পলিসি কনক্লেভ

পলিসি কনক্লেভে সরকার ও ব্যবসায়ীরা

রমজানে নিত্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখার প্রতিশ্রুতি

নিজস্ব প্রতিবেদক: খাদ্যপণ্য বাজারের কাঠামোগত দুর্বলতা, তথ্যের অপ্রতুলতা ও সরবরাহ চেইনে ডিজিটাল ব্যবস্থাপনার অভাবে বাজার নিয়ন্ত্রণে শক্তিশালী অবস্থান নিতে পারছে না সরকার। এ অবস্থায় আমদানি পণ্যের মূল্যহ্রাসে সরকারের পক্ষ থেকে আমদানি সহায়তা তহবিল বা আর্থিক স্কিম চালুর চিন্তা করা হচ্ছে। আর আসন্ন রমজানে নিত্যপণ্যের দাম স্বাভাবিক রাখা হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন ব্যবসায়ীরা। গতকাল বণিক বার্তা আয়োজিত ‘খাদ্যপণ্যের যৌক্তিক দাম: বাজার তত্ত্বাবধানের কৌশল অনুসন্ধান’ শীর্ষক পলিসি কনক্লেভে সরকারের নীতিনির্ধারক, ব্যবসায়ী ও অংশীজনরা এ মত দেন। রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে এ নীতি সংলাপের আয়োজন করা হয়।

বণিক বার্তা সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত পলিসি কনক্লেভে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। ‘ইন্টিগ্রেশন অব ফুড সাপ্লাই চেইনস ইন বাংলাদেশ: ডিজিটালাইজেশন ফর ইফেশিয়েন্সি, ট্রান্সপারেন্সি, ট্রেসেবিলিটি, লিগ্যাল ক্যাপাবিলিটি অ্যান্ড অ্যাকসেসিবিলিটি’ শিরোনামে প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে তিনি বলেন, ‘সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে না পারার বড় কারণ হলো বাজারের পর্যাপ্ত তথ্য-উপাত্ত সরকারের কাছে নেই। বার্ষিক উৎপাদন ও সরবরাহের তথ্য হয়তো জানা আছে, কিন্তু প্রাত্যহিক উৎপাদন ও সরবরাহের তথ্য সরকারের জানা থাকে না। অনেক ক্ষেত্রে পরিবেশক ও সরবরাহের তথ্য স্থানীয় পর্যায়ে না থাকলেও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পাওয়া যায়। ব্যবসায়ীদের কাছেও এ তথ্য থাকে। এ রকম একটা পরিস্থিতি দিয়ে সরকারের পক্ষে কখনো বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়।’

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার টানা ১৫ বছরের শাসনামলে মূল্যস্ফীতিসহ অর্থনীতির অন্যান্য তথ্য-উপাত্তে কারসাজি করার চিত্রও তুলে ধরেন তিনি। সিপিডির এ গবেষণা পরিচালক বলেন, ‘দীর্ঘ সময়জুড়ে মূল্যস্ফীতির হার ৬ শতাংশের নিচে বেঁধে রাখা হয়েছিল। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে ঋণ নিতে গিয়ে সে তথ্য আর ধামাচাপা দেয়া যায়নি। এ কারণে গত তিন বছর মূল্যস্ফীতির তথ্যের কিছু বাস্তবতা উঠে আসে। তবে আফসোস হচ্ছে বাজার তদারকিতে আগের সরকার যেসব উদ্যোগ নিয়েছে, বর্তমান সরকারও একই উদ্যোগ নিচ্ছে। এতে আমি মর্মাহত। আসলে আমরা নীতির দুষ্টচক্রের মধ্যে পড়েছি। অন্তত নিত্যপণ্যের সরবরাহ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে এটা ভাঙতে হবে। নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারকে ডিজিটালাইজড সমন্বিত খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে। তার জন্য হয়তো তিন থেকে পাঁচ বছর সময় লাগতে পারে।’

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন বলেন, ‘আমাদের নীতিগুলো ধনিক শ্রেণীকে সুবিধা দেয়ার জন্য হয়েছে। ভোক্তা বা সাধারণ মানুষকে সুবিধা দেয়ার জন্য এসব নীতি গ্রহণ করা হয়নি। বিগত দেড় দশকে দেশে উল্লেখযোগ্য কোনো বিনিয়োগ হয়নি। আমার মনে হয়, করজাল বাড়ানোর চেয়ে কর ন্যায্যতা ও কর সমতা তৈরি করা দরকার।’

আসন্ন রমজানে নিত্যপণ্যের কোনো সংকট হবে না জানিয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘এস আলম গ্রুপ ভোগ্যপণ্য আমদানিতে বড় প্রতিষ্ঠান হয়ে উঠেছিল। তাদের অনুপস্থিতিতে অংশীজনদের নিয়ে ব্যবস্থাপনা করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এতে বড় কোনো বিপত্তি এখনো হয়নি। আশা করি রমজানে কোনো সমস্যা হবে না। আমি নিশ্চিত করতে চাই, বাজারে কোনো পণ্যের সংকট নেই।’

দেশের ভোগ্যপণ্য ব্যবসায়ীদের জন্য পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠনের বিষয়েও ভাবা হচ্ছে বলে জানান শেখ বশিরউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি অর্থ উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করেছি। পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠন হলে এ খাতের ব্যবসায়ীরা সহজে ঋণ পাবেন। তাতে পণ্য আমদানি প্রক্রিয়া আরো সহজ হবে।’

নিজ মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা বিভিন্ন সংস্থার সংস্কার নিয়েও কথা বলেন শেখ বশিরউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘আমরা প্রতিযোগিতা কমিশনকে পুরোপুরি স্বাধীন করে দিতে চাই, যাতে বাজারে প্রতিযোগিতাবিরোধী কোনো কর্মকাণ্ড না ঘটে। মন্ত্রণালয়ের সেখানে কোনো হস্তক্ষেপ যেন না থাকে, সেদিকে এগোতে চাই। এজন্য প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারম্যানকে প্রয়োজনীয় আইন সংশোধনের বিষয়ে প্রস্তাব দিতে বলেছি।’

চোরতন্ত্রের জন্য শেখ হাসিনার নামে পিএইচডি ডিগ্রি চালু করা উচিত জানিয়ে শেখ বশিরউদ্দিন বলেন, ‘আমার মনে হয়, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে একটা পিএইচডি ডিগ্রি দেয়া দরকার। কারণ বায়তুল মোকাররমের খতিবের যদি পালিয়ে যাওয়া লাগে, তাহলে বুঝতে হবে কী পরিমাণ ধ্বংস করা হয়েছে সব খাত। হেন কোনো প্রতিষ্ঠান ছিল না, যা ধ্বংস করা হয়নি। সব অপরাধীর মধ্যে একটা জোট তৈরি হয়েছিল। গত ১৫ বছরে টিসিবিকে ধ্বংস করা হয়েছে। ১২ হাজার কোটি টাকার অপারেশন (পণ্য বিক্রয় কার্যক্রম) পরিচালনা করেন মাত্র ১৪২ জন। অল্প কিছু লোক করপোরেশনটির সঙ্গে ব্যবসা করেন। আমি ব্যবসায়ীদের অনুরোধ করব, আপনারা টিসিবির সঙ্গে ব্যবসা করুন।’

সারা দেশে টিসিবির কার্ড বিতরণেও ভয়াবহ দুর্নীতি হয়েছে বলে জানান শেখ বশিরউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘টিসিবি থেকে এক কোটি মানুষের জন্য পরিবার কার্ড চালু করা হয়েছিল। কিন্তু সাধারণ কিছু তথ্য-উপাত্ত চেক করার পর পরিবার কার্ডের সংখ্যা ৫৭ লাখে নেমে আসে। আরেকবার চেক করলে সেটি আরো ২৫ লাখ কমে যাবে। একই বাড়িতে একাধিক কার্ড গেছে। যারা দালানবাড়িতে থাকেন, তাদের হাতেও কার্ড আছে। এগুলো সংশোধন করা হবে।’

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘শেখ হাসিনার শাসনামলে মূল্যস্ফীতি, জিডিপি (মোট দেশজ উৎপাদন), ব্যাংক ঋণের সুদের হার ও ডলারের বিনিময় হার কৃত্রিমভাবে ধরে রাখা হয়েছিল। এসব কর্মকাণ্ডের সামষ্টিক প্রভাব বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর পড়েছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘ধান সংগ্রহে সরকারি সংগ্রহটা সীমিত করতে চাই। সরকারি সংগ্রহটা আমদানিনির্ভর হওয়া উচিত। তাহলে স্থানীয় বাজারে সরবরাহ বাড়বে।’

সুপারশপ স্বপ্নকে খোলা তেল বিক্রির অনুমোদন দেয়া হয়েছে জানিয়ে শেখ বশিরউদ্দিন বলেন, ‘খোলা তেল বিক্রির জন্য সুপারশপ স্বপ্নের পক্ষ থেকে আবেদন জানানো হয়েছিল। আমরা সে অনুমোদন দিয়েছি। এক মাস ধরে আমার পরিবার বাজার থেকে খোলা সয়াবিন তেল কিনে খাচ্ছে। আমার মনে হয়, খোলা ও বোতলজাত সয়াবিনের কোয়ালিটি (মান) একই।’

অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রফতানি) (সচিবের রুটিন দায়িত্ব) মো. আবদুর রহিম খান। জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমও অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।

কনক্লেভে প্যানেল আলোচনায় প্রবিধান ও সরকারি সংস্থার ওপর কথা বলেন বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারম্যান এএইচএম আহসান, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান (সচিব) ড. মইনুল খান, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলীম আখতার খান ও ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ ফয়সল আজাদ। আর পণ্য আমদানি, সরবরাহ ও ব্যবসা বিষয়ে কথা বলেন সিটি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হাসান এবং টি কে গ্রুপের পরিচালক মোহাম্মাদ মুস্তাফা হায়দার। অভ্যন্তরীণ অর্থায়ন ও বাণিজ্য বিষয়ে কথা বলেন মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও সৈয়দ মাহবুবুর রহমান এবং ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ। খুচরা বাজার নিয়ে কথা বলেন এসিআই লজিস্টিকস লিমিটেডের (স্বপ্ন) ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাব্বির হাসান নাসির ও কারওয়ান বাজার ২ নং কাঁচামাল আড়ত ব্যবসায়ী বহুমুখী সমবায় সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফরিদ আহমেদ রাসেল। প্যানেল আলোচনার আরেকটি বিষয় ছিল ভোক্তা অধিকার। এ বিষয়ে কথা বলেন কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এসএম নাজের হোসাইন ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা। এছাড়া মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে দেশের বিভিন্ন খুচরা ও পাইকারি বাজারের চাল, ডাল, তেল ও মসলা ব্যবসায়ী ও ব্যবসায়ী সমিতির নেতারা বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেন, ‘যখন অল্পসংখ্যক ব্যবসায়ী ব্যবসা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন, তখন উচিত ব্যবসার সুযোগ-সুবিধা উন্মুক্ত করে দেয়া। বাজার যত উন্মুক্ত হবে প্রতিযোগিতা তত বাড়বে। তার পরও কিছু সমস্যা থাকবে। সেগুলো চিহ্নিত করে সমাধান করতে হবে। আমরা সবসময় অন্যের ওপর দোষ চাপিয়ে দিই। সেই সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আমাদের নিজেদের যার যার কাজ ঠিকভাবে সম্পন্ন করতে হবে। একই সঙ্গে আইনের প্রয়োগে সচেষ্ট হওয়ার হওয়ার বিকল্প নেই।’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘বাংলাদেশে একসময় গবেষণা কিংবা সরকারি নীতিমালা আলোচনার ক্ষেত্রে কৃষি খাদ্য গুরুত্ব পেত। আশির দশকের পর থেকে কৃষি কোনো ক্ষেত্রে গুরুত্ব পাচ্ছে না। আবার বাস্তবে মুক্তবাজার অর্থনীতি একটি কল্পকথায় রূপ নিয়েছে। বাজারে এর কোনো অস্তিত্ব নেই। যেটার অস্তিত্ব আছে, সেটা অলিগোপলি। বেশির ভাগ বাজার ও পণ্য উৎপাদন কতিপয় গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে।’

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রফতানি) (সচিবের রুটিন দায়িত্ব) মো. আবদুর রহিম খান বলেন, ‘বাজার সহনীয় রাখতে আমাদের স্থানীয় যেসব পণ্য উৎপাদন হয় তা কীভাবে আরো বাড়ানো যায় এবং মানসম্মত উৎপাদন নিশ্চিত করা যায় সেদিকে নজর দিতে হবে। প্রয়োজনে আমদানিতে ভর্তুকি এবং আমদানির ক্ষেত্রে আরো কিছু নিত্যসহায়তা দেয়া যেতে পারে।’

অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচনায় অংশ নিয়ে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারম্যান এএইচএম আহসান বলেন, ‘সিন্ডিকেট নিয়ে অনেক কথা হয়। কিন্তু আইনে সিন্ডিকেট নামে কিছু নেই। রয়েছে অলিগোপলি ও মনোপলি ইত্যাদি। এসব বিষয়ে আমরা তথ্য পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেব। যখন বাজারে অযৌক্তিক দাম বাড়ানো নিয়ে আমাদের কাছে প্রকৃত তথ্য থাকে, তখন আমরা সহজে সে বিষয়ে আইন অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে পারব।’

বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান (সচিব) ড. মইনুল খান বলেন, ‘বৈশ্বিক বাজারে ৮০০ থেকে ১২৫০ ডলার পর্যন্ত তেলের দাম বেড়েছিল। কিন্তু সে অনুযায়ী তেলের দাম বাড়েনি বাংলাদেশে। এখন দাম ভোক্তাদের নাগালের মধ্যেই রয়েছে। ব্যবসায়ীরা রমজানে তেলের দাম বাড়বে না বলেও আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন।’

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলীম আখতার খান বলেন, ‘ভোক্তা অধিকার আইনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত আছে স্থানীয় জেলা ও উপজেলা প্রশাসন। কোল্ড স্টোরেজে কোনো পণ্য রাখার নির্দিষ্ট সময় আছে। ওই সময়ের পরও যদি পণ্যগুলো বাজারে ছাড়া না হয় এবং তার দাম বেড়ে যায়, তাহলে সেখানে স্থানীয় প্রশাসনের দায় আছে। ভোক্তা অধিকার আইনের সঙ্গে যুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো যদি সমন্বিতভাবে কাজ করে, তাহলে ভোক্তাদের অধিকার অনেক বেশি পরিমাণে সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে।’

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ ফয়সল আজাদ মনে করেন, ভোক্তা ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে টিসিবির দূরত্ব রয়েছে। আবার টিসিবির প্রচারণায়ও ঘাটতি রয়েছে। সংস্থাটির সরবরাহ লাইন দীর্ঘ হওয়ার কারণে কার্যক্রম পরিচালনায় কিছু চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়।

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা বলছেন, সুদের হার বেড়ে যাওয়ায় তাদের পরিচালন ও উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। এজন্য তারা গভর্নরের সঙ্গে দেখা করে সুদহার সিঙ্গেল ডিজিটে (এক অংক) নামিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু আমার কথা হলো আমাদের কি সে সামর্থ্য আছে। আমরা কি সিঙ্গেল ডিজিট সুদে আমানত সংগ্রহ করতে পারছি? ব্যাংকার হিসাবে আমরা গ্রাহকদের পাশে থাকতে চাই। এসএমই, কৃষির মতো খাতগুলোয়ও বিনিয়োগ বাড়াতে চাই। তবে শঙ্কার কথা হচ্ছে, আগামীতে সরকার ব্যাংক খাত থেকে আরো বেশি পরিমাণ ঋণ নেবে। এমনকি সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্যও। এ অবস্থায় ব্যাংকের পক্ষে ব্যবসায়ীদের ঋণ দেয়া আরো বেশি কঠিন হয়ে যেতে পারে।’

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ বলেন, ‘মধ্যস্বত্বভোগী শব্দটি শুনলে আমরা গালি মনে করি। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, এ মধ্যস্বত্বভোগীরা হলেন আমাদের সাপ্লাই চেইনের সার্ভিস প্রোভাইডার। তারা না থাকলে আমাদের ঘরে খাবার পৌঁছত না। খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির জন্য মধ্যস্বত্বভোগীরা মূল আসামি নয়। বরং মূল অপরাধী হলো চাঁদাবাজরা, যারা প্রতিটি ধাপে পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখছে।’

সিটি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হাসান বলেন, ‘ট্যারিফ কমিশন বাংলাদেশ ব্যাংক ঘোষিত ডলারের রেটে দাম নির্ধারণ করে। যখন আমরা ব্যাংকের সঙ্গে সেটল করতে যাই, তখন এ রেটে বিক্রি করতে পারি না। এর বাইরে উদ্বৃত্ত খরচ করতে হয়। এ বাড়তি খরচটির প্রভাব পড়ে ভোক্তার ওপর। আমাদের অপরিহার্য পণ্য দেশে আনা এবং প্রক্রিয়াজাত করার অবকাঠামো নেই। সেজন্য আমাদের অবকাঠামোগত উন্নয়ন দরকার। তা করতে না পারলে উদ্বৃত্ত যে খরচ, সেটি সামঞ্জস্য করতে পারব না। অবকাঠামোগত উন্নয়ন করতে পারলে খরচ কিছুটা হলেও কমে আসত।’

টি কে গ্রুপের পরিচালক মোহাম্মাদ মুস্তাফা হায়দার বলেন, অত্যাবশ্যকীয় পণ্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ১৯৫৬ ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য বিপণন ও পরিবেশক নিয়োগ আদেশ, ২০১১—দুটো আইনেই সরকারের দাম নির্ধারণ করে দেয়ার অধিকার রয়েছে। তবে শুধু প্রয়োজন হলে বলা হয়েছে। তার মানে সরকার দাম নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ কম চেষ্টা করার কথা রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে চাহিদা ও সরবরাহ ব্যবস্থাপনার জন্য সরকারের একটা কৌশলগত মজুদ থাকে। স্থানীয় বাজারের দাম আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য না থাকলে সরকার মজুদকৃত পণ্য বাজারে ছেড়ে দাম নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে। কিন্তু কৃষি ও খাদ্য মন্ত্রণালয়ের মধ্যে কিছু আন্তঃবিভাগীয় স্বার্থের দ্বন্দ্ব আছে। এ বছর সরকার প্রতি কেজি চাল ৪৭ টাকায় কিনবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। এ চালের অন্যান্য খরচ বাদ দিয়ে ধানের দামে গেলে তা ৩০ টাকার নিচে আসতে হবে।

এসিআই লজিস্টিকস লিমিটেডের (স্বপ্ন) ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাব্বির হাসান নাসির বলেন, ‘আমাদের ৫ থেকে এখন সাড়ে ৭ শতাংশ ভ্যাট দিতে হবে। করহার বাড়ালে মূল্যস্ফীতি আরো বাড়বে। মূল্যস্ফীতির কারণে ৮ শতাংশ মধ্যবিত্ত খাদ্যনিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে। ৫ বছরের কম ৩৬ শতাংশ শিশু পুষ্টিহীনতায় ভুগছে। মূল্যস্ফীতির সামাজিক প্রভাব রয়েছে।’

কারওয়ান বাজার ২ নং কাঁচামাল আড়ত ব্যবসায়ী বহুমুখী সমবায় সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফরিদ আহমেদ রাসেল বলেন, ‘কোনো কিছুর দাম বেড়ে গেলে সরকার আমাদের ওপর চাপ দেয়, কেন এত দাম বাড়ল। বাজার প্রতিনিধিরা কী করছেন। আমরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলাপ করি। চাইলেও স্টোরেজ মালিকরা মূল্য রসিদ দেয় না। এর ফলে বাজারের চাহিদা অনুযায়ী আমাদের বিক্রি করতে হয়। যেকোনো পণ্যের মূল্য রসিদ রাখা নীতিমালার মধ্যে নিয়ে এলে পণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে আসবে।’

জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, ‘এত রক্ত এবং জীবনের বিনিময়ে উপদেষ্টারা সৌভাগ্যক্রমে আজকে সরকারে এসেছেন। এক বছরের বা যতটুকু সময় আছে আপনাদের হাতে, ওই সময়ে কিছু একটা করে দেখান। আমার মনে হয় ২৪-২৫ জন উপদেষ্টা আছেন। প্রত্যেকে যদি একটি কাজ করেন, যেটা জাতীয়ভাবে একটা ইতিবাচক প্রভাব তৈরি করবে। এরপর যদি আমাদের খুনি হাসিনা, তার দোসর বা অন্য কোনো এজেন্ট এসে হত্যা করে ফেলে আমাদের বিন্দুমাত্র দুঃখ হবে না। অন্তত এটুকু বলতে পারব, আমাদের ২৪ উপদেষ্টা ২৪টা কাজ করেছেন, যেটা পুরো বাংলাদেশের পরিবর্তনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা এখনো আশাবাদী। যতটা আশা করেছিলাম সে আশা আমাদের কিছুটা কমেছে। অন্তর্বর্তী সরকারে খুব ভালোমনের মানুষরা উপদেষ্টা পরিষদে রয়েছেন। এজন্য হয় তারা বাংলাদেশের সবাইকে ভালো মনে করছেন অথবা ভাবছেন সবাই ভালো হয়ে যাবে। কিন্তু এটা তো সম্ভব না। যুগের পর যুগ থেকে সবার রক্তে যে কালচার মডিফায়েড হয়েছে সেগুলো বের করা প্রয়োজন। এজন্য যে আইনের শাসন দরকার সেটি আমরা দেখছি না।’

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক সংস্কৃতি অনুযায়ী প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সদিচ্ছা ছাড়া দ্রব্যমূল্যের যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ করা সম্ভব নয় বলেও মনে করেন সারজিস আলম। তিনি বলেন, ‘ব্যবসায়ী, সুশীল সমাজ, উপদেষ্টা যতজনই থাকুক না কেন, প্রধান কয়েকটি রাজনৈতিক দলের অন্তত একজন করে মুখপাত্র এই কনক্লেভে থাকা দরকার ছিল। কারওয়ান বাজার থেকে শুরু করে দেশের সব বাজার গতানুগতিকভাবে আগের মতোই চলছে। আগের মতো চাঁদাবাজি, সিন্ডিকেট এখনো আছে। কয়েক স্তরে স্টেকহোল্ডারদের চাঁদা দেয়ার কারণে দ্রব্যমূল্য দেড় থেকে দ্বিগুণ বেড়ে যাচ্ছে। বাজার সিন্ডিকেটের কুশীলবদের বিরুদ্ধেও আমাদের আঙুল তুলতে হবে।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করতে শুধু খুচরা বিক্রেতাদের ক্ষেত্রে তদারকি করা হয়। নিজেদের দোষ ঢাকতে এবং বিভিন্ন পক্ষের ওপর দোষ দিয়ে নিজেদের দায়মুক্তি করা হয়। বিগত সরকারের আমলেও সেটি দেখেছি। বাজারের চাহিদা, উৎপাদন, অর্থবছরে কতটুকু জোগান দরকার তার তথ্য-উপাত্ত সরকারকে দিতে হবে। এজন্য একটা নির্দিষ্ট পরিকল্পনা দরকার।’

কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এসএম নাজের হোসাইন বলেন, ‘আমাদের ব্যবসায়ীদের আচার-আচরণে পরিবর্তন আনা দরকার। সরকার ৩১টি পণ্যে শুল্ক কমিয়েছে কিন্তু বাজারে এক পয়সাও কমেনি। কয়দিন আগে যখন ভ্যাট বাড়ানো হয়, সেদিন রাতেই অনেক পণ্যের দাম বেড়ে যায়। আমাদের এখানে ব্যবসায়ীদের অনুশীলনে সমস্যা। এ নিয়ে আমাদের চিন্তা করতে হবে।’

অনুষ্ঠানে অনান্যের মাঝে আরো উপস্থিত ছিলেন সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও সাবেক অর্থ সচিব মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী, ঢাকা স্কুল অব ইকোনমিকসের পরিচালক ও ইউনিভার্সিটি অব গ্লোবাল ভিলেজের সাবেক উপাচার্য ড. জাহাঙ্গীর আলম খান, অ্যাডভান্স অ্যাপস বাংলাদেশ লিমিটেডের চেয়ারম্যান তপন কুমার নাথ, জাতীয় নাগরিক কমিটির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও কূটনীতিবিষয়ক সম্পাদক আলাউদ্দীন মোহাম্মদ, ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের এমডি (ভারপ্রাপ্ত) শেখ আকতার উদ্দিন আহমেদ, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও কান্ট্রি হেড অব করপোরেট এনামুল হক, বাংলাদেশ কম্পিটিশন কমিশনের সদস্য ড. মো. আখতারুজ্জামান তালুকদার, ওয়াজিদ হাসান শাহ, আফরোজা বিলকিস, কাজী ফার্মস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী জাহেদুল হাসান, পরিচালক কাজী জাহিন হাসান, বাংলাদেশ মোবাইল ফোন কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ, সিটিজেনস ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মোহাম্মদ মাসুম, বাংলাদেশ অটো রাইস মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি একেএম খোরশেদ আলম খান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শাহজাহান মিয়া, কাজী মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক, ড. নাজনীন কাউসার চৌধুরী, যুগ্ম সচিব শেখ মতিয়ার রহমান, মোহাম্মদ দাউদুল ইসলাম, শিবির বিচিত্র বড়ুয়া, নোয়াপাড়া গ্রুপের চেয়ারম্যান ফয়জুর রহমান বকুল, আকিজবশির গ্রুপের সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার মো, জাহাঙ্গির আলম, বাংলাদেশ অর্গানিক প্রডাক্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিওপিএমএ) ভাইস প্রেসিডেন্ট অভি চৌধুরী, বাংলাদেশ কাঁচামাল আড়ত মালিক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ ইমরান, বেঙ্গল মিটের সিইও এএফএম আসিফ, হেড অব এক্সপোর্ট একেএম সায়াদুল হক ভুইয়া, ইউনিমার্টের সিইও গাজী মাহফুজুর রহমান, সিওও শামিম মাহমুদ, এমসিসিআই সভাপতি কামরান টি রহমান, বিসিকের সাবেক পরিচালক আবু তাহের খান, মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার কাজী মো. মহিউদ্দিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. শহিদুল জাহিদ, হকস বে অটোমোবাইলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল হক, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক মাহবুব ইসলাম, ইপিবি মহাপরিচালক বেবী রানী কর্মকার, বসুমতি ফুডস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জেডএম গোলাম নবী, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজের নির্বাহী পরিচালক সামাদ মিরালী, নর্দান ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের এডিশনাল ডিরেক্টর শেখ মাহবুব রহমান, কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জেনারেল সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির ভূঁইয়া, নির্বাহী সদস্য মো. শওকত আলী খান, বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিলের সভাপতি মো. আবদুর রহিম, বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিলের অর্গানাইজিং সেক্রেটারি মো. আবদুল আজিজ, বাংলাদেশ ইলেকট্রিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক ডিরেক্টর মো. ইসমাইল চৌধুরী বাদল, যশোর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি মো. মিজানুর রহমান, নওগাঁ জেলা চালকল মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মো. ফরহাদ হোসেন, মেসার্স আল হেরা অটোমেটিক রাইস মিলের পরিচালক মো. জাহিদুজ্জামান, নিউ কাফেলা কোল্ড স্টোরেজের ডিরেক্টর শাহাকুল ইসলাম সবুজ, দিশারী ফুডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম রহমান সাগর, এস রহমান অ্যাসোসিয়েট কোম্পানির কনসালট্যান্ট আজহারুল ইসলাম, শ্যামবাজার কৃষিপণ্য আড়ত মালিক সমিতির সভাপতি আলহাজ গাজী আবদুল মতিন, যাত্রাবাড়ী মৎস্য ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সেক্রেটারি সৈয়দ মো. সোহেল, ঢাকা সোনার বাংলা আড়তের উপদেষ্টা মো. গুলজার হোসাইন, গুলশান ২ নং মার্কেটের মো. আলী, বাংলাদেশ ডাল অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি মো. বদরুদ্দিন, বাংলাদেশ ডাল অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সেলিম উদ্দিন, টাইগার ট্রেডিংয়ের প্রোপ্রাইটর মো. সাইফুর রহমান, প্রিন্স গ্রুপের জেনারেল ম্যানেজার সাইয়েদ আবদুল্লাহ আল মামুন, প্রিন্স গ্রুপের উপদেষ্টা মো. হেলাল উদ্দিন খান, জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সদস্য মো. মঈনুল ইসলাম খান, জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের ইফতেখার হোসাইন, লংকাবাংলা ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের সিইও ইফতেখার আলম, বাংলাদেশ ট্রাক কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতির জয়েন্ট জেনারেল সেক্রেটারি হোসাইন কবীর, বাংলাদেশ লবণ মিল মালিক সমিতির সিইও মো. মিজানুর রহমান, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের মো. আখতার হোসাইন, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের মো. করিম খান, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের মো. দেলোয়ার হোসাইন, বশির ট্রেডার্সের মো. বশিরউদ্দিন, কারওয়ান বাজারের মো. দেলোয়ার, বাংলাদেশ চিনি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. আবুল হাশেম, বাংলাদেশ পাইকারি গরম মসলা সমিতির সভাপতি মো. এনায়েতুল্লাহ, অটো রাইস মিল কুষ্টিয়ার সভাপতি মো. ওমর ফারুক, অটো রাইস মিল কুষ্টিয়ার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আরশাদ আলী, দেশ এগ্রোর আব্দুল খালেক, ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির আহ্বায়ক সাইফুল আলম, বাংলাদেশ বাস ট্রাক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শুভঙ্কর ঘোষ প্রমুখ।

বিনিয়োগবার্তা/এসএএম//


Comment As:

Comment (0)