0728

স্ত্রী-সন্তান ও মাকে নিয়ে ট্রাকেই দিন কাটছে শাহজাহানের

সিলেট প্রতিনিধি: ১২ বছর ধরে ট্রাক চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন শাহজাহান। চালকের আসনের বসে সারাদিন গাড়ি চালিয়ে আসলেও রাতে ঠিকই ঘুমাতেন বাড়িতে গিয়ে। কিন্তু গত ৬ দিন ধরে পরিবার পরিজন নিয়ে শাহজাহানের দিনরাত কাটছে তার সেই ট্রাকে। ভয়াবহ বন্যায় ঘরবাড়ি তলিয়ে যাওয়ায় অসহায় হয়ে অবশেষে ট্রাকেই আশ্রয় নিতে হয়েছে শাহজাহানকে। বাড়ির সামনে সিলেট-কোম্পানীগঞ্জ মহাসড়কের পাশে ট্রাকের মধ্যেই হাঁস-মুরগিসহ বসবাস করছেন তারা।

শাহজাহান কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ রণিখাই ইউনিয়নের গৌরিনগর গ্রামের মৃত বশির মিয়ার ছেলে। তার স্ত্রী, দুই মেয়ে ও মা রয়েছেন। সোমবার দুপুরে সিলেট-কোম্পানীগঞ্জ সড়কের গৌরীনগর এলাকায় কথা হয় শাহজাহানের সঙ্গে।

শাহজাহান বলেন, পাহাড়ি ঢলের প্রবল স্রোতে ৬ দিন আগেই ঘরবাড়ি তলিয়ে যায়। অসহায় হয়ে কোথাও জায়গা না পেয়ে ট্রাকের মধ্যেই জায়গা করে নিয়েছি। বৃষ্টি থেকে বাঁচতে ট্রাকের উপরে পলিথিন দিয়ে চাল তৈরি করেছি। কোনোমতে স্ত্রী, দুই সন্তান ও মাকে নিয়ে বেঁচে আছি।

তিনি বলেন, আমি যে মালিকের ট্রাক চালাই তার বাড়ি ঢাকায়। বন্যার ঘরবাড়ি তলিয়ে যাওয়ায় সবাইকে নিয়ে ট্রাকে থাকার কথা তাকে জানাই। তিনি অনুমতি দেওয়ায় হাঁস-মুরগিসহ সবাইকে নিয়ে ট্রাকে আশ্রয় নিয়েছি। এছাড়া ট্রাকে রান্না করে খাওয়ার জন্য একটি চুলা ও গ্যাসের সিলিন্ডার পাঠিয়েছেন মালিক। এখন যা ত্রাণ পাচ্ছি তা দিয়ে কোনোমতে চলছে।  

তিনি আরো বলেন, আমাদের ঘর এখনও পানির নিচে রয়েছে। স্রোতে বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ঘরবাড়ির। আরও তিন চারদিন পর পানি কমলে ঘরে যেতে পারবো। 

শাহজাহানের ৫৫ বছর বয়সী মা সাইদা বেগম বলেন, এমন বন্যা আমার জীবনেও দেখিনি। এভাবে ছেলে সন্তান ও নাতনিদের নিয়ে রাস্তায় থাকব ভাবিনি। তিনি বলেন, প্রথম তিনদিন চিড়া-মুড়ি খেয়ে বেঁচে ছিলাম। পরে মানুষজন ত্রাণ দেওয়ায় ভাত রান্না করে খেতে পারছি। আমরা এখন নিঃস্ব। পানি কমলেও আমাদের বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

বিনিয়োগবার্তা/এসএল//


Comment As:

Comment (0)