গভীর রাতে যেভাবে লুট হয় ব্যাংকের ২৯ লাখ টাকা
জেলা প্রতিনিধি: বগুড়া সদর উপজেলায় আইএফআইসি ব্যাংকের মাটিডালী উপশাখার সিন্দুক কেটে ২৯ লাখ টাকা লুটের খবর জানিয়েছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। বুধবার রাতের কোনো এক সময় দুইতলা ব্যাংক ভবনটির ছাদের গেট কেটে এ লুটের ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্বিক) স্নিগ্ধ আখতার।
বৃহস্পতিবার দুপুরে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও ব্যাংকের গ্রাহক মিরাজুল ইসলাম বলেন, তিন বছর ধরে এখানে ব্যাংকটি তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। দুঃখের বিষয় হলো, এই শাখার নিরাপত্তা ব্যবস্থা তেমন জোরদার ছিল না।
তিনি বলেন, রাতে কোনো নিরাপত্তা প্রহরীও থাকত না। সকালে গিয়ে জানতে পারি, রাতে নাকি ব্যাংকে চুরি হয়েছে। এছাড়া ব্যাংকটির যে এলার্মিং সিস্টেম আছে, সেটিও নাকি রাতে বন্ধ ছিল।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মাটিডালি বিমান মোড়ে একটি ভবনের দোতলায় ব্যাংকটির উপশাখার কার্যক্রম চলে। ওই ভবনের সিঁড়ি ঘরের তালা এবং ব্যাংকের দরজার তালা ভাঙা পাওয়া গেছে। ব্যাংকের সিন্দুকের তালাও ভাঙা দেখেছেন ব্যাংক কর্মকর্তারা।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আকতার বলেন, ব্যাংকের ভেতরের সিসি ক্যামেরা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। ব্যাংকটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তাদের শাখায় গচ্ছিত ২৯ লাখ টাকা খোয়া গেছে।
তিনি আরো জানান, চুরির ঘটনায় জড়িতদের শনাক্তের কাজ শুরু করা হয়েছে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষের উপশাখায় নিরাপত্তার কোনো ব্যবস্থাই তারা করেননি। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে এ পর্যন্ত ছয়বার তাগিদ দেওয়া হয়েছে নিজস্ব নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য। কিন্তু ব্যাংক কর্তৃপক্ষের তেমন কোনো পদক্ষেপ নেই।
বৃহস্পতিবার মাটিডালি উপশাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ইনচার্জ) ফাহমিদা ফিরোজ বলেন, গতকাল সারাদিনের লেনদেন কার্যক্রম শেষে বিকেলে ২৯ লাখ ৪০ হাজার ৬১৮ টাকা সিন্দুকে রেখে তালাবদ্ধ করে কার্যালয় বন্ধ করে কর্মকর্তারা নিজ নিজ বাসায় চলে যান। বৃহস্পতিবার সকালে কার্যালয় খোলার পর সিন্দুক ভাঙা দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পরে দেখা যায়, সিন্দুকে গচ্ছিত সব টাকা দুর্বৃত্তরা লুট করে নিয়ে গেছে।
আইএফআইসি ব্যাংকের বগুড়া কর্পোরেট শাখার ব্যবস্থাপক তাজমিলুর রহমান বলেন, ব্যাংকের মাটিডালি উপশাখায় কোনো নিরাপত্তাকর্মী ছিলেন না। সেখানে সিন্দুককে ভল্ট হিসেবে ব্যবহার করা হতো। গতকাল লেনদেন শেষে সিন্দুকে গচ্ছিত ২৯ লাখ ৪০ হাজার ৬১৮ টাকা খোয়া গেছে। এ ঘটনায় ব্যাংকের কারও কোনো গাফিলতি ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বগুড়া সদর থানার ওসি সাইহান ওলিউল্লাহ বলেন, আইএফআইসি ব্যাংকের এই উপশাখায় কোনো নিরাপত্তাকর্মী ছিলেন না। ভল্টের বদলে সিন্দুকে টাকা গচ্ছিত রাখা হয়েছিল। দোতলা ভবনের ছাদের দরজাও খোলা রাখা হয়েছিল। অর্থ লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল খুবই দুর্বল, নিরাপত্তা নিয়ে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ছিল উদাসীন। তবে দুর্বৃত্তদের শনাক্ত করতে পুলিশ কাজ করছে।
বিনিয়োগবার্তা/ডিএফই//