Sharemarket Governor

মুদ্রানীতির ঘোষণাকালে গবর্ণর

নতুন মুদ্রানীতিতে বন্ড মার্কেটের উন্নয়নকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে:

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেছেন, কেন্দ্রীয় ব‌্যাংকের পক্ষ থেকে পুঁজিবাজারের বন্ড মার্কেটের উন্নয়নে অনেক গুরুত্ব দিচ্ছি। এটা আমাদের ইনভেস্টমেন্টকে সাহায্য করার পাশাপাশি কর্মসংস্থান বাড়াতে সহায়তা করবে। পুঁজিবাজারের ইক্যুইটি মার্কেট নিয়ে কাজ হচ্ছে। সেটা চলতে থাকুক, সেটা নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। 

রোববার (১৮ জুন) বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে ২০২৩–২৪ অর্থবছরের প্রথমার্ধের (জুলাই-ডিসেম্বর) মুদ্রানীতি ঘোষণাকালে প্রশ্নোত্তর পর্বে গভর্নর এসব কথা বলেন। মুদ্রানীতি ঘোষণাকালে পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে নতুন মুদ্রানীতি তুলে ধরেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. হাবিবুর রহমান।

আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, মুদ্রানীতিতে পুঁজিবাজার নিয়ে একটি চ‌্যাপ্টার আছে। সেখানে আমরা বলেছি, পুঁজিবাজারে আসলে দুটি অংশ। একটি হলো ইক্যুইটি মার্কেট ও আরেকটি হলো বন্ড মার্কেট। আমাদের এখানে ইক্যুইটি মার্কেট নিয়ে সবাই কথা বলেন। এ মার্কেটের প্রায় ৯৮ শতাংশ ইক্যুইটি মার্কেট আর ২ শতাংশ বন্ড মার্কেট। আমরা চাচ্ছি, এই বন্ড মার্কেটটা ডেভেলপ করুক। কারণ, আমাদের এখানে ব‌্যাংক শর্ট টার্মে লোন নিয়ে লং টার্মে ইনভেস্ট করছে। আসলে এটা ম্যাচুরিটি মিস ম্যাচ। তাই, আমরা উৎসাহিত করছি বন্ড মার্কেটকে ডেভেলপ করার জন‌্য। এবার ব‌্যাংক কোম্পানি অ‌্যাক্ট যেটা হয়েছে, সেখানে বন্ডকে ইক্যুইটি থেকে আলাদা করে ফেলেছি। যাতে ব‌্যাংকগুলো এতে বেশি আগ্রহী হয়।

এদিকে, ঘোষিত মুদ্রানীতিতে পুঁজিবাজারকে শক্তিশালী করার প্রসঙ্গে উল্লেখ করা হয়, দেশের দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য উন্নত পুঁজিবাজার প্রয়োজন। তবে, বাংলাদেশে সরকারি ও বেসরকারি বিনিয়োগ সুউন্নত পুঁজিবাজারের অনুপস্থিতির কারণে ব্যাংকের অর্থের ওপর নির্ভর করে। সাধারণত, ব্যাংকগুলো দীর্ঘমেয়াদে অর্থায়নের জন্য স্বল্পমেয়াদি আমানতের ওপর নির্ভর করে। এতে আর্থিক অবস্থার পরিপূর্ণতায় ঘাটতি তৈরি করে এবং তারল্য পরিচালনার ওপর চাপ দেয়। একটি উন্নত পুঁজিবাজার এবং বিশেষ করে বন্ড মার্কেট অবকাঠামো উন্নয়ন ও শিল্পায়নের জন্য বিশাল অর্থায়নের প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে পারে। সেই সঙ্গে ব্যাংকিং সিস্টেমের কার্যক্ষমতায় অবদান রাখতে পারে।

মুদ্রানীতিতে জানানো হয়, উন্নত পুঁজিবাজারের কারণে বিনিয়োগকারীরা ব্যবসায়ের ব্যয় কমাতে পারে এবং প্রতিযোগিতামূলক হারে বন্ড মার্কেট থেকে ঋণ নিয়ে পরিচালনা দক্ষতা উন্নত করতে পারে। একই সঙ্গে সরকার কম দামে বন্ড মার্কেট থেকে বাজেটে ঘাটতির একটি উল্লেখযোগ্য অংশের অর্থায়ন করতে পারে। কিন্তু, পুঁজিবাজার ও বিশেষ করে বন্ড মার্কেট এখনও ভালভাবে বিকশিত হয়নি। এই অবস্থায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পুঁজিবাজারের বিকাশ এবং দেশে বিনিয়োগের প্রচারের জন্য বেশ কয়েকটি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এতে আরও বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক কিছু অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের পরিপ্রেক্ষিতে পুঁজিবাজারে পর্যাপ্ত তারল্যের নিশ্চিত করার চেষ্টা করেছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকগুলোকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ তহবিল পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য নির্দেশনা দেয়। সেই সঙ্গে ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে পুঁজিবাজার থেকে বন্ডের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহের জন্য নির্দেশনা দেয়। সেই সঙ্গে সুকুক বন্ডে বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক নির্দেশনা জারি করে এবং বর্তমানে বন্ডটিতে প্রতিষ্ঠানগুলোর বিনিয়োগ চালু রয়েছে। এছাড়া, ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধন করে একটি নতুন আইন অনুমোদন করা হয়েছে, যেখানে পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ও বিকাশের ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো যাতে সহায়তা করে, সে বিষয়ে আইনে তাদের উৎসাহিত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে পুঁজিবাজারের প্রবৃদ্ধিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ বাড়াতে বাংলাদেশ সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন জোর দিয়েছে। এ লক্ষ্যে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদেরকে নীতিগত সহায়তা দেওয়ার লক্ষ্যে উদ্যোগ হাতে নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়।

মুদ্রানীতি ঘোষণাকালে ডেপুটি গভর্নরসহ বিএফআইইউয়ের প্রধান কর্মকর্তা, চিফ ইকোনমিস্ট, গবেষণা বিভাগের নির্বাহী পরিচালক এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বিনিয়োগবার্তা/ডিএফই//


Comment As:

Comment (0)