গোল্ডেন রাইস

পাঁচ সংগঠনের উদ্বেগ

গোল্ডেন রাইসের অনুমোদনে বাড়বে স্বাস্থ্যঝুঁকি

নিজস্ব প্রতিবেদক: কোনো রকম বৈজ্ঞানিক গবেষণা ছাড়া শুধুমাত্র অনুমানের ভিত্তিতে জেনেটিক্যালি মডিফাইড (জিএম) ধান বা গোল্ডেন রাইসের অনুমোদনে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ার আশঙ্কা করছে পাঁচটি সংগঠন। এতে ধানের বীজের ওপর থেকে কৃষক অধিকার হারাবে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়। বহুজাতিক বীজ কোম্পানিগুলো এমন অনুমোদনের জন্য সরকারের ওপর প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ সংগঠনগুলোর।

সোমবার (৬ মে) রাজধানীর প্রেসক্লাবে পাঁচটি পরিবেশ ও কৃষি সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। সভায় উপস্থিত বক্তারা এমন আশঙ্কার কথা ব্যক্ত করেন।

আয়োজকদের পক্ষ থেকে প্রধান বক্তব্য তুলে ধরে ফরিদা আক্তার বলেন, সারাদেশে ব্রি ২৯ প্রজাতির ধান কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়।

এ প্রজাতির ধানের মধ্যে ভুট্টার জিন ঢুকিয়ে জেনেটিক্যালি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মাধ্যমে গোল্ডেন রাইস উদ্ভাবন করা হয়েছে। যার মাধ্যমে ধানের ভেতর ভিটামিন এ থাকবে বলে দাবি করা হয়। তবে এটি অনুমান নির্ভর।

যার মেধাসত্ত্ব রয়েছে সিনজেনটা নামের একটি বহুজাতিক বীজ কোম্পানির কাছে। এ গোল্ডেন রাইস নিয়ে সারা বিশ্বে বিতর্ক রয়েছে। তাই ফিলিপাইনে এর অনুমোদন বাতিল হয়েছে। কিন্তু বিশ্বের কোথাও অনুমোদন না পেলেও বাংলাদেশে গোল্ডেন রাইসের অনুমোদনের জন্য বহুজাতিক কোম্পানিগুলো প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এমন অনুমোদনের ফলে স্বাস্থ্য ঝুঁকির পাশাপাশি ধানের আদি নিবাস বাংলাদেশে জনপ্রিয় একটি জাতের ধানের বীজের অধিকার হারাবে কৃষকরা।

জেনেটিক্যালি মডিফাইড বেগুনের বিষয়ে ফরিদা আক্তার বলেন, এর আগে ২০১৩ সালে সাতটি শর্ত সাপেক্ষে বিটি বেগুনের অনুমোদন দেয়া হলেও শর্তগুলো মানা হচ্ছে না। নানা পদক্ষেপ সত্ত্বেও কৃষকদের মধ্যে এমন বীজ জনপ্রিয়তা পায়নি। তাই কোনো অবস্থাতেই দেশে জেনেটিক্যালি মডিফাইড পদ্ধতির প্রয়োজন নেই। কীটনাশক ও অতিরিক্ত সার ব্যবহারের কারণে প্রতি বছর দুই থেকে তিন লাখ ক্যান্সার রোগী ধরা পড়ছে। জিএম পণ্য এমন স্বাস্থ্যঝুঁকি আরো বাড়িয়ে তুলতে পারে।

পরিবেশবাদী সংগঠন বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, বিশ্বের কোথাও অনুমোদন না পেলেও গোল্ডেন রাইস অনুমোদনের তোড়জোড় চলছে দেশে। বাংলাদেশ এখন পরীক্ষাগারে পরিণত হয়েছে। এটার কোনো সমস্যা দেখা দিলে তা সামাল দেয়ার সক্ষমতা কী সরকারের আছে? এখানে রাজনৈতিক অর্থনৈতিক চাপের বিষয়টি জড়িত।

বীজ বিস্তার ফাউন্ডেশনের সভাপতি ড. এমএ সোবহান বলেন, এর পেছনে বাণিজ্য রয়েছে। প্রকৃতির ওপর জোর করা হলে প্রকৃতি প্রতিশোধ নেয়। ভুট্টার জিন ধানে যুক্ত করা হচ্ছে, অথচ ভুট্টা খেলেই হয়।

বিনিয়োগবার্তা/এসএএম//


Comment As:

Comment (0)