প্রতারণার অভিযোগে লিন্ডে বিডি’র বিরুদ্ধে চার্জ গঠন
নিজস্ব প্রতিবেদক: পুঁজিবাজারে তালিকাভূক্ত বহুজাতিক কোম্পানি লিন্ডে বাংলাদেশ লিমিটেডের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে চার্জ গঠনের আদেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার (২৬ জুন) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন মেজিস্ট্রেস আদালতের ৭ নাম্বার কোর্টে শুনানির পর আদালত এ আদেশ দেয়া হয়। এর আগে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এই প্রতারণার মামলাটি দায়ের করে লিন্ডে বাংলাদেশের একমাত্র পরিবেশক কানেক্ট ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেড।
মামলার আরজিতে বলা হয়, লিন্ডে বাংলাদেশ লিমিটেড কানেক্ট ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেডকে দিয়ে ডিস্ট্রিবিউশন চুক্তির বাইরেও ভেন্ডর হিসাবে নিয়োগ দিয়ে সারা দেশ থেকে লিন্ডের টেস্ট ডিউ খালি সিলিন্ডার লিন্ডের ফ্যাক্টরিতে পরিবহনের কাজের জন্য পারচেজ অর্ডার দেয়। সেই হিসাবে ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাস থেকে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত কানেক্ট ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেড এই কাজ করে আসছিল এবং নিয়মিত কাজের বিনিময়ে বিল সাবমিট করলেও কোনো বিল পরিশোধ করেনি।
মামলায় লিন্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুজিত পাই, ব্যবস্থাপনা পরিচালকের উপদেষ্টা এরফান সিহাবুল মতিন, সহযোগী পরিচালক চৌধুরী নুরুর রহমানসহ মোট ৬ জনকে আসামী করা হয়। আসামীদের মধ্যে এক নাম্বার আসামি সুজিত পাই পালাতক এবং বাকি পাচ জন জামিনে আছেন।
মামলাটি দায়েরের পর লিন্ডে হাইকোর্ট থেকে এই মামলার কার্যক্রম স্থগিত রাখার জন্য একটি স্টে অর্ডার নিয়ে এতদিন মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রাখে। এক বছর ধরে শুনানির পর ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে হাইকোর্ট সেই স্টে অর্ডারটি খারিজ করে দিলে মামলাটি পুনরায় নিম্ন আদালতে চালু হয় এবং তারই ধারাবাহিকতায় আজ (বুধবার) ঢাকার সিএমএম আদালত উভয় পক্ষের শুনানি শেষে লিন্ডের বিরুদ্ধে প্রতারণার চার্জ গঠনের আদেশ প্রদান করেন।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার আগে লিন্ডে বাংলাদেশ লিমিটেড বিওসি বা বাংলাদেশ অক্সিজেন লিমিটেড নামে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিল। সম্প্রতি নাম পরিবর্তন করে ৬০% শেয়ার ইন্ডিয়ান কোম্পানির মালিকানায় আসার পর লিন্ডে বাংলাদেশ লিমিটেড নামে বাংলাদেশে ব্যবসা পরিচালনা করতে থাকে। মূলত গত তিন বছর ধরে কোম্পানির ব্যবসা ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকে যা তাদের বাৎসরিক অডিট রিপোর্ট থেকে জানা যায়। এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি লিন্ডে বাংলাদেশ তাদের ঝালাই রডের ব্যবসা বাংলাদেশ থেকে গুটিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় এবং আমেরিকান আরেকটি কোম্পানি ইসাবের (ইএসএবি) কাছে বিক্রির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
অপর দিকে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ থেকে জানা যায়, ক্রমাগত তিন বছর ধরে ব্যবসা মন্দা যাওয়ার পরেও চলতি জুন মাসে কোম্পানিটি প্রায় ১৫৪০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করে যা লিন্ডের ইতিহাসে বিরল। গত বছরগুলোতে যখন লিন্ডের ব্যবসা খুবই ভালো এবং একচেটিয়া ছিল তখনও লিন্ডে সর্বোচ্চ ৪০০ থেকে ৫০০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করতো। এই মাসে এই ধরনের ১৫৪০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করার ফলে প্রতিটি শেয়ারের বিপরীতে প্রায় ১৫৪ টাকা লভ্যাংশ পাবে শেয়ার হোল্ডাররা, যার ৬০ শতাংশই ইন্ডিয়ান কোম্পানির হাতে। এতে করে শুধু লভ্যাংশ বাবদই বাংলাদেশ থেকে প্রায় ১২০০ কোটি টাকা সরিয়ে নিতে পারবে।
বিনিয়োগবার্তা/এসএএম//