BGMEA BKMEA BTMA and FBCCI meeting 090524

বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিটিএমএ ও এফবিসিসিআইয়ের বৈঠক

পোশাক শিল্পের অগ্রযাত্রায় নীতি সহায়তা অব্যাহত রাখার আহ্বান

নিজস্ব প্রতিবেদক: তৈরি পোশাক শিল্পের সমসাময়িক ইস্যুগুলো নিয়ে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ), বাংলাদেশ নিটওয়্যার প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিকেএমইএ), বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস এসোসিয়েশন (বিটিএমএ) ও এফবিসিসিআই নেতৃবৃন্দ এক বৈঠক করেছেন।

বুধবার (০৮ মে, ২০২৪) ঢাকার উত্তরায় বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বিজিএমইএ সভাপতি এস এম মান্নান (কচি)। আলোচনায় অংশগ্রহন করেন বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, বিটিএমএ এর সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন, এফবিসিসিআইর সহ-সভাপতি মুনির হোসেন, বিজিএমইএ এর সহ-সভাপতি (অর্থ) মোঃ নাসির উদ্দিন এবং বিজিএমইএ এর পরিচালকবৃন্দ, মোঃ ইমরানুর রহমান, মোহাম্মদ সোহেল সাদাত, শামস মাহমুদ, রাজিব চৌধুরী, মোঃ জাকির হোসেন ও মোঃ রেজাউল আলম (মিরু)।

বৈঠকে পোশাক শিল্পের বিভিন্ন বিষয়গুলো, বিশেষ করে সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক জারীকৃত ইকোনোমিক জোন বা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত শিল্প এলাকা ছাড়া অন্য কোনও স্থানে নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করা হলে বিদ্যুৎ সংযোগ ও গ্যাস সরবরাহ প্রদান না করা এবং বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহকারী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ছাড়পত্র ছাড়া নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠানকে ঋণ প্রদান না করা সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন দু’টি নিয়ে আলোচনা করা হয়। 

সভায় নেতৃবৃন্দ বলেন, বর্তমানে তীব্র ভূ-রাজনৈতিক সংকট এবং এর প্রভাবে বৈশ্বিক বানিজ্যে সৃষ্ট অস্থিরতার প্রভাবে পোশাক শিল্প এমনিতে এক সন্ধিক্ষনে রয়েছে। এরকম পরিস্থিতিতে নতুন প্রজ্ঞাপন দুটি পোশাক শিল্পের সংকটকে আরও তীব্রতর করবে, শিল্পের প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্থ করবে। উদ্যোক্তারা নতুন কারখানা গড়ে তুলতে নিরুৎসাহিত হবেন। 

তারা আরও বলেন, বর্তমানে নির্ধারিত অর্থনৈতিক অঞ্চল বা সরকার নির্ধারিত অঞ্চলের বাইরে প্রতিষ্ঠিত পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর অনেকগুলোরই সম্প্রসারণ কাজ চলছে, আবার নতুন শিল্প কারখানা স্থাপনের কাজও চলমান রয়েছে। তাই পোশাক শিল্পে এ মুহুর্তে সার্কুলারদ্বয় কার্যকর করা হলে বিদ্যমান শিল্প কারখানার সম্প্রসারণ/নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠার চলমান কার্যক্রমগুলো ব্যাহত হবে। 

নেতৃবৃন্দ বলেন, বর্তমান সরকার বৈদেশিক মূদ্রার সংকট মোকাবেলার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছে। তাই বৈদেশিক মূদ্রা অর্জনের অন্যতম প্রধান খাত পোশাক শিল্পকে বাধাগ্রস্থ করা কোনমতেই কাম্য নয়।

সভায় উপরোক্ত সার্কুলারদ্বয় থেকে পোশাক শিল্পকে অন্তত ৫ বছরের জন্য অব্যাহতি প্রদানের জন্য সরকারের প্রতি বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো হয়েছে। শিল্পে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবারাহের দাবী পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে।

এছাড়াও বৈঠকে, পোশাক শিল্পে শুল্ক, ভ্যাট, আয়কর সংক্রান্ত সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। শিল্পকে টেকসই করতে ও রপ্তানির প্রবৃদ্ধির গতি অব্যাহত রাখতে ও ২০৩০ সাল থেকে পোশাক খাত থেকে ১০০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য এনবিআর ও কাষ্টমস বন্ড সংক্রান্ত ব্যবসায়িক প্রক্রিয়াগুলোকে আরও দ্রুততর, সহজতর ও হয়রানিমুক্ত করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রতি আহবান জানানো হয়।

বৈঠকে শিল্পোদ্যোক্তারা বলেন, আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় পর্যায়ে সৃষ্ট বিভিন্ন কারণে পোশাক শিল্পের ব্যয় বহুগুন বেড়ে গেছে। এ পরিস্থিতিতে পোশাক শিল্পে প্রযোজ্য উৎসে কর ১% থেকে হ্রাস করে ০.৫%  নির্ধারণ সহ পোশাক শিল্পের জন্য সম্ভাব্য ক্ষেত্রগুলোতে ব্যয় কমানো হলে শিল্প প্রতিযোগী সক্ষমতা বজায় রাখতে সমর্থ হবে। তারা আশা করেন আসন্ন বাজেটে এসবের প্রতিফলন ঘটবে।

নেতৃবৃন্দ এলডিসি পরবর্তী সময়ে পোশাক খাতের সক্ষমতা ধরে রাখার জন্য শিল্পের প্রস্তুতি ও করণীয় বিষয়গুলো নিয়েও আলোচনা করেছেন। তারা বলেন, ২০২৬ সালের পর থেকে বিভিন্ন বানিজ্য সুবিধা আর থাকবে না। তাই অন্তত ২০২৬ পর্যন্ত সময়ে বিভিন্ন নীতি সহায়তার মাধ্যমে সম্ভাবনাময় খাতগুলোতে বিনিয়োগ বাড়ানো হলে জাতি ও অর্থনীতি উপকৃত হবে।

বিনিয়োগবার্তা/ডিএফই/এসএএম//


Comment As:

Comment (0)