সেলর শলৎসের এসপিডি, গ্রিন এবং এফডিপি সমন্বিত তিন দলীয় জোট সরকার ভেঙে যায়। এরপর শলৎস আগাম নির্বাচনের পথ বেছে নেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, জার্মানির জরুরি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় একটি শক্তিশালী ও স্থিতিশীল সরকার প্রয়োজন।
বিনিয়োগবার্তা/ডিএফই//