Loan of low income country 210424

আইএমএফের উদ্বেগ

ঋণ নিয়ে আর্থিক চ্যালেঞ্জের মুখে নিম্ন আয়ের দেশগুলো

ডেস্ক রিপোর্ট: বিশ্বজুড়ে ঋণের বোঝা বাড়ছে নিম্ন আয়ের দেশগুলোর। অতিরিক্ত ঋণের চাপে আর্থিকভাবে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে অনেক দেশ। এমন পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দেশগুলোর পাশে দাঁড়ানোর কথা জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। সম্প্রতি আইএমএফের শেয়ারহোল্ডাররা এ বিষয়ে একমত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। খবর রয়টার্স।

চলতি সপ্তাহে আইএমএফ এবং বিশ্বব্যাংকের একাধিক প্রতিবেদনে নিম্ন আয়ের উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সম্ভাবনা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। দেশগুলো কভিড মহামারী ও বিশ্বব্যাপী চলমান নানা সংকট মোকাবেলা করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

এমন অবস্থায় ২০২৪ সালে নিম্ন আয়ের দেশগুলোর প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়েছে আইএমএফ। গত জানুয়ারিতে দেয়া ৪ দশমিক ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়ে ৪ দশমিক ৭ শতাংশে নামিয়েছে সংস্থাটি।

পৃথক প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাংক জানিয়েছে, বিশ্বের ৭৫টি দরিদ্র দেশের প্রায় অর্ধেকেই ধনী দেশগুলোর তুলনায় আয় ব্যবধান ব্যাপকভাবে বাড়ছে।

আইএমএফ ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘‌সাম্প্রতিক ধাক্কায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত নিম্ন আয়ের দেশগুলোকে সহায়তা জোরদার করতে কাজ করছে আইএমএফ।’

ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা ও সৌদি আরবের অর্থমন্ত্রী এবং আইএমএফের স্টিয়ারিং কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আল জাদান উভয়ই জানান, চলতি সপ্তাহে আইএমএফ কর্তৃক প্রণয়নকৃত নীতিমালা অভ্যন্তরীণ ঋণ পুনর্গঠন প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত ও সহজ করতে সহায়তা করবে।

জর্জিয়েভা বলেন, ‘‌আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংক আয়োজিত চলতি সপ্তাহের বৈশ্বিক সার্বভৌম ঋণসংক্রান্ত গোলটেবিল বৈঠকে ঋণ পুনর্গঠনের সময়সীমা নির্ধারণ ও ঋণদাতাদের তুলনাযোগ্যতা নিশ্চিত করার নীতিমালার বিষয়ে অগ্রগতি হয়েছে।’

তিনি জানান, ‌উচ্চ ঋণ আফ্রিকার সাব সাহারা অঞ্চলের দেশগুলোসহ নিম্ন আয়ের অনেক দেশের জন্য একটি বিশাল বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশগুলো এখন গড়ে ১২ শতাংশ ঋণের মুখোমুখি, যা এক দশক আগেও ছিল ৫ শতাংশ।

জর্জিয়েভা বলেন, ‘‌অত্যন্ত দুঃখের বিষয় হলো কিছু দেশের মোট আয়ের ২০ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ পরিশোধ করতে হয়। এর মানে দেশগুলো শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অবকাঠামো ও কর্মসংস্থান তৈরিতে বিনিয়োগের খুব কমই সুযোগ পাচ্ছে।’

এক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর প্রতি আইএমএফের পরামর্শ  হলো, মূল্যম্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, কর বৃদ্ধি, ভোক্তা ব্যয় কমানো ও স্থানীয় পুঁজিবাজারের উন্নয়নের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ আয় বৃদ্ধি করতে হবে।

বুলগেরিয়ান অর্থনীতিবিদ আইওলান্ডা ফ্রেসনিলো বলেন, ‘‌দেশগুলোকে ঘুরে দাঁড়াতে হলে বৈশ্বিক বিনিয়োগকারীদের কাছে নিজেদের আরো আকর্ষণীয় করে তোলা দরকার। এক্ষেত্রে আইএমএফ তাদের সহায়তা করতে পারে।’

তিনি আরো বলেন, ‘‌সার্বভৌম ঋণের প্রবাহ মোকাবেলা করার জন্য জাতিসংঘের উচিত একটি বহুপক্ষীয় আইনি কাঠামো বাস্তবায়ন করা। যেভাবে ট্যাক্স করপোরেশন পরিচালনায় নতুন কাঠামো তৈরি করা হয়েছে।’

তিনি জানান, বর্তমান কাঠামোটি খুবই ক্ষুদ্র পরিসরে রয়েছে। এটিকে বৃহত্তর পরিসরে জলবায়ু পরিবর্তন, পরিবেশের অবক্ষয় ও মানবাধিকার বিবেচনায় নিয়ে প্রণয়ন করা উচিত।

এদিকে নিম্ন আয়ের দেশগুলো যে পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মার্কিন ট্রেজারি আন্ডার সেক্রেটারি জেসি শামবাঘ। গত সপ্তাহে তিনি বলেন, ‘‌প্রায় ৪০টি দেশ ২০২২ সালে বাহ্যিক পাবলিক ঋণের বহিঃপ্রবাহ দেখেছিল। ২০২৩ সালে এ প্রবাহ আরো খারাপ হতে পারে।’ 

বিনিয়োগবার্তা/ডিএফই//


Comment As:

Comment (0)