‘শিল্পায়নে ব্যাংক ঋণের পরিবর্তে পুঁজিবাজারকে ব্যবহার করুন’

প্রতিবেদক, বিনিয়োগবার্তা, ঢাকা: বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার অধ্যাপক ড. স্বপন কুমার বালা বলেছেন, শিল্পায়নের জন্য ব্যাংক ঋণে খরচ বেশি। এর বিপরীতে পুঁজিবাজারকে ব্যবহার করতে পারেন। এতে খরচ কম হবে। বিনিময়ে বছর শেষে বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দিলেই হবে।

দেশব্যাপী বিনিয়োগ শিক্ষার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে গতকাল শনিবার রাজশাহীতে আয়োজিত ‘শিল্পায়নে পুঁজিবাজারের ভূমিকা ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএসইসির পরিচালক ফারহানা ফারুকীর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচক ছিলেন বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মো: সাইফুর রহমান, সিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুর রহমান মজুমদার, মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো: ছায়েদুর রহমান, মিউচ্যুয়াল ফান্ড অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ড. হাসান ইমাম ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক আমজাদ হোসেন।

অনুষ্ঠানে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মো: মাহবুবুল আলম। অর্থসূচক রাজশাহী থেকে এ অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার করে।

স্বপন কুমার বালা বলেন, উদ্যোক্তারাই পুঁজিবাজাকে ব্যবহার করে শিল্পায়ন করতে পারেন। প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে শেয়ার বিক্রি করে শিল্পায়নের জন্য অর্থ সংগ্রহ করা যায়। এতে তাদের খরচ কম হবে। আর ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসা বাণিজ্য করলে খরচ বেশি হবে।

মোঃ সাইফুর রহমানও বলেন একই কথা। তিনি বলেন, পুঁজিবাজার হলো অপার সম্ভাবনার জায়গা। দীর্ঘমেয়াদী শিল্পায়নের জন্য এ বাজারকে ব্যবহার করে অর্থনীতিতে অবদান রাখা যেতে পারে। আর ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে শিল্প গড়ে তুলতে গেলে বলব, খরচ বেশি হবে, ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। এমনকি ঋণ নিয়ে কিস্তির টাকা ঠিকঠাক না দিতে পারলে আপনি খেলাপীও হয়ে যেতে পারেন।

ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, পুঁজিবাজারের উন্নয়নে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আইন-কানুনের পরিবর্তন করছি। পুঁজিবাজারে আসতে যে ধরনের আর্থিক প্রতিবেদন তৈরি করতে হয়, সেভাবে প্রস্তুতি নেন এবং পুঁজিবাজারকে ব্যবহার করে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখেন।

সাইফুর রহমান বলেন, বিনিয়োগকারীদের যাতে ভূল পথে পরিচালনা করতে না পারে সেই জন্যই আমরা এই কার্যক্রম হাতে নিয়েছি।

আগামী দিনের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাজারে যত বেশি পণ্য থাকবে, বিনিয়োগ করার পথ তত খুলবে। বিএসইসি ছোট মূলধনী কোম্পানিগুলোকেও বাজারে আনতে কাজ করছে। একইসঙ্গে ওটিসি মার্কেটকে নতুন করে সাজাতে কাজ করছে। এছাড়া ইটিএফ ফান্ড ও ডেরিভেটিভস যাতে খুব দ্রুত চালু করা যায় তার জন্যও প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।

সিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুর রহমান মজুমদার বলেন, ছোট মূলধনী কোম্পানির জন্য আলাদা বোর্ড হচ্ছে। ছোট কোম্পানি এখানে তালিকাভুক্ত হতে পারে। এই সুযোগটি রাজশাহীর লোকজন নিতে পারেন।

আর যদি কোনো কোম্পানি মূলবাজারে আসতে চাই, তাদের জন্য সবসময় সহযোগিতার হাত বাড়ানো থাকবে বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, পুঁজিবাজারের সব ধরনের অবকাঠামো আছে। বিশ্বমানের অবকাঠমো দিয়ে আমরা লেনদেন করে আসছি। সামনে বাজারে যত ধরনের পণ্য আসবে সব পণ্যের লেনদেনের জন্য আমরা প্রস্তুত। সেন্ট্রাল কাউন্টার পার্টি (সিসিপি) হলে পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারী ও উদ্যোক্তারা সবাই লাভবান হবেন। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে এই সুফল পাবেন তারা।

মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোঃ ছায়েদুর রহমান বলেন, অনেকগুলো কাজের মধ্যে কোম্পানির মূলধন উত্তোলন করে দেওয়া একটি বড় কাজ মার্চেন্ট ব্যাংকের। স্থানীয় উদ্যোক্তারা চাইলে আমরা তাদের সঙ্গে বসে আলোচনা করে সহযোগিতা করতে পারি।

মিউচ্যুয়াল ফান্ড অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ড. হাসান ইমাম বলেন, রাজশাহী অঞ্চল থেকে প্রতিদিন ২৫০ কোটি টাকার মাছ যায়। এটি অনেক বড় খাত। এখানে পুঁজিবাজারের কোনো অবদান নেই। এই টাকাগুলো আসে মহাজন বা এনজিও থেকে। এখানে আমরা সহযোগিতা করতে চাই।

(একে/এসএএম/ ২৩ জুলাই ২০১৭)


Comment As:

Comment (0)