1000011471

সৌদি আরবসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ঈদুল আজহা উদযাপিত 

ডেস্ক রিপোর্ট: গতকাল হজের আনুষ্ঠানিকতায় ছিল জামারাত আল-আকাবায় শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ। শুক্রবার সকালে ১৬ লাখের বেশি হাজি এ আনুষ্ঠানিকতা পালন করেন। একইসঙ্গে সৌদি আরবে শুরু হয় ঈদুল আজহা উদযাপন। পাথর মারার পর হাজিরা কোরবানি করেছেন। সোমবার পর্যন্ত হাজিরা মিনায় অবস্থান করবেন।

সিরিয়ায় বাশার আল আসাদের পতনের পর প্রথম ঈদুল আজহা পালন করছে দেশটির মানুষ। গতকাল রাজধানী দামাস্কাসের বিখ্যাত উমাইয়া মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করেন কয়েক হাজার মানুষ। এতে দেশের নিরাপত্তা ও শান্তির জন্য প্রার্থনা করা হয়। অনেকে তাদের আত্মীয়-স্বজনের কবর জিয়ারত করেছে।

এদিকে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান ঈদুল আজহা উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানান। বার্তায় তিনি গাজাবাসীকেও স্মরণ করেন। তিনি গতকাল ফোনে সৌদি প্রিন্স বিন সালমানের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। একই সঙ্গে হজ সফলভাবে আয়োজনের জন্য সালমানকে অভিনন্দন জানিয়েছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট।

আরব আমিরাত ও উপসাগরীয় অঞ্চলের অন্য দেশগুলোয়ও গতকাল ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়েছে। ওমান, বাহরাইন, কুয়েত, কাতার, অস্ট্রেলিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় গতকাল ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়েছে। এদিকে পাকিস্তান, মরক্কো, মৌরিতানিয়া, ব্রুনেই, মালয়েশিয়া, পাকিস্তান ও ভারতে আজ ঈদুল আজহা পালিত হবে।

ঈদের আগের দিন বৃহস্পতিবার রাতে লেবাননের বিভিন্ন স্থাপনায় বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। হিজবুল্লাহর ড্রোন উৎপাদন কারখানা ধ্বংসের অজুহাতে এ হামলা চালানো হয়েছে।

এদিকে গতকাল রাশিয়া ও বিশ্বের সব মুসলমানকে ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানান রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

গাজার মানুষ আজ নরকের চেয়েও খারাপ অবস্থায় আছেন—তিনদিন আগে বিবিসিকে এমন মন্তব্য করেছেন রেড ক্রসের প্রধান। গতকাল মধ্যপ্রাচ্যে ঈদুল আজহা উদযাপন শুরু হলেও তাতে শরিক হতে পারেনি গাজাবাসী। ২০ মাস ধরে ইসরায়েলি হামলায় গাজা এখন ধ্বংসস্তূপ। মাথার ওপর ছাদ তো নেই-ই, ন্যূনতম একটু খাবারের জন্য হাহাকার তাদের। অনাহার, বোমা হামলার শঙ্কা আর বাস্তুচ্যুতি গাজাবাসীর জীবন থেকে ঈদের আনন্দকে হাওয়া করে দিয়েছে।

গাজাবাসী সকালে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন ধ্বংস হয়ে যাওয়া বাড়ি কিংবা মসজিদের পাশে। কেউ ঈদ করছেন আশ্রয় শিবিরের কঠিন পরিবেশে।

ঈদুল আজহার অন্যতম পালনীয় রীতি পশু কোরবানি। ত্যাগ আর উৎসর্গের এ উপলক্ষে কোরবানি হওয়া পশুর মাংস আত্মীয় ও দরিদ্রদের মধ্যে ভাগ করে দেয়া হয়। কিন্তু গাজায় কোরবানি করার মতো পশুই আর অবশিষ্ট নেই বললেই চলে। সেখানে বাইরে থেকে খাদ্য হিসেবে মাংসের প্রবেশ ঘটেনি গত তিন মাসে।

সামান্য কিছু পশু ছিল গাজার দক্ষিণ উপকূলের আল-মারওয়াসি অস্থায়ী শিবিরের কাছে। কিন্তু সেগুলো কেনার সামর্থ্য বেশির ভাগ মানুষের নেই। শিশুরা জড়ো হয়েছিল এসব মেষ, ছাগল, গরু ও উট দেখতে। এ শিশুরা বেশির ভাগই ঈদের দিনও পেট পুরে খেতে পায়নি।

অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে আবদেল রহমান মাদি বলেন, ‘এক টুকরো রুটিও কিনতে পারিনি। মাংস, সবজি তো দূরের কথা। সবকিছুর দাম আসমান ছুঁয়েছে।’

খান ইউনিসের বাজারে শিশুদের জন্য ছিল কিছু খেলনা আর পুরনো জামাকাপড়। কিন্তু অর্থের অভাবে বেশির ভাগ ক্রেতাই ফিরেছেন খালি হাতে। অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে হালা আবু নেকিরা বলেন, ‘আগে ঈদ ছিল শিশুদের জন্য উৎসবের। এখন এ অবরোধের মধ্যে আটা, কাপড় কিংবা আনন্দ কোনোটাই নেই। আমরা শিশুদের জন্য একটু আটা খুঁজছি। ন্যায্য দামে কোথাও আটা পাওয়া যাচ্ছে না।’

আফ্রিকার দেশ মরক্কোতে এবার ঈদুল আজহা এসেছে একটু ভিন্ন চেহারায়। দেশটিতে আজ উদযাপিত হচ্ছে এ পবিত্র উৎসব। ইতিহাসে প্রথমবারের মতো পশু কোরবানি না করে মরক্কোর মানুষ ঈদুল আজহা পালন করছেন। খরা, আর্থিক সংকট, কৃষিকাজে দরকারি গবাদিপশুর সংকটে দেশটির সরকার পশু কোরবানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। গত সাত বছর দেশটিতে খরা চলছে। এ সময়কালে গবাদিপশুর সংখ্যা কমেছে ৩৮ শতাংশ।

বিনিয়োগবার্তা/এসএএম/


Comment As:

Comment (0)