Shakil-Talukder 01

সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা: সকল নাগরিকের আর্থিক নিরাপত্তার জন্য বড় মাইলফলক

শাকিল তালূকদার: বাংলাদেশের বর্তমান সরকার সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু করার জন্য ২০২৩ একটি বিল পাশ করেছে। ১লা জুন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, আগামী অর্থবছর থেকেই বাংলাদেশে সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করা সম্ভব হবে। তিনি বলেন, আশা করছি ২০২৩-২৪ অর্থবছর থেকেই বাংলাদেশে সার্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করা সম্ভব হবে। প্রস্তাবিত স্কিমে অর্ন্তভুক্ত হলে ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী একজন সুবিধাভোগী ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত এবং ৫০ বছরের অধিক বয়স্ক একজন সুবিধাভোগী ন্যূনতম ১০ বছর পর্যন্ত চাঁদা প্রদান সাপেক্ষে আজীবন পেনশন সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। এতে প্রবাসীরাও অংশগ্রহণ করতে পারবেন। স্কিমটি সকল নাগরিকের জন্য উন্মুক্ত, তাদের কর্মসংস্থানের অবস্থা নির্বিশেষে। এটি একটি সরকার-স্পন্সরড পেনশন প্ল্যান যা বয়স্কদের জন্য একটি নিরাপত্তা জাল প্রদান করতে এবং অবসর গ্রহণের সময় তাদের একটি শালীন জীবন যাত্রার মান বজায় রাখতে সাহায্য করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। সার্বজনীন পেনশন স্কিমটি সরকারের এবং স্বতন্ত্র অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে অবদানের সংমিশ্রণ দ্বারা অর্থায়ন করা হয়। সরকারি অবদান হল একটি সমতল হার,  যখন ব্যক্তিগত অবদান হল অংশগ্রহণকারীর আয়ের শতাংশ। সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে এই প্রকল্পে জনসংখ্যার ৭০% নথিভুক্ত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।

কিস্তির হার কত হবে, তা এখনও নির্ধারণ হয়নি। এ আইনের আওতায় গঠিত সংশ্নিষ্ট কর্তৃপক্ষ এটি নির্ধারণ করবে। মাসিক বা ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে কিস্তি দেওয়া যাবে। অগ্রিম কিস্তি দেওয়ারও সুযোগ থাকবে। পেনশনের জন্য যোগ্য হতে, নাগরিকদের কমপক্ষে ৬০ বছর বয়সী হতে হবে এবং কমপক্ষে ১০ বছর অবদান রাখতে হবে। পেনশনে থাকাকালীন কোনো ব্যক্তি ৭৫ বছর পূর্ণ হওয়ার আগে মারা গেলে তার নমিনি বাকি সময়ের জন্য (মূল পেনশনারের বয়স ৭৫ বছর পর্যন্ত) মাসিক পেনশন প্রাপ্য হবেন। চাঁদা দাতা কমপক্ষে ১০ বছর চাঁদা দেওয়ার আগে মারা গেলে জমা টাকা মুনাফাসহ তার নমিনিকে ফেরত দেওয়া হবে। সার্বজনীন পেনশন প্রকল্প বাংলাদেশের জন্য একটি বড় পদক্ষেপ এবং দারিদ্র্য ও বৈষম্য কমাতে সাহায্য করবে। এটি লোকেদের অবসর গ্রহণের জন্য সঞ্চয় করতে উৎসাহিত করে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াবে বলেও আশা করা হচ্ছে। 
সার্বজনীন পেনশন স্কিম বাংলাদেশের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন, কারণ এটি বয়স্কদের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় আর্থিক নিরাপত্তা প্রদান করবে। স্কিমটি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াবে বলেও আশা করা হচ্ছে, কারণ এটি বয়স্কদের কর্মশক্তিতে অংশগ্রহণ করতে এবং অর্থনীতিতে অবদান রাখতে যুক্ত করবে।

ইউনিভার্সাল পেনশন সিস্টেমের সুবিধা
প্রথমত সার্বজনীন পেনশন প্রকল্পের অনেক সুবিধা রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে: আর্থিক নিরাপত্তা: সার্বজনীন পেনশন স্কিম বয়স্কদের জন্য একটি গ্যারান্টিযুক্ত আয় প্রদান করবে, যা তাদের অবসরের সময় একটি শালীন জীবন যাত্রার মান বজায় রাখতে সাহায্য করবে। দারিদ্র্য হ্রাস: সর্বজনীন পেনশন প্রকল্পটি প্রবীণদের মধ্যে দারিদ্র্য হ্রাস করবে বলে আশা করা হচ্ছে, কারণ এটি তাদের আয়ের একটি উৎস সরবরাহ করবে যার উপর তারা নির্ভর করতে পারে। চলিত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি: সার্বজনীন পেনশন স্কিম অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াবে বলে আশা করা হচ্ছে, কারণ এটি বয়স্কদের কর্মশক্তিতে অংশগ্রহণ করতে এবং অর্থনীতিতে অবদান রাখতে যুক্ত করবে। দ্বিতীয়ত সার্বজনীন পেনশন ব্যবস্থার চ্যালেঞ্জ: সার্বজনীন পেনশন প্রকল্পের সাথে যুক্ত কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে: খরচ: সার্বজনীন পেনশন প্রকল্প একটি ব্যয়বহুল প্রোগ্রাম এবং সরকারকে এটির অর্থায়নের উপায় খুঁজে বের করতে হবে। প্রশাসন: সার্বজনীন পেনশন প্রকল্প একটি জটিল কর্মসূচী, এবং সরকারকে এটি পরিচালনার জন্য একটি কার্যকর ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। জন সচেতনতা: সর্বজনীন পেনশন প্রকল্পের সুবিধা সম্পর্কে জনসাধারণকে সচেতন করতে হবে, যাতে তারা অংশগ্রহণ করতে অনুপ্রাণিত হয়। 

একটি জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ গঠনের বিধান রাখা হয়েছে। এ কর্তৃপক্ষের একজন নির্বাহী চেয়ারম্যান ও চার জন সদস্য থাকবেন। তাদের নিয়োগ দেবে সরকার। ১৬ সদস্যের একটি পরিচালনা পর্ষদ গঠনের বিধানও রাখা হয়েছে বিলে। এর চেয়ারম্যান হবেন অর্থমন্ত্রী। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব, অর্থ বিভাগের সচিব,  এনবিআর চেয়ারম্যান, সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব, সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি, এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের সভাপতি, উইমেন চেম্বার্স অব কমার্সের সভাপতি- এর সদস্য হবেন। পর্ষদের সদস্য সচিব হবেন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান। বিধির মাধ্যমে নির্ধারিত এক বা একাধিক তফশিলি ব্যাংক জাতীয় পেনশন তহবিলের ব্যাংকার হিসেবে কাজ করবে। এ আইনটি গেজেট আকারে প্রকাশের পর গঠন করা হবে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ। এরপর আগামী ১ জুলাই থেকে চালু করা হবে 'সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা' স্কিমের পরীক্ষামূলক কার্যক্রম। শুরুতে মডেল জেলা হিসেবে রাখা হবে ঢাকাসহ দেশের অন্য যে কোনো একটি জেলাকে। পরীক্ষামূলক এ কার্যক্রমের মেয়াদ হবে সর্বোচ্চ দুই বছর। এর সাফল্যের ওপর ভিত্তি করে পরবর্তী দুই বছরের মধ্যে 'সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা' একই পদ্ধতিতে সারাদেশে বিস্তৃত করা হবে। তবে শুরুর প্রক্রিয়াটি হবে সীমিত পরিসরে।

উল্লেখ করা যেতে পারে, বর্তমান সরকারের নির্বাচনি ইশতেহারে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা প্রবর্তনের অঙ্গীকার ছিল। এই অঙ্গীকার বাস্তবায়নের জন্য সরকার অবশ্যই ধন্যবাদ পেতে পারে। দেশে গড় আয়ু ও প্রবীণের সংখ্যা বাড়ায় সামাজিক নিরাপত্তাহীনতার ঝুঁকি বাড়ছে। এ অবস্থায় সর্বজনীন পেনশন স্কিমের প্রয়োজনীয়তা বলার অপেক্ষা রাখে না। অবশ্য এটি নতুন কোনো ধারণা নয়। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও এ স্কিম চালু করা হয়েছে। নেদারল্যান্ডস সহ অনেক উন্নত দেশে এ স্কিম কার্যকর রয়েছে। বস্তুত, কল্যাণ রাষ্ট্রের ধারণা থেকেই এ চিন্তার উদ্ভব। স্কিমটি পরিচালনা করাও এমন কোনো কঠিন কাজ নয়। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে সর্বশেষ প্রকাশিত স্ট্যাটিসটিকস অব সিভিল অফিসার্স অ্যান্ড স্টাফস ২০২১ বইয়ের (জুন ২০২২ সালে প্রকাশিত) তথ্য অনুযায়ী দেশে মোট ১৫ লাখ সরকারি চাকরিজীবী সংখ্যা। বাকিটা বাইরে। বিলে বলা আছে দেশের পিছিয়ে পড়া দরিদ্র, দুস্থ অসহায় জনগোষ্ঠির জন্য বিলটি আনা হবে। কিন্তু আমাদের সংবিধানে ১৫ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে রাষ্ট্র মানুষের মৌলিক অধিকার - অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা নিশ্চিত করবে। আর ১৫ (ঘ) ধারার দেশের অভাবগ্রস্ত, দুস্থ ও অসহায় মানুষ সরকারি সহায়তা পাবেন।

বর্তমানে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) তথ্য মতে দেশের মানুষের গড় আয়ু ৭২.৩ বছর। ২০৩১ সালের মধ্যে দেশে দুই কোটির বেশি মানুষের বয়স হবে ৬০ এর উপরে। বর্তমানে বাংলাদেশে পুরুষদের ক্ষেত্রে ৬৫ বছর ও মহিলাদের ক্ষেত্রে ৬০ বছর দরিদ্র বয়স্কদের আগে ৫০০ টাকা এখন ৬০০ টাকা করে মাসিক ভাতা দেয় সরকার। তবে ৬৫ বছরের উপরে ৪০ শতাংশের বেশি মানুষ কোন ধরনের পেনশন ও বয়স্ক ভাতা কিছুই পান না। ব্যতিক্রমী উদ্যোগের মত সার্বজনীন পেনশন কার্যক্রম চালু হলে ভবিষ্যতে জনগণের মধ্যে এক ধরণের নিরাপত্তাবোধ জন্ম নিবে। আজ বয়স্ক মানুষরা যেভাবে তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবে, সেই ভাবনা তাদের মধ্যে আর থাকবে না। আর এই কারণেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে জনবান্ধব রাষ্ট্রনায়ক বলা যেতেই পারে। এদেশের মানুষ ভবিষ্যৎ নিরাপত্তায় ব্যক্তিগতভাবে উদ্যোগী ছিল। যেমন গবাদি পশু লালন-পালন, কৃষি জমি ক্রয়, কৃষি জমি বন্ধক গ্রহণ সহ ইত্যাদি পদ্ধতিতে মানুষ ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার প্রচেষ্টা চালাত, যা ছিল দেশের সাধারণ মানুষের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার প্রথাগত পন্থা। দেশে সর্বসাধারণের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার জন্য পেনশনের কোনো ব্যবস্থা নেই। শুধু সরকারি কর্মচারীদের জন্য পেনশন ব্যবস্থার প্রচলন আছে। চলতি অর্থবছরে ‘পেনশন ও গ্র্যাচুইটি’ খাতে সরকারের মোট ব্যয় ৪০ হাজার ৮৫২ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ৫.৩ শতাংশ। দেশের ১৫ লাখ গণ-কর্মচারীদের অবসরকালীন সামাজিক সুরক্ষার লক্ষ্যে এ পেনশন ব্যবস্থা। রাষ্ট্র কি শুধু স্বল্প সংখ্যক সরকারি চাকরিজীবীর সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করবে, নাকি সব নাগরিকের সুরক্ষার বিষয় বিবেচনা করবে।

বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে বয়স্ক জনগোষ্ঠীকে একটি টেকসই ও সুসংগঠিত সামাজিক নিরাপত্তা কাঠামোর আওতায় আনার বিষয় অন্তর্ভুক্ত করেন। তিনি এই ইশতেহারে জাতীয়ভাবে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা প্রবর্তনের প্রতিশ্রুতি জাতির কাছে পেশ করেন। এ ধারাবাহিকতায় বয়স্কদের জন্য ব্যাপকভিত্তিক পেনশন ব্যবস্থা চালু করার বিষয় জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। অন্যদিকে সপ্তম ও অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় সমন্বিত ‘পেনশন কার্যক্রম’ চালুর আওতায় বয়স্ক ভাতা প্রদানের পাশাপাশি ‘জাতীয় সামাজিক বীমা কর্মসূচি’ এবং  ‘বেসরকারি ভলান্টারি পেনশন’ চালুর প্রস্তাবনা রাখা হয়। বর্তমান ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ২০১৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারেও সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা প্রবর্তনের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।

পরিশেষে বলা যায় যে, বাংলাদেশের বর্তমান  জনবান্ধব সরকার কর্তৃক প্রবর্তিত সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা সকল বয়স্ক নাগরিকদের জন্য আর্থিক নিরাপত্তা এবং সামাজিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক। বয়স্ক জনসংখ্যার চাহিদা পূরণ করে এবং একটি নির্ভরযোগ্য আয়ের উৎস প্রদান করে, এই ব্যবস্থা অগণিত জীবনকে উন্নীত করেছে এবং দারিদ্র্য নিরসনের প্রচেষ্টায় অবদান রাখবে। তবে যাত্রা এখানেই শেষ নয়। সার্বজনীন পেনশন ব্যবস্থার সাফল্য বজায় রাখার জন্য চলমান প্রতিশ্রুতি, ক্রমাগত মূল্যায়ন এবং আর্থ-সামাজিক গতিশীলতার পরিবর্তনের জন্য প্রতিক্রিয়াশীল অভিযোজন প্রয়োজন। সামাজিক কল্যাণে সরকারের অটল উৎসর্গের সাথে, বাংলাদেশ তার সার্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী ও প্রসারিত করতে হবে, অনুরূপ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা অন্যান্য দেশকে অনুপ্রাণিত করে। এটাই জনবান্ধব সরকারের কাছে প্রত্যাশা।

উপসংহার
সার্বজনীন পেনশন স্কিম বাংলাদেশের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন এবং এটি বয়স্কদের জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে সক্ষম। সরকারকে এই স্কিমটির সাথে যুক্ত চ্যালেঞ্জগুলি মোকাবেলা করতে হবে, তবে এটি সফল হলে, এটি বয়স্কদের জন্য একটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা জাল প্রদান করবে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াবে।

অতিরিক্ত তথ্য
সার্বজনীন পেনশন স্কিমটি ন্যাশনাল পেনশন অথরিটি (NPA) দ্বারা পরিচালিত হয়, যা ২০২২ সালে সরকার দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল৷ এনপিএ স্কিমে অংশগ্রহণকারীদের নথিভুক্ত করা, অবদান সংগ্রহ এবং সুবিধা প্রদানের জন্য দায়ী৷

সার্বজনীন পেনশন স্কিম হল একটি সংজ্ঞায়িত বেনিফিট স্কিম, যার মানে হল যে অংশগ্রহণকারীদের অবসরে আয়ের একটি নির্দিষ্ট স্তরের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়। সুবিধার পরিমাণ অংশগ্রহণকারীর অবদান এবং তারা কত বছর এই স্কিমে অংশগ্রহণ করেছে তার উপর ভিত্তি করে।

সার্বজনীন পেনশন স্কিম স্বেচ্ছায়, কিন্তু সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে জনসংখ্যার ৭০% নথিভুক্ত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করার জন্য, সরকার কর অবকাশ এবং মিলিত অবদানসহ বেশ কয়েকটি প্রণোদনা প্রদান করছে।

সর্বজনীন পেনশন স্কিম একটি নতুন কর্মসূচি, এবং এটি কতটা সফল হবে তা বলা এখনও খুব তাড়াতাড়ি। যাই হোক,  সরকার এই স্কিমটিকে সফল করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং এর সাফল্য নিশ্চিত করার জন্য এটি বেশ কয়েকটি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

সার্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা বর্তমান সরকারের একটি বড় অর্জন। এটি একটি সাহসী এবং উচ্চাভিলাষী প্রোগ্রাম যা বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে সক্ষম। এই গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগে সরকার তার দূরদর্শিতা এবং অঙ্গীকারের জন্য প্রশংসার দাবিদার।

সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা সরকারের বৃহত্তর সামাজিক সুরক্ষা এজেন্ডার একটি মূল উপাদান। সরকার স্বাস্থ্য সেবা, শিক্ষা এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় পরিষেবাগুলিতে অ্যাক্সেস বাড়ানোর জন্যও কাজ করছে। এই প্রচেষ্টাগুলি সকল বাংলাদেশীর জীবন যাত্রার উন্নতি এবং আরও সমৃদ্ধ ও ন্যায়সঙ্গত সমাজ গঠনের জন্য অপরিহার্য।

লেখক: গবেষক, সিনিয়র উপ-সম্পাদক, বিনিয়োগবার্তা ডট কম ও প্রোগ্রাম ম্যানেজার, এলকপ।

বিনিয়োগবার্তা/ডিএফই/এসএএম//


Comment As:

Comment (0)