মমতার প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য নয় দিল্লির কাছেই
বিনিয়োগবার্তা ডেস্ক, ঢাকা: চারদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ভারতে অবস্থান করছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে যখন তিস্তার বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছেন, তখন প্রায় একই সময়ে দ্বিপাক্ষিক যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করে তিস্তা চুক্তির দ্রুত রূপায়ণে রাজ্যের সঙ্গে সমন্বয় সাধনের কথা বলেছে কেন্দ্র।
মমতার বিকল্প প্রস্তাবের কোনো উল্লেখই রাখা হয়নি এই যৌথ বিবৃতিতে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর তোর্সা প্রস্তাবকে গ্রহণযোগ্য বলেই মনে করছে না দিল্লি। আনন্দবাজারের এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে।
রোববার রাতে মমতা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, কেবল মাত্র বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীই নন, হায়দরাবাদ হাউসের মধ্যাহ্নভোজেও তিনি ভারতীয় নেতৃত্বকে তার বিকল্প প্রস্তাবের কথা জানিয়েছেন। কিন্তু সন্ধ্যায় ভারত যে যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করেছে, তাতে সেই প্রস্তাবের উল্লেখটুকুও নেই। বরং বলা রয়েছে উল্টো কথা। যৌথ বিবৃতির নথির ৪০ নম্বর অনুচ্ছেদে লেখা হয়েছে, ‘২০১১ সালের জানুয়ারি মাসে দুই সরকারের ঐকমত্যের ভিত্তিতে তৈরি হওয়া তিস্তা পানিবণ্টন চুক্তি সই করার জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে অনুরোধ করেছিলেন।
মোদি জানিয়েছেন, ওই চুক্তি দ্রুত সম্পন্ন করার লক্ষ্যে তার সরকার সংশ্লিষ্ট মহলগুলির সঙ্গে কথা বলছেন।’ শুধু তাই নয়, ফেনি, মানু, ধরলাসহ ৭টি নদীর পানিবণ্টন নিয়ে চুক্তি সইয়ের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলেও বলা হয়েছে বিবৃতিতে। তোর্সার নামই নেই সে তালিকায়।
মুখ্যমন্ত্রী তিস্তার বদলে তোর্সার জলের প্রস্তাব দেয়ার পর এখনও সরকারিভাবে মুখ খোলেননি কেন্দ্রীয় কর্মর্তারা। খোলার কথাও নয়। কারণ শেখ হাসিনার সফর এখনও শেষ হয়নি। তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, এই প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য বলেই মনে করছে না কেন্দ্র। তার কারণ, জলের অভাবে বাংলাদেশে তিস্তা অববাহিকা শুকিয়ে জীবন-জীবিকায় বিপর্যয় নামার বিষয়টি তো রয়েছেই।
আন্দবাজারের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, নয়াদিল্লি জানে, তিস্তা নিছক একটি নদীর নাম নয়। বাংলাদেশের মানুষের আবেগের নাম। বাংলাদেশের পরবর্তী সংসদ নির্বাচনে বিশেষ গুরুত্ব বহন করছে তিস্তা চুক্তি।
শেখ হাসিনাকে পাশে নিয়ে মোদি বলেছেন, ‘আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, একমাত্র আমার এবং আপনার সরকারই তিস্তা চুক্তির দ্রুত সমাধান করতে পারবে।’
(ইউএম/ ১০ এপ্রিল ২০১৭)