ডিএসই-সিএসই’র অভিন্ন চাকরিবিধি চূড়ান্ত করার নির্দেশ
ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই-সিএসই) চাকরিবিধি (সার্ভিস রেগুলেশন) সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে দেশের পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। ইতিমধ্যে সার্ভিস রেগুলেশন সংশোধনের জন্য নতুন প্রস্তাবনা দিয়েছে বিএসইসির গঠিত কমিটি।
প্রস্তাবনা অনুযায়ী, ডিএসই ও সিএসইর সার্ভিস রেগুলেশন একই রকম করতে চায় কমিশন। এরই ধারাবাহিকতায় চাকরিবিধি চূড়ান্ত করে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন নভেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে বিএসইসিতে দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা যায়, সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি চিঠি ডিএসই ও সিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে উল্লেখ রয়েছে, চলতি বছরের ১৫ জুন ও ৮ জুলাই চাকরি বিধি সংক্রান্ত বিষয়ে ডিএসই ও সিএসইকে চিঠি দিয়েছে বিএসইসি। তারই প্রেক্ষিতে গত ১৭ জুন বিএসইসিতে চিঠি পাঠিয়েছে ডিএসই ও সিএসই। সেই আলোকে ডিএসই ও সিএসইকে চাকরি বিধি চূড়ান্ত করার নির্দেশ দেওয়া হলো। অভিন্ন চাকরিবিধি চূড়ান্ত করে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দুই মাসের মধ্যে কমিশনে দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হলো। উপরন্তু চাকরিবিধি সংক্রান্ত বিষয়ে গত ১৫ জুন ও ৮ জুলাই ডিএসই ও সিএসইকে প্রদান করা বিএসইসি’র চিঠি প্রত্যাহার করা হলো।
এর আগে গত ১৫ জুন বিএসইসির পাঠানো চিঠিতে ডিএসই ও সিএসইর সার্ভিস রেগুলেশন সংশোধনের বিষয়টি জানায় বিএসইসি। সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ, ১৯৬৯ এর ৬(৩) ধারা অনুযায়ী কমিটি গঠন করতে বলা হয়। গঠিত কমিটিকে বিএসইসির প্রস্তাবিত সার্ভিস রেগুলেশনে কোনো সংশোধনের প্রয়োজন আছে কিনা সে বিষয়ে প্রতিদেন দাখিল করতে বলা হয়। বিশেষ করে বিদ্যমান সার্ভিস রেগুলেশনের সঙ্গে প্রস্তাবিত সার্ভিস রেগুলেশনে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়োগ, ছাঁটাই ও পদোন্নতি সম্পর্কিত বিষয়গুলো অধিক যাচাই-বাছাই করে দেখতে বলা হয়।
ওই চিঠির জবাবে গত ১৭ জুন বিএসইসিতে চিঠি পাঠায় ডিএসই ও সিএসই।
চিঠিতে উভয় প্রতিষ্ঠানের প্রেরিত চিঠিতে চাকরি বিধি সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সময় বাড়ানোর আবেদন জানানো হয়। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৮ জুলাই সার্বিক দিক বিবেচনা করে ডিএসই ও সিএসইকে চাকরি বিধি সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগস্ট পর্যন্ত সময় দেয় বিএসইসি। তবে নির্ধারিত ওই সময়ের মধ্যে উভয় স্টক এক্সচেঞ্জ চাকরি বিধি চূড়ান্ত করতে না পারায় নভেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত পুনরায় সময় দিয়েছে বিএসইসি।
এর আগে ২০১৮ সালের ডিএসই ও সিএসইর সার্ভিস রেগুলেশন প্রণয়নের জন্য এক্সচেঞ্জস ডি-মিউচ্যুয়ালাইজেশন অ্যাক্ট, ২০১৩ এবং এক্সচেঞ্জস ডি-মিউচ্যুয়ালাইজেশন স্কিম অনুযায়ী একটি কমিটি গঠন করে বিএসইসি। ডিএসই ও সিএসইর সার্ভিস রেগুলেশনের নিয়োগ, ছাঁটাই ও পদোন্নতির বিষয়ে পরিবর্তন আনার জন্য প্রস্তাব দেয় বিএসইসির সেই কমিটি। এরই ধরাবাহিকতায় ডিএসই ও সিএসইর সার্ভিস রেগুলেশন সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
ব্যবস্থাপনা পর্যায়ের কর্মীদের সার্বিক অবস্থা পর্যালোচনার জন্য গত বছরের জুন মাসে ডিএসই একটি কমিটি গঠন করে। কমিটির প্রতিবেদনে, ডিএসইতে প্রয়োজনের তুলনায় ৭০-৮০ জন বেশি কর্মী রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। এর মধ্যে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর সংখ্যা অনেক বেশি বলে প্রতিবেদনের উঠে আসে। এছাড়া এক্সচেঞ্জের ‘সি’ লেভেলের কর্মকর্তাদের (শীর্ষ কর্মকর্তাদের) অত্যধিক বেতন-ভাতার বিষয়টিও প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়। ওই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ডিএসইর পর্ষদ ব্যয় নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নেয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২ জুন ১০ জন অধিক কর্মীকে গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের মাধ্যমে ছাঁটাই করেছে ডিএসই। ফলে ছাঁটাই আতঙ্কে দিন পার করছে ডিএসইর কর্মীরা।
এদিকে, সিএসইতে এখন পর্যন্ত ছাঁটাই প্রক্রিয়া শুরু না হলেও কর্মীদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রতিষ্ঠানটি সরাসরি ছাঁটাই না করে বিনা কারণে কর্মীদের অন্যত্র স্থানান্তর করছে। যাতে বাধ্য হয়ে কর্মীরা পদত্যাগ করেন। বিভিন্ন গ্রুপিংয়ের কারণে কাজের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বিনিয়োগবার্তা/এসএএম//