সাবেক ভূমিমন্ত্রীর সম্পদ জব্দ করল যুক্তরাজ্য
ডেস্ক রিপোর্ট: বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের আইনি অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগের নেতা সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর যুক্তরাজ্যে থাকা সম্পত্তি জব্দ করেছে দেশটির জাতীয় অপরাধ সংস্থা (এনসিএ)। বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ সাইফুজ্জামানের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগ তদন্ত করছে।
আল জাজিরার তদন্তকারী ইউনিট (আই-ইউনিট) এসব তথ্য প্রকাশ করে। এক বিবৃতিতে আই-ইউনিট জানায়, যুক্তরাজ্যের এনসিএ’র এক মুখপাত্র জব্দের আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ওই মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত করতে পারি- এনসিএ চলমান বেসামরিক তদন্তের অংশ হিসেবে বেশ কয়েকটি সম্পত্তির বিরুদ্ধে জব্দের আদেশ পেয়েছে।’ পুলিশ সংস্থা এনসিএকে প্রায়ই ‘ব্রিটেনের এফবিআই’ বলা হয়।
সম্পত্তি জব্দের অর্থ হলো সাবেক এ ভূমিমন্ত্রী যুক্তরাজ্যে থাকা তার ওই সম্পদ বিক্রি করতে পারবেন না। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের লন্ডন সফরের সময় সাইফুজ্জামানের এ সম্পদ জব্দের খবর এলো।
গত বছর আল জাজিরা প্রকাশ করে, যুক্তরাজ্যে ৩৫০টিরও বেশি সম্পত্তির মালিক ৫৬ বছর বয়সী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। এনসিএ তার সম্পদের ঠিক কতটুকু জব্দ করেছে, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে আই-ইউনিট জানতে পেরেছে, জব্দ সম্পদের তালিকায় আছে লন্ডনের সেন্ট জনস ওঠে সাইফুজ্জামানের বিলাসবহুল বাড়িটিও। ১ কোটি ৪০ লাখ ৮০ হাজার ডলারে কেনা বাড়িটির তথ্য ও চিত্রগ্রহণ করেছিলেন আল জাজিরার আই-ইউনিটের গোপন সাংবাদিক।
শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী থাকাকালে সাইফুজ্জামান যে সম্পদ অর্জন করেছিলেন, তা নিয়ে তদন্ত করতে গিয়ে ওই বাড়িতে সাংবাদিকরা তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় সাইফুজ্জামান সাংবাদিকদের সঙ্গে তার বিশ্বব্যাপী সম্পত্তির বৃত্তান্ত বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি ব্যয়বহুল স্যুট ও ডিজাইনার ‘বেবি ক্রোক’ চামড়ার জুতা সম্পর্কে তার আগ্রহের কথা জানান।
তিনি ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথাও বলেন। আল জাজিরার সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমি আসলে তার ছেলের মতো। তিনি (শেখ হাসিনা) জানেন যে, এখানে আমার একটি ব্যবসা আছে।’
আই-ইউনিটের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের মুদ্রা আইন অনুযায়ী একজন নাগরিক দেশ থেকে বিদেশে বছরে ১২ হাজার ডলারের বেশি পাঠাতে পারবেন না। তবে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের প্রভাবশালী পরিবারের সন্তান সাইফুজ্জামান এ বার্ষিক সীমা অতিক্রম করে সম্পদের সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছিলেন।
তদন্তে জানা গেছে, লন্ডন, দুবাই ও নিউইয়র্কে আবাসন খাতে তিনি ৫০ কোটি ডলারেরও বেশি ব্যয় করেছেন। কিন্তু বাংলাদেশের আয়কর রিটার্নে তার এসব বিদেশি সম্পদের কোনো উল্লেখ নেই। এ নিয়ে গত অক্টোবরে প্রতিবেদন প্রকাশ করে আল জাজিরা।
বিনিয়োগবার্তা/ডিএফই//