ঘূর্ণিঝড় মোরা: চট্টগ্রামে চিকিৎসক ও নার্সদের ছুটি বাতিল
প্রতিবেদক, বিনিয়োগবার্তা, চট্টগ্রাম: ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ আঘাত হানতে পারে এমন আশঙ্কার কারণে চট্টগ্রাম মহানগর, জেলা, উপজেলাসহ সব চিকিৎসক ও নার্সদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. আজিজুর রহমান সিদ্দিকী।
সোমবার দুপুর ১২ টায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ঘূর্ণিঝড় মোরা প্রতিরোধ বিষয়ক জরুরি সভায় জেলা প্রশাসকের উপস্থিতিতে এই কথা বলেন তিনি।
সিভিল সার্জন বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আবুল কালাম আজাদ সকালে আমার কাছে ছুটি বাতিল সংক্রান্ত চিঠি পাঠিয়েছেন। এই নোটিশ আমি সব উপজেলায় পাঠিয়ে দিয়েছি। মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো নির্দেশনা অনুযায়ী, সরকার থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সব চিকিৎসক ও নার্সকে নিজ নিজ কর্মস্থলে উপস্থিত থাকতে হবে।
সিভিল সার্জন বলেন, প্রতিটি উপজেলায় ১৬ থেকে ২৫টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। সিভিল সার্জনের পক্ষ থেকে ০৩১-৬৩৪৮৪৩ নম্বরে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। কেউ ঘূর্ণিঝড়ে আহত হলে কিংবা আঘাত পেলে কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগের পরামর্শ দেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রাম জেলার ইউনিয়ন পর্যায়ে আমাদের ২৮৪টি মেডিকেল টিম রয়েছে। প্রতিটি টিমে একজন চিকিৎসক আর ২ জন সহকারী রয়েছেন। এই মেডিকেল টিমগুলোকে প্রয়োজনীয় ওষুধ নিয়ে প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই টিম ইতিমধ্যে ঔষধ নিয়ে প্রস্তুত আছে বলে তারা আমাকে জানিয়েছে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মো. জিল্লুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোরার কারণে চট্টগ্রামের উপকূলীয় অঞ্চলের ৪৭৯ টি আশ্রয় কেন্দ্র ইতোমধ্যে খুলে দেওয়া হয়েছে। এসব আশ্রয় কেন্দ্রে আনুমানিক ৪ লাখ ৪৫ হাজার ৮৮০ জন মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে।
তিনি বলেন, আমরা কোন ঝুঁকি নিতে চাইনা। আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষদের এই আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিতে তাদের কাছে অনুরোধ জানিয়েছি। অন্যান্যবার ঘূর্ণিঝড় আসতে সময় লাগলেও আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য মতে আগামীকাল সকালে এই ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানতে পারে। সেজন্য আমরা দ্রুতই পদক্ষেপ নিয়েছি।
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমরা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল উপজেলায় আমাদের নির্দেশনা জানিয়ে দিয়েছি। এছাড়া সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, টিভি, রেডিও সংবাদপত্র কিংবা অনলাইন পত্রিকায় আমাদের এই নির্দেশনা উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের কাছে দ্রুত পৌঁছে দিন। যাতে মানুষের কাছে আমাদের তথ্য পৌঁছাতে যদি দেরিও হয় তাহলে আপনাদের মাধ্যমেও যেন তারা বিষয়টি সম্পর্কে জানতে পারেন। আপনারাও তদারকি করেন-উপকূল পর্যায়ে কাজ হচ্ছে কিনা। প্রয়োজনে সমস্যার কথা আমাকে ফোনে জানান।
মো. জিল্লুর রহমান বলেন, পুলিশ, জনপ্রতিনিধি, উপজেলা নির্বাহী কমকর্তারা কাজ শুরু করে দিয়েছেন। মসজিদের মাইকেও ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে। সময় একেবারে কম। ইতিমধ্যে সব উপজেলায় ০৩১-৬১১৫৪৫ নম্বরে কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে।
তিনি জানান, শহরের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় গুলোতে ম্যাজিস্ট্রেট পাঠানো হয়েছে, সেখানে অবস্থানরতদের দ্রুত সরে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে।
এ সময় জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তা সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
(ইউএম/ ২৯ মে ২০১৭)