PaK-IND

ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে গোলাগুলি

ডেস্ক রিপোর্ট: ভারত ও পাকিস্তানের সীমান্তে সেনাবাহিনীর মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর দাবি, নিয়ন্ত্রণ রেখা বা লাইন অব কন্ট্রোলে (এলওসি) পাকিস্তানি সেনারা গুলি চালানোর পর তারা ‘পাল্টা জবাব’ দিয়েছে। তবে এ ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

সামরিক সূত্রের বরাতে এনডিটিভি জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) রাতে জম্মু ও কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর পাকিস্তানি সেনারা কিছু ভারতীয় চেক পোস্ট লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এর পরপরই পাল্টা গুলি চালায় ভারতীয় সেনাবাহিনী। তাদের দাবি, ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে ‘উপযুক্ত জবাব’ দিয়েছে।

জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগামে পর্যটকদের ওপর হামলার জেরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে চলমান টানাপোড়েনের মধ্যেই এই গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটল। তবে এ নিয়ে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এখনো কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

কাশ্মীরে জঙ্গি হামলায় ২৬ জন নিহতের ঘটনায় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে ভারত। জবাবে নয়াদিল্লির বিরুদ্ধেও নানা পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছে ইসলামাবাদ।

ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর পাল্টাপাল্টি উদ্যোগ পরিস্থিতিকে ক্রমেই উত্তপ্ত করে তুলছে। উভয় দেশের মধ্যে পারস্পরিক দোষারোপ, আকাশসীমা বন্ধ, কূটনৈতিক সম্পর্ক সীমিত এবং বাণিজ্য ও সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিতের ঘটনা দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতিকে উত্তপ্ত করে তুলছে।

বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, ভারত-পাকিস্তানের এ নতুন উত্তেজনা সংঘাতে রূপ নিলে তা শুধু দুদেশের জন্যই নয়, গোটা দক্ষিণ এশিয়ার জন্য অস্থিরতা ডেকে আনতে পারে। কূটনৈতিক যোগাযোগহীনতা পরিস্থিতিকে আরো জটিল করে তুলছে বলে তারা সতর্ক করছেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, এ সংকট ২০১৯ সালের ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত সংঘাতকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে।

এদিকে জাতিসংঘ ভারত ও পাকিস্তানকে ‘সর্বোচ্চ ধৈর্য’ ধরার আহ্বান জানিয়েছে। ভারত শাসিত কাশ্মীরে ভয়াবহ হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানকে ‘সর্বোচ্চ সংযম’ প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ।

জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিক বৃহস্পতিবার বলেছেন, সংস্থাটির মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে গত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভারত ও পাকিস্তান সরকারের ‘সরাসরি কোনো যোগাযোগ হয়নি’। তবে তিনি ‘পরিস্থিতি খুব নিবিড়ভাবে এবং অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছেন।

তিনি উভয় সরকারকে ‘সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শন এবং পরিস্থিতি যাতে আরো খারাপের দিকে না যায় তা নিশ্চিত করতে’ উৎসাহিত করেছেন।

জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র বলেন, আমাদের বিশ্বাস, পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে যেকোনো সমস্যা অর্থপূর্ণ পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করা যেতে পারে এবং তা-ই করা উচিত।

এর আগে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে পুলওয়ামায় সন্ত্রাসী হামলার পর পাকিস্তানের ভূখণ্ডে বিমান হামলা চালিয়েছিল ভারত। এর জবাবে ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করে এক পাইলটকে গ্রেফতার করে পাকিস্তান। পরে তাকে ফেরত দেয়া হলে উত্তেজনা কিছুটা কমে। কিন্তু এবারের পরিস্থিতি ভিন্ন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

বিনিয়োগবার্তা/এসএএম//


Comment As:

Comment (0)