বিজিএমইএ ২৩

পোশাক শিল্পে কাস্টমস বন্ড পরিষেবা সহজ করার আহ্বান বিজিএমইএ’র

নিজস্ব প্রতিবেদক: পোশাক শিল্পের জন্য কাস্টমস বন্ড পরিষেবা সহজ করার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)।

কাস্টমস বন্ড কমিশনার ঢাকা উত্তরকে এ আহ্বান জানিয়েছে বিজিএমইএ। একই সঙ্গে নীতি সহায়তা প্রদানের আহ্বানও জানিয়েছে সংগঠনটি।

মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিজিএমইএ’র পরিচালক ফয়সাল সামাদের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট ঢাকা উত্তরের কমিশনার মিয়া মো. আবু ওবায়দার সঙ্গে তার কার্যালয়ে দেখা করে এ অনুরোধ জানান। কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট ঢাকা উত্তরের অতিরিক্ত কমিশনার এদিপ বিল্লা এবং ডেপুটি কমিশনার এইচ এম আহসানুল কবীর উপস্থিত ছিলেন।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় বিজিএমইএ।

এর আগে গত ৮ সেপ্টেম্বর ফয়সাল সামাদের নেতৃত্বে বিজিএমইএ’র একটি প্রতিনিধিদল একই উদ্দেশ্য নিয়ে কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট ঢাকা দক্ষিণের কমিশনার মোহাম্মদ হাসমত আলীর সঙ্গে তার কার্যালয়ে দেখা করেন। সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখেই আজ ঢাকা উত্তরের কমিশনারে সঙ্গে তারা সাক্ষাৎ করেন।

সাক্ষাতকালে বিজিএমইএ’র পরিচালক ফয়সাল সামাদ একটি চিঠি হস্তান্তর করেন। বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান স্বাক্ষরিত এই চিঠিতে ঢাকা (দক্ষিণ) ও ঢাকা (উত্তর) বন্ড কমিশনারেটের কমিশনারদের কাছে পোশাক শিল্পের জন্য কাস্টমস বন্ড প্রক্রিয়া সহজীকরণ ও নীতি সহায়তা প্রদানের অনুরোধ জানানো হয়েছে।

আলোচনার মূল উদ্দেশ্য ছিল পোশাক শিল্পের প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতা ধরে রাখা, যার জন্য কাস্টমস প্রক্রিয়াগুলো দ্রুত, সহজ এবং হয়রানিমুক্ত করার বিষয়ে জোর দেওয়া হয়।

বিজিএমইএ’র পরিচালক ফয়সাল সামাদ কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট ঢাকা উত্তরের কাছে বেশকিছু নির্দিষ্ট অনুরোধ জানান। এর মধ্যে রয়েছে-

   ১ পোশাক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক নিরীক্ষা কার্যক্রম সহজ করা।
   ২ ২০২২ সালের ৩০ জুনের মধ্যে সংশোধিত ইউডি বহির্ভূত ব্যাক টু ব্যাক এল/সি-গুলোর দ্রুত নিষ্পত্তি।
   ৩ সিবিএমএস সফটওয়্যারের মাধ্যমে বন্ড রেজিস্টার সংরক্ষণ সহজ করা।
   ৪ শুধু সন্দেহের ভিত্তিতে কাটিং তদারকির শর্ত আরোপ না করা।
   ৫ বন্ড লাইসেন্সে এইচএস কোড সংযোজন প্রক্রিয়া সহজ করা।

এছাড়াও, কিছু গুরুত্বপূর্ণ নীতি সহায়তার বিষয়েও কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট ঢাকা উত্তরের কমিশনারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। যেসব বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে-

   ১ এফওসি ভিত্তিতে কাঁচামাল আমদানির প্রক্রিয়া সহজ করা।
   ২ বন্ডেড প্রতিষ্ঠান থেকে নন-বন্ডেড প্রতিষ্ঠানে (যেমন: ওয়াশিং, প্রিন্টিং) সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে ভ্যাট সংক্রান্ত হয়রানি বন্ধ করা।
   ৩ বন্ডেড প্রচ্ছন্ন রপ্তানিকারক থেকে নন-বন্ডেড প্রত্যক্ষ রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানে পণ্য ও সেবা সরবরাহ জটিলতামুক্ত রাখা।
   ৪ সাব-কন্ট্রাক্ট কার্যক্রম সহজ করা।

সভায় বিজিএমইএ প্রতিনিধিদলে উপস্থিত দুই সাধারণ সদস্য কাস্টমস বন্ড-সংক্রান্ত পরিষেবাগুলো নিয়ে তাদের প্রতিষ্ঠানগুলো যে সমস্যা মোকাবিলা করছে, সেগুলো তুলে ধরেন এবং বিষয়গুলোর সমাধান বিষয়ে পর্যালোচনা হয়।

বৈঠকে পোশাক শিল্পের স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা সমাধানের জন্য একটি জয়েন্ট ওয়ার্কিং কমিটি পুনর্গঠনের বিষয়ে অনুরোধ জানানো হয়। এই কমিটিতে সব কাস্টমস হাউজ, বন্ড কমিশনারেট, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এবং শুল্ক গোয়েন্দা দপ্তরের প্রতিনিধিরা অন্তর্ভুক্ত থাকবেন, যা সব স্টেকহোল্ডারের সমন্বয়ে কার্যকর সমাধান নিয়ে আসতে সাহায্য করবে।

কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট ঢাকা উত্তরের কমিশনার মিয়া মো. আবু ওবায়দা পোশাক শিল্পের রপ্তানি কার্যক্রম সহজ করতে এবং একটি অনুকূল ব্যবসায়িক পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেন।

তিনি উল্লেখ করেন, কাস্টমস সংক্রান্ত পরিষেবাগুলো আরও দ্রুত ও সহজ করতে এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তিনি বিজিএমইএ নেতাদের আশ্বস্ত করেন, কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট ঢাকা উত্তরের এবং বিজিএমইএ’র মধ্যে পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে যেকোনো সমস্যা দ্রুত সমাধান করা হবে। রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সার্বিক সহযোগিতা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি জানান, কার্যক্রম সহজীকরণের জন্য তারা সর্বদা সচেষ্ট থাকবেন।

বিবা/শামীম//


Comment As:

Comment (0)