বিএবির সঙ্গে বৈঠক শেষে অর্থ উপদেষ্টা
ব্যাংক মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করেই সংস্কার
নিজস্ব প্রতিবেদক: ব্যাংক মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করেই এ খাতের সংস্কার করা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থ, বাণিজ্য, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। অন্যদিকে ব্যাংক মালিকরা সরকারের কাছে নীতি প্রণয়নের ক্ষেত্রে অংশীজনদের মতামতকে গুরুত্ব দেয়ার দাবি জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে ব্যাংক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
বৈঠক শেষে উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও পরিচালকরা এসেছিলেন। ব্যাংক খাতের বিভিন্ন সম্ভাবনা, সমস্যা ও সংস্কারের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ব্যাংকের ঋণ ও তারল্য সমস্যা নিয়ে কথা হয়েছে, আমরা বলেছি এগুলোর ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আলাপ করব। সংস্কারের ক্ষেত্রে যাতে তাদের মতামতের প্রতিফলন ঘটে সেটি ওনারা বলেছেন। আমরা বলেছি যে যা-ই করব, তাদের সঙ্গে আলোচনা করেই করা হবে। ব্যাংকাররা যাতে যাচাই-বাছাই করে ঋণ দেয়, আগের মতো ত্রুটি-বিচ্যুতি যাতে না হয়, সেটি আমি তাদের বলেছি। ছোট উদ্যোক্তারা অনেক সময় ব্যাংক থেকে যথাযথভাবে ঋণ পায় না। এজন্য আমি তাদেরকে অন্তর্ভুক্তিমূলক ঋণ দেয়ার কথা বলেছি। সর্বোপরি স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সুশাসন যাতে নিশ্চিত করা হয় সে বিষয়ে জোর দেয়ার জন্য বলেছি।
বিএবির চেয়ারম্যান আব্দুল হাই সরকার বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বলেন, ‘ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের বিষয়ে উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের পক্ষ থেকে যেসব নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, সেক্ষেত্রে যাতে অংশীজনদের মতামত নেয়া হয় সে বিষয়ে আমরা আলোচনা করেছি। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা না করেই নীতি প্রণয়ন করা হচ্ছে এবং এজন্য এগুলো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও সমস্যায় পড়তে হয়। এ সংস্কৃতি পরিবর্তন করা দরকার আমরা সেটা বলেছি।’
একই গ্রুপের কাছে নয়টি ব্যাংকের মালিকানা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ওনি তো আর ব্যাংকের ব্যবসা করতে আসেন নাই, ভালো ব্যাংকগুলোকে শেষ করে দিয়ে গেছে। এসব কাজের নির্দেশ উপর থেকে আসত। বাংলাদেশ ব্যাংককে বলা হতো এটি করে দাও। সবাই জানে এসব নির্দেশ কোথা থেকে আসত এবং না মানলে কী অবস্থা হতো। অনেক ব্যাংকই এ সমস্যায় পড়েছে।
তিনি বলেন, ‘উপদেষ্টা আমাদেরকে বলেছেন যে আমরা ওনাদের কাছ থেকে সঠিক নীতিসহায়তা পাব। যখন কোনো ব্যাংক সমস্যায় পড়ে যায় তখন আমানতকারীদের সহায়তা করে যেতে হবে। কারণ ভয়ে তখন আমানতকারীরা ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিতে চান। এ যে একটা বিশ্বাস এটি তৈরি করতে কিছুটা সময় লাগবে। তবে আমরা বর্তমানে যেভাবে কাজ করছি এবং সরকার যেভাবে আমাদের নীতিসহায়তা দিচ্ছে আমরা আশা করছি এসব সমস্যা দূর হয়ে যাবে।’
আব্দুল হাই সরকার বলেন, ‘যারা ব্যাংকের অর্থ আত্মসাৎ করে বিদেশে পালিয়ে গেছেন তারা যাতে আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে মামলা লড়তে না পারেন সে বিষয়ে আমরা দাবি জানিয়েছি। মামলায় লড়তে হলে তাদেরকে দেশে আসতে হবে। দুর্বল ব্যাংককে বাঁচাতে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ কিংবা আইএফসির মতো সংস্থার কাছ থেকে যদি কোনো প্যাকেজ নেয়া যায় সেটি সবচেয়ে ভালো হবে। সমস্যাগ্রস্ত ব্যাংকগুলোকে কীভাবে বাঁচানো যায় সেটি নিয়ে আমরা সরকারের সঙ্গে কাজ করছি।
বিনিয়োগবার্তা/এসএএম//