ফ্রান্স থেকে ব্যান্ডউইথ কিনছে বাংলাদেশ
প্রতিবেদক, বিনিয়োগবার্তা, ঢাকা: সাবমেরিন কেব্ল আজ মঙ্গলবার থেকে আগামী তিন দিন বন্ধ থাকার ফলে দেশে ২৩০ জিবিপিএস (গিগা বিট প্রতি সেকেন্ড) ইন্টারনেট ব্যান্ডউইটথের যে ঘাটতি সৃষ্টি হবে, তা মেটাতে ফ্রান্স থেকে ৪০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইটথ কিনছে বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্ল কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএল)।
আপদকালীন হিসেবে এক মাসের জন্য এ ব্যান্ডউইটথ নেওয়া হবে। এ জন্য খরচ হবে ২০ হাজার মার্কিন ডলার বা ১৬ লাখ টাকা।
তবে ফ্রান্স থেকে ব্যান্ডউইটথ আমদানির করার পরও আগামী তিন দিন দেশে কমপক্ষে ৮০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইটথের ঘাটতি থাকবে। কারণ, গত সেপ্টেম্বরে চালু হওয়া দ্বিতীয় সাবমেরিন কেব্ল (এসইএ-এমই-ডব্লিউই-৫) থেকে বর্তমানে পাওয়া যাচ্ছে ১১০ জিবিপিএসের কিছু বেশি ব্যান্ডউইটথ। যদিও উদ্বোধনের সময় দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবলের ব্যান্ডউইটথ পরিবহন-সক্ষমতা ২০০ জিবিপিএস বলা হয়েছিল।
মেরামতকাজের জন্য প্রথম সাবমেরিন কেব্ল আগামী তিন দিন বন্ধ থাকবে। দ্বিতীয় সাবমেরিন কেব্ল ও ফ্রান্স থেকে ব্যান্ডউইটথ আমদানি করে আগামী তিন দিনের চাহিদা পূরণ করা হবে। ফলে নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট প্রাপ্তিতে খুব একটা সমস্যা হবে না।
যুক্তরাষ্ট্রের কোজেন্ট নামের একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ফ্রান্স থেকে ব্যান্ডউইটথ আমদানি করবে বিএসসিসিএল। এতে প্রতি এমবিপিএস (মেগা বিট প্রতি সেকেন্ড) ব্যান্ডউইটথ আমদানিতে খরচ হবে শূন্য দশমিক ৫ ডলার বা ৪০ টাকা। আমদানি করা এই ব্যান্ডউইটথের দাম দেশীয় উৎসের ব্যান্ডউইটথের তুলনায় এমবিপিএসপ্রতি ১১ টাকা বেশি।
বর্তমানে সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে যে ব্যান্ডউইটথ বিএসসিসিএল কেনে, সেটার গড়ে দাম পড়ে ২৮ টাকা ৮০ পয়সা। বিএসসিসিএলের এমডি জানান, খুব অল্প সময়ের জন্য এই ব্যান্ডউইটথ কেনা হচ্ছে বলে দাম একটু বেশি পড়বে।
বিএসসিসিএলের হিসাব অনুযায়ী বর্তমানে দেশে ইন্টারনেট ব্যান্ডউইটথের দৈনিক চাহিদা ৪৭০ জিবিপিএস (গিগা বিট প্রতি সেকেন্ড)। এর মধ্যে দুটি সাবমেরিন কেবলের কেব্ল থেকে ২৭০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইটথ পাওয়া যায়। বাকি ২০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইটথ ভারত থেকে আইটিসি (ইন্টারন্যাশনাল টেরিস্ট্রিয়াল কেব্ল) কোম্পানির মাধ্যমে আমদানি করা হয়।
বাংলাদেশ ২০০৫ সালে প্রথম সাবমেরিন কেবলের (সাউথইস্ট এশিয়া-মিডিল ইস্ট-ওয়েস্টার্ন ইউরোপ-৪) সঙ্গে সংযুক্ত হয়। ২০০৫ সালে চালুর পর প্রথমবারের মতো এ সাবমেরিন কেব্ল সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিয়ে এর মেরামত করা হবে। বিএসসিসিএল এখন পর্যন্ত দুইবার প্রথম সাবমেরিন কেবলের মেরামতকাজের তারিখ পিছিয়েছে।
ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো (আইএসপি) বলেছে, ব্যান্ডউইটথ ঘাটতির কারণে ইন্টারনেটের গতি আগামী তিন দিন কম থাকবে। এতে সাধারণ ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের সমস্যায় পড়তে হবে। বিশেষ করে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, যাদের কর্মকাণ্ড উচ্চগতির ইন্টারনেটের ওপর নির্ভরশীল, তাদের বেশি সমস্যায় পড়তে হবে।
(এম আর / ২৪ অক্টোবর, ২০১৭)