মিহির স্যার

বাংলা নববর্ষ: সংস্কৃতি বনাম অর্থনীতির হিসাব নিকাশ

ড: মিহির কুমার রায়: এবারকার পহেলা বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৪ই এপ্রিল, ২০২৪, খৃষ্ঠাব্দ পাবে এক  ভিন্ন মাত্রা যা বিশেষত মূল্যস্ফীতির বেড়াজালে আবদ্ধ মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত সহ হতদরিদ্রদের জীবন। পহেলা বৈশাখ আমাদের একমাত্র উৎসব, যা বাঙালি সংস্কৃতিকে পরিচয় করিয়ে দেয় সবচেয়ে বেশি আঙ্গিকে সারা পৃথিবীর কাছে। তাই দিনটি একই  সঙ্গে পালিত হয় শহর ও গ্রামে, সমান মর্যাদায়, আয়োজন করা হয় বিশেষ ধরনের অনুষ্ঠান আর মেলা। কবে থেকে পহেলা  বৈশাখ উৎসব প্রথম শুরু হয় এ নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। ভারতবর্ষে মোগল আমলে বাদশারা হিজরী পঞ্জিকা অনুসারে  কৃষি পণ্যের খাজনা আদায় করা হত। কিন্তু হিজরি সন চাঁদের উপর নির্ভরশীল হওয়ায় তা কৃষি ফলনের সাথে  মিলিত না হওয়ার ফলে অসময়ে কৃষকদেরকে খাজনা পরিশোধ করতে বাধ্য করতে হত। খাজনা আদায়ে সুষ্ঠুতা প্রণয়নের লক্ষ্যে  মুঘল সম্রাট আকবর বাংলা সনের প্রবর্তন করেন যা মূলত: প্রাচীন বর্ষপঞ্জিতে সংস্কার আনার আদেশ দেন। সম্রাটের আদেশমতে রাজকীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানী ফতেহ উল্লাহ সিরাজি সৌর সন  এবং আরবি হিজরী সনের উপর ভিত্তি করে নতুন বাংলা সনের নিয়ম বিনির্মাণ করেন। ১৫৮৪ খ্রিষ্টাব্দের ১০ই মার্চ থেকে বাংলা সন গণনা শুরু হয়, তবে এই পদ্ধতি কার্যকর হয় ৫ই নভেম্বর, ১৫৫৬ সন থেকে যখন আকবর সিংহাসন আরোহণ করেন। প্রথমে এই সনের নাম ছিল ফসলি সন, পরে "বঙ্গাব্দ" বা বাংলা বর্ষ নামে পরিচিত হয়। আকবরের সময়কাল থেকেই পহেলা বৈশাখ উৎযাপন শুরু হয়। তখন প্রত্যেককে বাংলা চৈত্র মাসের শেষ দিনের মধ্যে সকল খাজনা, মাশুল ও শুল্ক পরিশোধ করতে বাধ্য থাকত। এর  পরদিন অর্থাৎ পহেলা বৈশাখে ভূমির মালিকরা নিজ নিজ অঞ্চলের অধিবাসীদেরকে মিষ্টান্ন দ্বারা আপ্যায়ন করতেন। এ উপলক্ষে  বিভিন্ন উৎসবের অযোজন করা হত। এই উৎসবটি একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে পরিণত হয় যার রূপ পরিবর্তন হয়ে বর্তমানে  এই পর্যায়ে এসেছে। তখনকার সময় এই দিনের প্রধান ঘটনা ছিল একটি হালখাতা তৈরি করা। হালখাতা বলতে একটি নতুন হিসাব বই বোঝানো হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে হালখাতা হল বাংলা সনের প্রথম দিনে  দোকান পাটের হিসাব আনুষ্ঠানিকভাবে হালনাগাদ করার প্রক্রিয়া। গ্রাম, শহর বা বাণিজ্যিক এলাকা, সকল  স্থানেই পুরনো বছরের হিসাব বই বন্ধ করে নতুন হিসাবের বই খোলা হয়।

গবেষকগণ বলছেন, পহেলা বৈশাখের উৎসব প্রথম শুরু হয় ঠাকুর পরিবারের উদ্যোগে এবং সেখান থেকেই পর্যায়ক্রমে এ উৎসব ছড়িয়ে পড়ে সবখানে।  তবে কোনো কোনো গবেষক মনে করেন, ওই একই সময়ে অন্যান্য জমিদারও আনুষ্ঠানিকভাবেই পহেলা  বৈশাখ উৎসব পালন করতেন। বছরের শেষ দিন চৈত্র সংক্রান্তি আর নতুন বছরের প্রথম দিন পহেলা বৈশাখ, এ  দু’দিন উপলক্ষে আয়োজিত বিশেষ অনুষ্ঠানের প্রচলন হয় ইংরেজ আমলের চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রথা চালু হওয়ার পর থেকে।  বছরের শেষ মাস চৈত্রের শেষ দিন ব্যবসায়ী সম্প্রদায় বকেয়া আদায় করার পর চালু করে নতুন খাতা আর নতুন বছরের প্রথম মাসের প্রথম দিন পহেলা বৈশাখ উৎসব হয় জমিদারদের পৃষ্ঠপোষকতায়। সেখানে থাকত কবিয়ালদের গান, নানা উৎসব আয়োজন- তাদের  লক্ষ্য ছিল খাজনা আদায়। আর দিনটাও বেছে নেয়া হয় নতুন বছরের প্রথম মাস বৈশাখের প্রথম দিনকেই, কারণ তখন ঘরে ঘরে ওঠে নতুন ফসল, কৃষকের চোখে-মুখে থাকে আনন্দের ছটা। পহেলা বৈশাখ উৎসবের শুরুটা ছিল এভাবেই।  

ঈশা খাঁর সোনারগাঁওয়ে ব্যতিক্রমী এক মেলা বসে যার নাম বউ মেলা, এটি স্থানীয়ভাবে বটতলার মেলা নামেও পরিচিত। জয়রামপুর গ্রামের মানুষের ধারণা, প্রায় ১০০ বছর ধরে পহেলা বৈশাখের শুরু হওয়া এই মেলা পাঁচ দিনব্যাপী চলে, প্রাচীন একটি বট বৃক্ষের নিচে এই মেলাবসে, যদিও সনাতন ধর্মাবলম্বীরা সিদ্ধেশ্বরী দেবীর পুজোর জন্য এখানে সমবেত হয়, বিশেষ করে কুমারী, নববধূ, এমনকি জননীরা পর্যন্ত তাদের মনস্কামনা পূরণের আশায় এই মেলায় এসে পূজা-অর্চনা করেন, সন্দেশ-মিষ্টি-ধান দূর্বার সঙ্গে মৌসুমি ফলমূল নিবেদন করে ভক্তরা, পাঁঠা বলির রেওযাজও পুরনো, বদলে যাচ্ছে পুরনো অর্চনার পালা, এখন কপোত-কপোতি উড়িয়ে শান্তির বার্তা পেতে চায় ভক্তরা দেবীর কাছ থেকে। এছাডা সোনারগাঁ থানার পেরাব গ্রামের পাশে আরেকটি মেলার আয়োজন করা হয় যার নাম ঘোড়া মেলা। লোকমুখে প্রচলিত যামিনী সাধক নামের এক ব্যক্তি ঘোড়ায় করে এসে নববর্ষের এই দিনে সবাইকে প্রসাদ দিতেন এবং তিনি মারা যাওয়ার পরই এই স্থানেই তার স্মৃতিস্তম্ভ বানানো হয়। প্রতিবছর পহেলা বৈশাখে স্মৃতিস্তম্ভে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা একটি করে মাটির ঘোড়া রাখেন এবং এখানে মেলার আয়োজন করা হয়। এ কারণে লোকমুখে প্রচলিত মেলাটির নাম ঘোড়া মেলা। এ মেলার অন্যতম আকর্ষণ হচ্ছে নৌকায় খিচুড়ি রান্না করে রাখা হয় এবং আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা সবাই কলাপাতায় আনন্দের সঙ্গে তা ভোজন করে। সকাল থেকেই এ স্থানে লোকজনের আগমন ঘটতে থাকে, শিশু-কিশোররা সকাল থেকেই উদগ্রীব হয়ে থাকে মেলায় আসার জন্য। মেলায় নাগর দোলা, পুতুল নাচ ও সার্কাসের আয়োজন করা হয়। নতুন মাত্রায় যোগ হয় কীর্তন মধ্যরাত পর্যন্ত। 

আধুনিক নববর্ষ উদযাপনের খবর প্রথম পাওয়া যায় ১৯১৭ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ব্রিটিশদের বিজয় কামনা করে এবং সে  বছর পহেলা বৈশাখে হোম কীর্তন ও পূজার ব্যবস্থা করা হয়। এরপর ১৯৩৮ সালেও অনুরূপ কর্মকান্ডের উল্লেখ পাওয়া যায়।  ভারতের অঙ্গ রাজ্যগুলোতে যে বাংলা দিনপঞ্জি ব্যবহার করা হয়েছে তা সংস্কৃত গ্রন্থ সূর্য সিদ্ধান্ত-এর উপর ভিত্তি করে লেখা।  এখানে মাসগুলোর ঐতিহাসিক সংস্কৃত নামগুলো রাখা হয়েছে যার প্রথম মাসের নাম হল বৈশাখ। তাদের দিনপঞ্জিটি হিন্দু  দিনপঞ্জি ব্যবস্থার সাথে সম্পর্কিত এবং বিভিন্ন বাঙ্গালি হিন্দু উৎসবের দিন নির্ধারণে সেটি ব্যবহৃত হয়। পশ্চিম বঙ্গ ও অন্যান্য অঙ্গ রাজ্যের বাঙ্গালিদের জন্য প্রতিবছর ১৪ ও ১৫ এপ্রিলে এই উৎসব হয়ে থাকে। কিন্তু বাংলাদেশে ড: মুহম্মদ শহীদুল্লাহ এর  নেতৃত্বে গঠিত হওয়া ১৯৬৬ সালের একটি কমিটিতে পুরনো বাংলা দিনপঞ্জিকে সংশোধিত করা হয়। এখানে প্রথম পাঁচ মাসকে  ৩১দিন, আর বাকি মাসগুলোকে ৩০দিন বানানো হয়। প্রতি অধিবর্ষে ফাল্গুন মাসে ৩১ দিন ধার্য করা হয়। ১৯৮৭  সালে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশে এই দিনপঞ্জি গ্রহণ করা হয়, এরপর, জাতীয় দিনপঞ্জির সূচনা ও প্রতিবছর নববর্ষ ১৪  এপ্রিলেই হয়ে থাকে, ১৪২৬ বঙ্গাব্দে দ্বিতীয় বারের মত সংশোধনী আনা হয়। গ্রেগরীয় বর্ষ পঞ্জির সঙ্গে বাংলা বর্ষ  পঞ্জির বিশেষ দিনগুলোর সমন্বয় আনতে বাংলা একাডেমি এই পরিবর্তন আনে। নতুন বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী বৈশাখ, জ্যৈষ্ঠ, আষাঢ়, শ্রাবণ, ভাদ্র ও আশ্বিন এই ছয় মাস ৩১ দিনে হবে, ফাল্গুন মাস ছাড়া অন্য পাঁচ মাস ৩০ দিনে পালন করা হবে। ফাল্গুন  মাস হবে ২৯ দিনের, কেবল অধিবর্ষের বছর ফাল্গুন মাস ৩০ দিনের হবে। 

১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর ঢাকাকে কেন্দ্র করে মুসলিম বাঙালির মধ্যবিত্তের উদ্ভব ঘটে এবং প্রকৃত অর্থে ১৯৫২-এর ভাষা আন্দোলন থেকেই শুরু হয় সমাজের এ অংশের মধ্যে আত্ম পরিচয় সম্পর্কে নতুন জিজ্ঞাসা, সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞানের সন্ধান। ঠিক সে সময়ই, ১৯৫৪ সালে যুক্ত ফ্রন্ট সরকারের আমলে পহেলা বৈশাখ সরকারি ছুটি ঘোষণার ঘটনাটি বাঙালি জাতীয়বাদকে সামনে নিয়ে আসে। ধর্মীয় পরিচয়ের পাশাপাশি তখন এ সমতল ভূমির অগ্রসর মানুষের কাছে ভাষাগত প্রশ্নে ‘বাঙালি’ পরিচয়টিও হয়ে ওঠে অত্যন্ত পরিষ্কার। সরকারি ছুটি ঘোষণার মধ্য দিয়ে পহেলা বৈশাখ দিনটি জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে তৈরি করে দেয় অসাম্প্রদায়িক চেতনা বিকশিত হওয়ার সুযোগ। পহেলা বৈশাখের উৎসবকে অর্থময় করার ক্ষেত্রে ছায়ানটের ভূমিকা এবং তাদের উদ্যোগেই ১৯৬৭ সালে রমনা বটমূলে প্রথম অনুষ্ঠিত হয় সঙ্গীতায়োজন এবং পরবর্তী সময়ে এ সঙ্গীতায়োজনকে ঘিরে রমনা পার্কে বৈশাখী মেলার আয়োজন সর্বস্তরের বাঙালির শেকড় সন্ধানের চেষ্টা সফল হয়। এরপর প্রতি বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ছাত্র-শিক্ষকদের সার্বিক তত্ত্বাবধানে আয়োজিত মঙ্গল শোভাযাত্রা স্থান পায় যার প্রচলন ১৯৮৯ সাল থেকে প্রথম শুরু। আর সর্বশেষ অর্জন স্বাধীন বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে পহেলা বৈশাখকে জাতীয় উৎসবের মর্যাদায় অভিষিক্ত করা। বর্ষপুঞ্জির প্রথম সংস্কার হয় ১৯৫২ সালে ভারতের বিশিষ্ট জ্যোতির্পদার্থবিদ ড. মেঘনাদ সাহার হাত দিয়ে এবং ১৯৫৭ সালে ভারত সরকার তার এ সংস্কারের সুপারিশ গ্রহণ করেন, সেই সুপারিশকেই সামনে রেখে ১৯৬২-৬৩ সালে তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানে বাংলা বর্ষপুঞ্জি সংস্কারের উদ্যোগ নেয়। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী তাজ উদ্দীন আহমদই প্রথম সরকারি নথিতে স্বাক্ষর সহ বাংলা সন চালুর নির্দেশ দেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণের পর সেই একই কার্যধারা চালু থাকে। এর পর অনেক পথ ঘাট পার হয়ে ১৯৮৭ সালে এসে জেনারেল এরশাদ সরকারি সব কাজকর্মে ইংরেজি সাল-তারিখের পাশাপাশি বাংলা তারিখ লেখার নির্দেশ দেন।

উপরের আলোচনা থেকে এটাই প্রতিয়মান হয় যে বাঙ্গালীর জীবনে বাংলা নববর্ষের একটি সোনালী পটভূমি রয়েছে যা ইতিহাস স্বীকৃত কিন্তু সময় সময় কিছু কিছু ঘটনা আমাদের সার্বিক আয়োজনকে ম্লান করে দেয় যা এবছরও ঘটার কোন সম্ভাবনা নেই যার সাথে জড়িয়ে আছে মানুষের জীবন জীবিকা/আয় রোজগারের প্রশ্ন যেমন কোটি টাকার ফুলের বানিজ্য, বৈশাখী পোশাকের বানিজ্য, গ্রামীন/শহুরে মেলার বানিজ্য মৃৎ শিল্পি কামার কুমারদের বানিজ্য, নাট্য কর্মী, যাত্রা শিল্পি, পালাকারদের আয় রোজগারের পথ সহ আরও কত কিছু রয়েছে এই তালিকায়। নতুন বছরের উৎসবের সঙ্গে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর কৃষ্টি ও সংস্কৃতির নিবিড় যোগাযোগ। গ্রামে মানুষ ভোরে ঘুম থেকে ওঠে, নতুন জামা কাপড় পরে এবং আত্মীয় স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবের বাড়িতে বেড়াতে যায়। বাড়িঘর পরিষ্কার করা হয় এবং মোটামুটি সুন্দর করে সাজানো হয়, বিশেষ খাবারের ব্যবস্থাও থাকে। কয়েকটি গ্রামের মিলিত এলাকায়, কোন খোলা মাঠে আয়োজন করা হয় বৈশাখী মেলার। মেলাতে থাকে নানা রকম কুটির শিল্পজাত সামগ্রীর বিপণন, থাকে নানারকম পিঠা পুলির আয়োজন, অনেক স্থানে ইলিশ মাছ দিয়ে পান্তাভাত খাওযার ব্যবস্থা থাকে এবং এই দিনের একটি পুরনো সংস্কৃতি হলো গ্রামীণ ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন যেমন নৌকা বাইচ, লাঠি খেলা কিংবা কুস্তি ইত্যাদি। বৈশাখী মেলা কেন্দ্রীক যে অর্থনেতিক কর্মকান্ড যা আগের মত এতটা সচল না থাকলেও একেবারে ফুরিয়ে যায়নি যদিও এলাকাভিত্তিক এর প্রধান্য রয়েছে অনেকাংশে। তবে অনেকেই তাদের মূল পেশা ধরে রাখতে পারছে না কেবল প্রণোদনার অভাবে। আদি পেশাজীবি যারা নববর্ষে বিভিন্ন পসরা সাজিয়ে বসত এখন জেনারেশন গেপের কারনে তাদের পোষ্যরা আর এ কাজ করছেনা বিধায় শিক্ষা নিয়ে তারা অন্য পেশায় চলে যায় যেমন কৃষকের ছেলে আর কৃষিতে নেই, বাঁশীওয়ালার ছেলে আর বাঁশী বাজানোর পেশায় আসছে না, কুমারের ছেলে আর পৈত্রিক পেশায় থাকতে চাচ্ছে না যা সব পেশার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। কোন কাজে আয় বেশী হবে, কোন বিষয়ে পড়াশোনা করলে চাকরি পাওয়া যাবে তা হয়ে গেছে বিবেচ্য বিষয়্। যার ফলে বাংলা নববর্ষেও কিংবা পহেলা বৈশাখের অর্থনৈতিক উপাদানগুলো সঙ্কটে পরেছে বর্তমান সময়ে যা চলমান রাখতে সরকারের পাশাপাশি সমাজ সংস্কারকদেরও ভূমিকা কম নয় বলে প্রতিয়মান হয়।

এখন সংস্কৃতি বড় না জীবন বড় তা অবশ্যি মূল্যায়নের সময় এসেছে এবং বেঁচে থাকতে হলে দুটিরই প্রয়োজন তবে স্থান, কাল ভেদে তা জনগন ও সরকারকেই নির্ধারন করতে হবে। আসুন আমরা সবাই মিলে এই জাতীয় অনুষ্ঠানকে স্বার্থক করি এবং পহেলা বৈশাখ প্রতি বছরই আসবে হয়ত অন্য এক আমেজ নিয়ে এবং হয়ত এর মধ্যে সব বৈশ্বিক সঙ্কট স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে জীবন ও জীবিকার বাহনগুলোতে। সৃষ্ঠিকর্তা সকলের সহায়ক হউন এই কামনা রইলো।

লেখক: গবেষক ও অর্থনীতিবিদ।

বিনিয়োগবার্তা/ডিএফই/এসএএম//


Comment As:

Comment (0)