নরসিংদীতে ঠিকাদারকে শারীরিক নির্যাতন: মাদক পরিদর্শকসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা
প্রতিবেদক, বিনিয়োগবার্তা, নরসিংদী: বিনা মামলা, বিনা ওয়ারেন্টে আবু সাঈদ নামে এক ঠিকাদারকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগে নরসিংদী জেলা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন কার্যালয়ের পরিদর্শক নাজমুল হোসেন খান ও সহকারী উপ-পরিদর্শক জাকির হোসেনসহ ৬ জনকে আসামী করে ফৌজধারী আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
নরসিংদী জেলা পরিষদের প্রথম শ্রেণীর এই ঠিকাদার নিজে বাদী হয়ে বুধবার (১৭ মে) নরসিংদী বিজ্ঞ অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এই মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার অন্যান্য আসামীরা হলেন, একই কার্যালয়ের সিপাহী ইসমাইল, মাইন উদ্দিন, ওয়ারলেস অপারেটর একেএম ফারুক আহম্মেদ এবং সুমি নামে একই কার্যালয়ের সোর্স।
মামলার আর্জিতে বলা হয়েছে, নরসিংদী জেলা শহরের মধ্যকান্দাপাড়া মহল্লার বাসীন্দা মোঃ হারিছুল হকের পুত্র আবু সাঈদ নরসিংদী জেলা পরিষদের ঠিকাদারীর কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। গত ১৪ মে রবিবার বিকেল ৫ টায় সে একটি আইনী পরামর্শের জন্য নরসিংদী কোর্ট প্রাঙ্গনে আইনজীবী সমিতির ভবনের সামনে যায়। সেখানে পৌছার সাথে সাথেই আসামী সুমি তার পথরোধ করে। সে জানায় যে মাদক দ্রব্যের স্যারেরা তার সাথে কথা বলবে। মুহূর্তের মধ্যেই পরিদর্শক নাজমুল হোসেন, উপ-পরিদর্শক জাকির হোসেন, সিপাহী ইসমাইল, মাইন উদ্দিন ও ওয়ারলেস অপারেটর একেএম ফারুক আহমেদ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে ঘেরাও করে জোরপূর্বক তুলে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন নরসিংদী কার্যালয়ে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে একটি কক্ষে বন্দী করে রাখে। কিছুক্ষণপর বন্দী কক্ষে গিয়ে তারা সাঈদকে বলে যে, তুই, মাদক দ্রব্যের ব্যবসা করিস। আবু সাঈদ এ কথা অস্বীকার করায় তারা তার শরীর ও পকেট তল্লাশী করে নগদ ১০ হাজার টাকা নিয়ে যায়। এরপর নাজমুল হোসেন, জাকির হোসেন, ইসমাইল, মাইন উদ্দিন, একেএম ফারুক আহমেদ তার উপর শারীরিক নির্যাতন শুরু করে। তরা সাঈদকে এলোপাতারি কিল, ঘুষি, চর-থাপ্পর মারে এবং জাকির হোসেন কাঠের লাঠি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারধোর করে। এতে আসামীর বাম হাতে রক্তাক্ত যখম হয়। এসময় আবু সাঈদ কান্নাকাটি করতে থাকলে আসামীরা তার নিকট নগদ ১ লাখ টাকা মুক্তিপন দাবী করে। টাকা না দিলে তাকে মাদক মামলায় জড়িয়ে জেল খাটানোর হুমকি দেয়। এই ঘটনার খবর পেয়ে আবু সাঈদের লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে আসামীদেরকে ২০ হাজার টাকা নগদ প্রদান করলে তারা আবু সাঈদকে ছেড়ে দেয় এবং বাকী ৮০ হাজার টাকা ১ সপ্তাহের মধ্যে প্রদানের নির্দেশ দেয়। অন্যথায় তাকে একাধিক মামলায় জড়িয়ে জেল খাটাবে বলে হুমকি দেয়। এ অবস্থায় আবু সাঈদ তাদের কাছ থেকে মুক্তি পেয়ে নরসিংদী প্রেস ক্লাবে গিয়ে এই ঘটনা সাংবাদিকদেরকে অবহিত করে।
বুধবার এব্যাপারে সে আদালতে ফৌজদারী আইনে বিভিন্ন ধারাসহ ১৯৯০ সালের মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনের ২৪ ধারায় মামলা দায়ের করে।
(এসএইচআর/এসএএম/ ১৭ মে ২০১৭)