হিন্দুদের সাথে তারেক রহমান

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের জন্মাষ্টমী উৎসব উপলক্ষ্যে শুভেচ্ছা বিনিময়

হিন্দু সম্প্রদায়কে নির্ভয়ে দুর্গাপূজার উৎসব পালনের আহ্বান তারেক রহমানের

নিজস্ব প্রতিবেদক: সনাতন ধর্মাবলম্বীদের জন্মাষ্টমী উৎসব উপলক্ষ্যে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা। শুক্রবার বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে তাদের মধ্যে এ শুভেচ্ছা বিনিময় হয়। এ সময় দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে উপস্থিত নেতাদের খোঁজখবর নেন। তিনি সনাতন ধর্মাবলম্বী নেতাদের কথা শোনেন এবং বিভিন্ন বিষয় সমাধানের আশ্বাস দেন।

দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘গণতন্ত্র এখনো বিপদমুক্ত নয়। এমন পরিস্থিতিতে কোনো অপশক্তি যাতে আবার গণ-অভ্যুত্থানের চূড়ান্ত লক্ষ্য ও সাফল্যের ধারাকে ব্যাহত করতে না পারে, এজন্য দলমত নির্বিশেষে সবাইকে সতর্ক থাকা প্রয়োজন।’

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য, কেন্দ্রীয় নেতাসহ ও বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীর প্রায় কয়েক শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

তারেক রহমান হিন্দু সম্প্রদায়কে নির্ভয়ে দুর্গাপূজার উৎসব পালনের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘এই বাংলাদেশ আপনার-আমার, আমাদের সবার। বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিক সব ক্ষেত্রে সমান অধিকার ভোগ করবে, এটাই বিএনপির নীতি, রাজনীতি। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের দল বিএনপি বিশ্বাস করে ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার। ধর্ম যার যার, নিরাপত্তা পাবার অধিকার সবার।’

দুর্গাপূজার শুভেচ্ছা জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘আগামী মাসেই আপনাদের (হিন্দু সম্প্রদায়) সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। আপনারা প্রত্যেকে উৎসব উদযাপন করুন নির্ভয়ে, নিশ্চিন্তে, নিরাপদে।’

তারেক রহমান বলেন, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূলমন্ত্র ছিল সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বিশ্বাসী বলুন, আর অবিশ্বাসী বলুন কিংবা সংস্কারবাদী প্রত্যেকটি নাগরিক রাষ্ট্র বা সমাজে যার যার ধর্মীয় রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, সামাজিক অধিকারগুলো স্বচ্ছন্দে বিনাবাধায় উপভোগ করবে।’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘এমন একটি স্বাধীন রাষ্ট্র ও সমাজ নির্মাণের জন্যই মুক্তিযোদ্ধারা লাখো প্রাণের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছিলেন। কে মুসলমান, কে হিন্দু, কে বৌদ্ধ, কে খ্রিষ্টান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে আমাদের এমন কোনো জিজ্ঞাসা কিন্তু ছিল না। আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশ সংখ্যালঘু কিংবা সংখ্যাগুরু এসব নিয়ে চিন্তার কোনো কারণ নেই। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বাঙালি-অবাঙালি বিশ্বাসী অবিশ্বাসী কিংবা সংস্কারবাদী প্রতিটি নাগরিকের একমাত্র পরিচয় আমরা বাংলাদেশি।’

একটি স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠি কর্তৃক সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনা প্রসঙ্গে তারেক রহমান বলেন, ‘সংখ্যালঘু হামলার অধিকাংশ ঘটনাই কিন্তু ধর্মীয় কারণে হয়নি। তদন্ত করলে দেখা যাবে এসব হামলার ঘটনার অধিকাংশই অবৈধ লোভ-লাভের জন্য, দুর্বলের ওপরে সবলের হামলা কিংবা এর নেপথ্যে অসৎ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার উদ্দেশ্য।’

উপাসনালয়ে হামলার ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশন গঠনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমি মনে করি নিজ নিজ অধিকার রক্ষায় প্রত্যেকটি নাগরিকের ভোটের অধিকার একটি কার্যকরী শক্তিশালী অস্ত্র। যতদিন পর্যন্ত মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান অর্থাৎ দলমত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে দেশের প্রত্যেকটি নাগরিক নির্ভয়ে, নিশ্চিন্তে নিজের ভোট দিয়ে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করে, জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক একটি সরকার প্রতিষ্ঠা করতে না পারবেন, ততদিন পর্যন্ত কোনো নাগরিকের নিরাপত্তা ও অধিকার সুরক্ষিত নয়।’

ইসকানের চারু চন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী, চট্টগ্রাম অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস গোস্বামী, মহানগর পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব, পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর, সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ শর্মা, গুলশান পূজা কমিটির জেএল ভৌমিক, পান্না লাল দত্ত, হিন্দু মহাজোটের সুশান্ত কুমার চক্রবর্তী, হিন্দু বৌদ্ধ ঐক্য পরিষদের নির্মল রোজারিও বক্তব্য দেন।

অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, এজেডএম জাহিদ হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, কেন্দ্রীয় নেতা জয়ন্ত কুমার কুণ্ডু, আবদুল বারী ড্যানি, অপর্ণা রায়, রমেশ দত্ত, দেবাশীষ রায় মধু, সুশীল বড়ুয়া, জনগোমেজ, মিল্টন বৈদ্যসহ কেন্দ্রীয় এবং হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্টের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

বিনিয়োগবার্তা/এসএএম//


Comment As:

Comment (0)