মিরপুর সিকিউরিটিজের বিরুদ্ধে তদন্তে নেমেছে বিএসইসি
নিজস্ব প্রতিবেদক: পুঁজিবাজারে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সদস্যভুক্ত ব্রোকারেজ হাউজ মিরপুর সিকিউরিটিজ লিমিটেডের (সিএসই ট্রেক নম্বর ৫০) কার্যক্রমে কোনো অনিয়ম হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
কমিটিকে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কমিটিতে রয়েছেন - বিএসইসির যুগ্ম পরিচালক সৈয়দ মুহাম্মদ গোলাম মওলা, সহকারী পরিচালক সানজিদা রহমান এবং সহকারী পরিচালক ফারজানা ইয়াসমিন।
বিএসইসির গঠিত তিন সদস্যের পরিদর্শন কমিটি মিরপুর সিকিউরিটিজের স্টক-ব্রোকার ও স্টক-ডিলার কার্যক্রম, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সুরক্ষা এবং আইন মেনে চলার বিষয়গুলো খতিয়ে দেখবে।
এছাড়া লেনদেন প্রক্রিয়া, বিনিয়োগকারীদের অর্থ ব্যবস্থাপনা, সিকিউরিটিজ আইন পরিপালন এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন অনুযায়ী আর্থিক লেনদেনের স্বচ্ছতা পর্যালোচনা করবে।
বিশেষ করে, ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির এএমএল/সিএফটি (অ্যান্টি মানিলন্ডারিং/কমব্যাটিং ফাইন্যান্সিং অব টেররিজম) ব্যবস্থা কতটা কার্যকর ছিল, তা গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা হবে।
বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, তদন্তে অনিয়মের প্রমাণ মিললে কমিশন কঠোর ব্যবস্থা নেবে। এর ফলে মিরপুর সিকিউরিটিজের লাইসেন্স বাতিল বা স্থগিত করা হতে পারে। পাশাপাশি, আর্থিক জরিমানা কিংবা শাস্তিমূলক পদক্ষেপের বিষয়টিও বিবেচনায় থাকবে। তদন্তে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাও নেওয়া হতে পারে।
বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র মো. আবুল কালাম এ বিষয়ে বলেন, “এটি কমিশনের নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ। তবে তদন্তে অনিয়ম ধরা পড়লে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বিগত সরকারের আমলে অনেক ব্রোকারেজ হাউজ আইন লঙ্ঘন করলেও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তবে রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর নতুন কমিশন বাজারের শৃঙ্খলা আনতে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় নিয়ন্ত্রক সংস্থার কড়া নজরদারি গুরুত্বপূর্ণ। তবে একের পর এক তদন্ত ও কঠোর ব্যবস্থার কারণে বাজারে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়তে পারে।
একজন বাজার বিশ্লেষক বলেন, “সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কিছু ব্রোকারেজ হাউজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থার সংকট তৈরি করছে। তবে বাজারের দীর্ঘমেয়াদী স্থিতিশীলতার জন্য অনিয়ম রোধ করা জরুরি।”
আরেকজন অর্থনীতি বিশেষজ্ঞ বলেন, “বিএসইসির উচিত দ্রুত তদন্ত শেষ করে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা। দীর্ঘ সময় ধরে অনিশ্চয়তা চললে বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে, যা সামগ্রিক বিনিয়োগ পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।”
পরিদর্শন শেষে কমিটি প্রতিবেদন জমা দেবে, তারপর কমিশন প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেবে। বাজার বিশ্লেষকদের মতে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিনিয়োগকারীদের সঠিক তথ্য জানানো এবং বাজারে আস্থা ফেরানো জরুরি।
বিনিয়োগবার্তা/ডিএফই//