মিহির

ফরেন ইভেস্টরস সামিট

রাজনৈতিক অনিশ্চয়তায় আবদ্ধ বিনিয়োগ

ড: মিহির কুমার রায়: সম্প্রতি রাজধানীর বনানী শেরাটন হোটেলে ব্র্যাক ইপিএল আয়োজিত ফরেন ইনভেস্টরস সামিট শেষ হয়েছে। এ সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড.  আনিসুজ্জামান চৌধুরী। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সাবেক বাণিজ্য মন্ত্রী ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তাদের ভাষ্য বর্তমান বাংলাদেশে শুধু রাজনীতিবিদ নন, সবার কাছেই অগ্রাধিকার পাচ্ছে অর্থনীতি। সংকটের মধ্যেও ঘুরে দাঁড়ানোর অন্তর্নিহিত শক্তি আছে দেশের অর্থনীতির। বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে হলে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে সুশাসন,  স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। পোশাক শিল্প  অর্থনীতি বড় করেছে। তবে পরবর্তী ধাপে যেতে হলে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন নিশ্চিতে শক্তিশালী পুঁজিবাজার গড়তে হবে।

এই সামিটে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করেন।  জাপানি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান কন্টেক্সচ্যুয়াল ইনভেস্টমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকাও হিরোসি বলেন,  ‘বাংলাদেশ স্বল্পমেয়াদি কার্যকর মূলধনের চমৎকার ব্যবহার প্রমাণ করেছে। তৈরি পোশাক শিল্প প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করেছে। এই সাফল্যকে পরবর্তী ধাপে নিতে হলে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন যুক্ত করতে হবে। তবে আমাদের মতো বিনিয়োগকারীদের আনতে হলে নিশ্চিত করতে হবে সুশাসন, সঠিক কাঠামো,  জবাবদিহি ও স্বচ্ছতা। অনুগ্রহ করে সেদিকে কাজ করুন, আমরা সমর্থন করব।’ তিনি বলেন,  ‘বিদেশিরা এলে অর্থনীতিতে দ্রুতগতি যেমন পায়,  তেমনি শঙ্কা দেখলে দ্রুতই চলে যায়। আমাদের ধরে রাখতে হলে রাজনীতিতে সহিংসতা করা চলবে না। আমি আসব,  তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে গেলে সঙ্গে সঙ্গে জাপানে ফিরে যাব।   এশিয়া ফন্ট্রিয়ার ইনভেস্টমেন্টের ফান্ড ম্যানেজার রুচির দেশাই বলেন,  গত বছর বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে শ্রীলঙ্কার পরিবর্তনের মিল আছে। শ্রীলঙ্কা এরইমধ্যে স্থিতিশীলতা ফিরে পেয়েছে সফলভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করার মধ্য দিয়ে। ভারতের ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদ অমিতাভ চৌধুরী বলেন,  নানা সংকট অবস্থার মধ্যেও ঘুরে দাঁড়ানোর মতো অন্তর্নিহিত শক্তি অর্জন করেছে বাংলাদেশ। তবে এখানকার অর্থায়ন ব্যাংক খাত নির্ভর। এর ফলে কিছু অলিগার্ক তৈরি হয়েছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে শক্তিশালী পুঁজিবাজার গঠনের বিকল্প নেই। 

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন,  গণঅভ্যুত্থানে সরকার বদলের পর বিশ্বের অনেক দেশ অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে। তবে বাংলাদেশে তা হয়নি। জিডিপি কমেনি,  মূল্যস্ফীতি উল্টো কমেছে। আমাদের পুঁজিবাজারও দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের জন্য প্রস্তুত।  সরকার শক্তিশালী ও সুশাসিত পুঁজিবাজার গড়ার জন্য কাজ করছে। সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী ও বিএনপি নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন,  বিএনপি ক্ষমতায় গেলে এ বাজারকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে শক্তিশালী করতে প্রয়োজনীয় সংস্কার করা হবে। এ বাজারের গভীরতা বাড়াতে ভালো কোম্পানি এবং প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তি বিনিয়োগকারীর অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে। এরইমধ্যে নির্বাচনের খবর রটেছে। দেশি-বিদেশি অনেক বিনিয়োগকারী খোঁজ নিতে শুরু করেছেন। বিএসইসির কমিশনার মো.  সাইফুদ্দিন বলেন,  শীর্ষস্থানীয় বহুজাতিক ভোক্তাপণ্য কোম্পানি ও শীর্ষ ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে ইতোমধ্যে সংস্কার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন,  বিদেশি বিনিয়োগকারীরা যেন স্বল্পমেয়াদি বিনিয়োগ করতে না এসে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ পরিকল্পনা নিয়ে আসেন। এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন,  ‘আমরা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় লড়ব,  যাতে বিনিয়োগকারীদের আস্থা নষ্ট না হয়।’ ব্র্যাক ব্যাংকের সাবেক এমডি সেলিম আর এফ হোসেন বলেন, হাজার হাজার কোটি টাকার ব্যবসা করে এমন ১০-১২টি কোম্পানি  এখনও শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত নয়। তারা আসে না, কারণ এ বাজারে আসা লাভজনক মনে করেনা। 

দেশের বৃহৎ শিল্পোদ্যোক্তারা বলছেন,  গত ছয় মাসে দেশের অর্থনীতি ও বিনিয়োগ পরিবেশে খুব একটা স্বস্তির জায়গা তৈরি হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে নতুন বিনিয়োগ থেকে নিজেদের বিরত রাখছেন উদ্যোক্তারা। তাদের ভাষ্যমতে,  উদ্যোক্তাদের যারই বড় ধরনের ব্যাংক ঋণ রয়েছে,  সুদহার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তার মধ্যে উদ্বেগও বাড়ছে। সরকার স্থানীয় ও বিদেশী বিনিয়োগকারীদের সমস্যাগুলো কার্যকরভাবে অনুধাবন করতে পারছে না। এ কারণে এখন নতুন বিনিয়োগের চিন্তা কেউ করছে না। যে দুয়েকজন উদ্যোক্তা সম্প্রসারণ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরু করেছিলেন,  তারাও এখন ভয়ে আছেন। ফলে উৎপাদন ও বাণিজ্য প্রবৃদ্ধি সংকুচিত হয়েছে অন্তত ১৫ থেকে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত। ব্যবসার পরিস্থিতি কোনো কোনো ক্ষেত্রে আগের চেয়ে খারাপ। রাজনীতিতে এখনো ফলপ্রসূ কোনো কিছু অর্জন হয়নি। বিষয়গুলো নিয়ে নীতি নির্ধারকদের জোর পদক্ষেপ গ্রহণ এখন অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। 

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের কথা বলে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি গ্রহণ করেছে সরকার। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের শুরু থেকে ক্রমাগতভাবে ব্যাংক ঋণের সুদহার বাড়ছে। এরইমধ্যে নীতি সুদহার  (রেপো রেট) ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের মুদ্রানীতি প্রণয়নের কাজ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। শিগগিরই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণার কথা রয়েছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে নতুন মুদ্রানীতিতেও সুদহার আরো বাড়ানোর ঘোষণা আসতে পারে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে আভাস দেয়া হয়েছে। বাড়তি সুদহারের বিষয়টি উদ্যোক্তাদের দুশ্চিন্তায় ফেলে দিচ্ছে উল্লেখ করে স্কয়ার গ্রুপের পরিচালক তপন চৌধুরী বলেন, ‘সার্বিকভাবে পরিস্থিতি অনিশ্চিত ও স্বস্তি নেই। অর্থনীতিতেও তাই। নতুন বিনিয়োগের চিন্তা এখন কেউ করছে না। অনেকে সম্প্রসারণ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরু করে ভয়ের মধ্যে আছে। যাদের ব্যাংক ঋণ আছে তারা ঋণ পরিশোধ নিয়ে চিন্তিত। অনেক ব্যাংক আছে যেগুলোর অবস্থাও ভালো না। অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যে যথেষ্ট অভিজ্ঞতা সম্পন্ন লোক  রয়েছেন। তারা যখন দায়িত্ব নিয়েছেন তখন দেশের অর্থনীতির অবস্থা নাজুক অবস্থায় পেয়েছেন। এ পরিস্থিতিকে গুছিয়ে নিতে কিছুটা সময় লাগছে। সরকারের ওপর আস্থা আছে। কিন্তু কেন যেন তারা গুছিয়ে উঠতে পারছেন না।’

তিনি আরো বলেন, ‘অনেক অনিশ্চয়তা। অভ্যন্তরীণ বাজারে এখনো লোকজনের অনেক দ্বিধা দ্বন্দ্ব। বিভিন্ন কারণে স্বস্তি আসেনি। আমরা এ ধরনের পরিস্থিতি কেউ দেখতে চাইনা। অভ্যন্তরীণ বাজারের পাশাপাশি রফতানি বাজার নিয়ে অস্বস্তি রয়েছে। অনেক প্রশ্ন সবার, শিপমেন্ট ঠিকমতো করা সম্ভব হবে কিনা,  হঠাৎ কোনো অসন্তোষ শুরু হয়ে সড়ক বন্ধ হয়ে যায় কিনা। পোশাক খাতের বিদেশী ক্রেতারা মুখে যা-ই বলুক,  কিছু ক্রয়াদেশ স্থানান্তর হয়েছে। কারণ মৌসুমি চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ নিশ্চিতের একটা বিষয় এখানে রয়েছে। আবার ক্রয়াদেশ যা আসছে সেগুলোর ন্যায্য দাম পাওয়া যাচ্ছে না।’

কয়েক বছর ধরেই দেশের বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি বেশ মন্থর। গত ছয় মাসে তা আরো মন্থর হয়ে এসেছে। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের  প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই থেকে নভেম্বর)  দেশের বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ বেড়েছে মাত্র ১ দশমিক ৪১ শতাংশ। যেখানে এর আগে গত অর্থবছরের একই সময়ে এ প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে,  ২০২৪ সালের জুন শেষে বেসরকারি খাতে ব্যাংক ঋণের স্থিতি ছিল প্রায় ১৬ লাখ ৪১ হাজার ২২৯ কোটি টাকা। নভেম্বর শেষে ঋণের এ স্থিতি বেড়ে ১৬ লাখ ৬৪ হাজার ৩২৪ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। সে হিসাবে পাঁচ মাসে বেসরকারি খাতে ঋণ স্থিতি বেড়েছে মাত্র ২৩ হাজার ৯৫ কোটি টাকা। আর ঋণ প্রবৃদ্ধির হার প্রায় ১ দশমিক ৪১ শতাংশ। বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবাহ এর আগে এতটা মন্থর হয়ে আসতে দেখা যায় নি। নভেম্বরের পরও এ চিত্রে তেমন কোনো পরিবর্তন আসেনি। বরং এখন ঋণের যে প্রবৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে এরও বড় অংশ এসেছে অনাদায়ী সুদ ও সুদহার বৃদ্ধির প্রভাবে।

ইস্ট-কোস্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান আজম জে চৌধুরী বলেন,  ‘ব্যবসা-বাণিজ্য খারাপ। প্রায় ১৫ থেকে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত উৎপাদন ও বাণিজ্য প্রবৃদ্ধি কমেছে। ব্যবসার পরিস্থিতি কোনো কোনো ক্ষেত্রে আরো বেশি খারাপ। ব্যবসায় নতুন বিনিয়োগ নেই, পুরনো ব্যবসাই চলছে। যা চলছে,  সেটাও আরো কমছে। আর নতুন ব্যবসাতো সম্ভবই না। কারণ মূল্যস্ফীতি অনেক বেশি। গ্যাসসহ সব কিছুই উচ্চ মূল্যের। নিয়ম হলো যে উৎপাদনশীল খাতে সহযোগিতা করার জন্য সরকারের সবসময় একটা নীতি থাকে। এবার সব কিছু নেতিবাচক হওয়ার কারণে কেউ আর এ পথে এগোচ্ছে না। ফলে ব্যবসা বাড়ছে না। নতুন ব্যবসায়ও বিনিয়োগ হচ্ছে না। এটা দারিদ্র্য বিমোচনের পথে একটি সাংঘাতিক চ্যালেঞ্জ। আমরা মনে করি, এ সরকার তাড়াতাড়ি করে একটা নির্বাচন দিয়ে দেবে,  যাতে করে আমরা নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে পারি।’ দেশে মূল্যস্ফীতির হার এখন গোটা দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বোচ্চ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর  (বিবিএস) তথ্য মতে,  জানুয়ারিতে দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ। এর মধ্যে খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার দীর্ঘদিন ধরেই দুই অংকের ঘরে। জানুয়ারিতে দেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১০ দশমিক ৭২ শতাংশ। আগের মাস অর্থাৎ ডিসেম্বরে এ হার ছিল ১২ দশমিক ৯২ শতাংশ।

প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সিইও আহসান খান চৌধুরী বলেন,  ‘আমি অভ্যন্তরীণ ব্যবসা নিয়ে অত্যন্ত আশাবাদী। কিন্তু এর পূর্বশর্ত হলো প্রথমত ভালো আইন-কানুন,  ভালো ব্যবস্থা। দেশের  আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবশ্যই ভালো হতে হবে। দেশের ব্যাংকিং পরিস্থিতি অবশ্যই ভালো হতে হবে। যতটুকু সামর্থ্য আমাদের আছে,  তা ব্যবসার পেছনে কাজে লাগাতে হবে। আমরা যদি আমাদের সমগ্র সঞ্চয়টা সরকারের ব্যয়ের পেছনে ব্যয় করে দিই,  তাহলে কিন্তু ব্যবসায়ীদের ব্যয়ের জন্য কিছু থাকবে না। সেক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের জন্য প্রচুর সুদ হারের বোঝা থাকবে। সুদহার বেশি থাকবে। ব্যবসায়ীরা কোনো ডলার পাবেন না। ডলার না পেলে কিন্তু দেশের উন্নতিও হবে না। ডলার শুধু অনুৎপাদনশীল খাতে ব্যয় না করে উৎপাদনশীল খাতে ব্যয় করতে হবে। দেশের ভালো ভালো কারখানা করার জন্য কিন্তু ডলারের দরকার আছে, কাঁচামালের আমদানির জন্যও কিন্তু দেশের ডলারের প্রয়োজন আছে। যদি আমরা সুদহারটা ভালো পাই, আইন-কানুনটা ভালো পাই, যদি ত্বরিত সিদ্ধান্ত পাই,  তাহলে সবার জন্য ভালো হবে। অনেক সময় রাজনৈতিক সরকার যখন থাকে,  তখন অনেক দ্রুত সিদ্ধান্ত পাওয়া যায়।’ তিনি আরো বলেন,  ‘বাংলাদেশের জনসংখ্যা এবং অভ্যন্তরীণ চাহিদা ব্যাপক। এখানে যদি ব্যবসার পরিবেশ সুন্দর থাকে,  ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড অভ্যন্তরীণ বাজারে অনেক ভালো হতে পারে। আমি উপলব্ধি করি যে ব্যাংক খাতে আমরা বিরাট একটা সমস্যার মধ্য দিয়ে গিয়েছিলাম। তারপরও আমি মনে করি যে এখনো যদি আমরা ব্যাংকিংটাকে একটু গোছাতে পারি, সুদহারটাকে যদি ব্যবসার নাগালের মধ্যে রাখতে পারি,  তাহলে বোধহয় এখানে বিনিয়োগ হবে। নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে এবং মানুষ একে অপরের সঙ্গে ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড বাড়ানোর মধ্য দিয়ে এগিয়ে যাবে।’

নগদ টাকার (তারল্য)  সংকট ও নীতি সুদহার বাড়ানোর প্রভাবে ২০২৩ সালের জুন থেকেই ব্যাংক ঋণের সুদহার বাড়ছে। ঋণের সুদহার সর্বোচ্চ ৯ থেকে বেড়ে এখন প্রায় ১৬ শতাংশে ঠেকেছে। যদিও সুদহার বৃদ্ধির কোনো সুফল জনগণ পায়নি। বরং বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি যখন সর্বনিম্ন,  তখন মূল্যস্ফীতির হার আরো লাগামহীন হয়ে উঠতে দেখা যাচ্ছে। ২০২৪ সালের জুনে মূল্যস্ফীতির গড় হার ছিল ৯ দশমিক ৭২ শতাংশ। জুলাইয়ে এ হার বেড়ে ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশে ঠেকে। আগস্টেও মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১০ দশমিক ৪৯ শতাংশ। এরপর সেপ্টেম্বরে তা ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ দেখানো হলেও অক্টোবরে বেড়ে ১০ দশমিক ৮৭ শতাংশে উঠে যায়। আর নভেম্বর ও ডিসেম্বরে মূল্যস্ফীতির গড় হার ছিল যথাক্রমে ১১ দশমিক ৩৮ ও ১০ দশমিক ৮৯ শতাংশ। অর্থাৎ জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহের প্রবৃদ্ধি মাত্র ১ দশমিক ৪১ শতাংশে নেমে এলেও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে তা কোনো কাজেই আসেনি। জানুয়ারিতেও দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১০ শতাংশের কাছাকাছি। সর্বশেষ ২০২৩-২৪ অর্থবছরেও বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৯ দশমিক ৮৪ শতাংশ।

মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তফা কামাল বলেন,  ‘অনেক চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। মূল্যস্ফীতি, আইন-শৃঙ্খলা—যেগুলো উন্নতির সঙ্গে সম্পৃক্ত,  সেগুলোর কোনো উন্নতি হয়নি। আর বিনিয়োগ তো হচ্ছেই না। বিনিয়োগ নিয়ে হয়তো আগে থেকে কেউ পরিকল্পনা করেছে, কিন্তু দেশের বর্তমান যে পরিস্থিতি,  এটার হার তো নেতিবাচকই বেশি। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবস্থাতো খুবই খারাপ। এরতো বিভিন্ন রকম প্রভাব আছে। চাঁদাবাজি আগেও ছিল,  এখনো আছে। ঘুস-দুর্নীতি বেড়ে গেছে। যদিও বলা হচ্ছে এখন ঘুস-দুর্নীতি লাগে না। কিন্তু খুব বেশি কাজও হচ্ছে না। অনেক জায়গায় ফাইল প্রসেসিং হচ্ছে না। আগের প্রশাসন রয়ে গেছে। কিছু পরিবর্তন হয়েছে,  কিন্তু তারা তো গুছিয়ে আনতে পারেনি এখনো। সরকারতো প্রায় আগের মতোই চলছে। তারা যে কোনো একটি খাতে আকর্ষণীয় কৌশলের প্রয়োগ দেখাবে,  তেমন নিদর্শন কম। একমাত্র বাংলাদেশ ব্যাংক আর্থিক খাতকে কিছুটা উন্নত করতে পেরেছে। অন্য কিছুতো দৃশ্যমান নয়। আশার কথা হলো ব্যাপক দুর্নীতি বা বড় বড় প্রকল্প,  এগুলো হচ্ছে না। সরকার কিছুটা পিছুটান দিয়েছে, এটা খুবই ভালো লক্ষণ।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের জুন মাস শেষে দেশের  ব্যাংক খাতে আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৮ লাখ ৭৭ হাজার কোটি টাকারও বেশি। একই সময়ে উদ্বৃত্ত তারল্যের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ২ লাখ ৬৬ হাজার কোটি টাকা, যা দেশের ব্যাংকিং ইতিহাসে বিরল। অথচ এই বিপুল অর্থ দেশের উৎপাদন খাতে প্রবেশ না করে অলস অবস্থায় পড়ে আছে,  যার প্রভাব পড়ছে সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানে। অপরদিকে, ব্যাংকের বাইরে মানুষের হাতে থাকা নগদ অর্থের পরিমাণও একই সময়ে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৯৬ হাজার কোটি টাকার মতো। অর্থাৎ যারা ব্যাংকে টাকা রাখছেন না, তারাও অর্থ ব্যয় না করে জমিয়ে রাখছেন। ফলে অর্থনীতিতে এক ধরনের অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। টাকা আছে, কিন্তু সেই টাকা প্রবাহিত হচ্ছে না। এই অবস্থা চলতে থাকলে বাজারে চাহিদা সৃষ্টির গতি মন্থর হবে, বিনিয়োগ আসবে না, উৎপাদন বাড়বে না এবং কর্মসংস্থানের সুযোগও তৈরি হবে না। এই পরিস্থিতির পেছনে বিশেষজ্ঞরা কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ চিহ্নিত করেছেন। দেশে দীর্ঘদিন ধরে বেসরকারি বিনিয়োগে স্থবিরতা বিরাজ করছে। করোনা মহামারীর ধাক্কা,  রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা- এই তিনটি বড় ধাক্কা বিনিয়োগকারীদের মনোবল ভেঙে দিয়েছে। বিশেষ করে রাজনৈতিক অস্থিরতা হয়ে দাঁড়িয়েছে বিনিয়োগের সবচেয়ে বড় বাধা। বিনিয়োগকারীরা নিশ্চিত নীতি নির্ধারণ,  আইন শৃঙ্খলা এবং দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা ছাড়া বড় বিনিয়োগে যেতে সাহস পাচ্ছেন না।

বলার অপেক্ষা রাখে না, সাম্প্রতিক সময়ে কিছু ব্যাংকের অনিয়ম,  খেলাপি ঋণের ঊর্ধ্বগতি ও পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ জনগণের আস্থা মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন করেছে। তাছাড়া ব্যাংকগুলো নিজেরাও এখন আর বেসরকারি খাতে ঝুঁকি নিয়ে  ঋণ দিতে চাইছে না। অনেক ব্যাংক এখন সরকারি ট্রেজারি বিল ও বন্ডে বিনিয়োগ করছে,  যেটি তুলনামূলকভাবে নিরাপদ এবং নিয়মিত মুনাফা দেয়। ফলে উদ্যোক্তারা ঋণ পাচ্ছেন না,  আর তারাও আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন নতুন বিনিয়োগে। মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানির পরিসংখ্যানও বলে দিচ্ছে, নতুন শিল্প স্থাপনে বিনিয়োগ প্রায় নেই বললেই চলে। এর পাশাপাশি ঋণের উচ্চ সুদের হার,  গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকট,  অবকাঠামোগত দুর্বলতা এবং নীতিগত অস্পষ্টতাও বিনিয়োগের পথে বড় অন্তরায়। ফলে সার্বিক অর্থনীতি এক ধরনের স্থবিরতার মধ্যে পড়ে গেছে। অর্থ আছে, কিন্তু সেই অর্থ উৎপাদন, কর্মসংস্থান কিংবা সেবা খাতে প্রবেশ করছে না। এটা শুধু অর্থনীতির জন্যই নয়,  সামাজিক স্থিতির জন্যও এক উদ্বেগজনক সংকেত।

এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য কিছু জরুরি করণীয় আছে। যেমন- রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচন প্রক্রিয়া এবং গণতান্ত্রিক চর্চা দিয়ে জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। সেই সঙ্গে ব্যাংক খাতে সংস্কার জোরদার করতে হবে। অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে,  দায়িত্বশীল ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে হবে এবং গ্রাহকের আস্থা পুনরুদ্ধারে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। উদ্যোক্তাবান্ধব ঋণনীতি প্রণয়ন করা দরকার। সুদের হার এমনভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে,  যাতে উদ্যোক্তারা সাশ্রয়ী হারে ঋণ নিতে পারেন এবং তা উৎপাদনশীল খাতে ব্যবহার করতে পারেন। তাছাড়া নগদ অর্থের প্রবণতা কমাতে ডিজিটাল লেনদেনকে আরও সহজ ও নিরাপদ করতে হবে। মোবাইল ব্যাংকিং ও ই-পেমেন্ট সিস্টেমের পরিধি বাড়িয়ে অর্থনীতিতে টাকা চলাচল সচল রাখতে হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, দেশের সামগ্রিক বিনিয়োগ পরিবেশকে স্থিতিশীল,  স্বচ্ছ ও উদ্যোক্তা সহায়ক করতে হবে। সরকার,  কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং ব্যবসায়ী সমাজকে যৌথভাবে পরিকল্পনা নিয়ে এগোতে হবে,  যাতে অলস টাকার পাহাড় ভেঙে তা প্রবাহিত হয় উৎপাদনে,  কর্মসংস্থানে এবং দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে। এর ব্যত্যয় হলে তারল্যের পাহাড় গড়ে উঠলেও তা দেশের প্রকৃত উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারছে না।

বাংলাদেশে নতুন প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই)  আনতে পারলে ১.৫  শতাংশ প্রণোদনা দেওয়ার একটি উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে সরকার। দেশে কিংবা প্রবাসে বসবাসরত যে কোনো বাংলাদেশি এই প্রণোদনা পেতে পারেন। এই লক্ষ্যে ‘বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) প্রণোদনা স্কিম’  নামে একটি নীতিমালার খসড়া প্রণয়ন করছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ  (বিডা)। এই প্রণোদনা দেওয়ার জন্য প্রাথমিকভাবে ৭৫ লাখ ডলারের একটি তহবিল গঠন করবে সরকার। এটি গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে  বাংলাদেশে আসা মোট ইক্যুইটি বৈদেশিক বিনিয়োগ প্রবাহের ১.২৫ শতাংশ। ওই অর্থবছর মোট ইক্যুইটি এফডিআই প্রবাহের পরিমাণ ছিল প্রায় ৬০ কোটি ডলার। খসড়া নীতিমালায় বলা হয়েছে,  এই প্রণোদনা পেতে কমপক্ষে ১০ লাখ ডলারের নতুন ইক্যুইটি বিনিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। তবে অর্থ মন্ত্রণালয় প্রণোদনাযোগ্য সব বিনিয়োগে ১ শতাংশ হার নির্ধারণের পক্ষে মতামত দিয়েছে। বিডা খসড়াটি চূড়ান্ত করছে বলে নিশ্চিত করেছে। সংস্থাটির মতে, এ পদক্ষেপের মূল লক্ষ্য দেশে নতুন ইক্যুইটি পুঁজির প্রবাহ বাড়ানো।

বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন জানান, রেমিটেন্স ও রপ্তানির কিছু খাতে প্রণোদনা দেওয়ার ধারণা থেকে আমরা এফডিআই আনার ক্ষেত্রে যারা সহযোগিতা করবেন,  তাদেরকে প্রণোদনা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছি। আশা করি,  এতে বাংলাদেশে ফ্রেশ ইক্যুইটিতে এফডিআই প্রবাহ বাড়বে। তিনি আরও বলেন,  এ উদ্যোগ বাংলাদেশিদের বিদেশি বিনিয়োগ আনার মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করতে উৎসাহ দেবে। বিডার ব্যবসা উন্নয়ন বিভাগের প্রধান নাহিয়ান রহমান রোচি জানান,  চূড়ান্ত নীতিমালায় প্রণোদনার হার সর্বোচ্চ ১.৫% পর্যন্ত হতে পারে। তিনি পরিষ্কার করে বলেন,  এ স্কিম কেবল নতুন ইক্যুইটি বিনিয়োগের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে। বিদ্যমান শেয়ারহোল্ডারদের অতিরিক্ত শেয়ার কেনা বা সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বিনিয়োগ এখানে অন্তর্ভুক্ত নয়। তবে বিদ্যমান বিনিয়োগকারীরা যদি সম্পূর্ণ নতুন খাতে বিনিয়োগ করেন,  তাহলে তারা এ প্রণোদনার আওতায় আসবেন। ২০২৪ সালের জুন মাসে অনুষ্ঠিত বিডা গভর্নিং বোর্ডের বৈঠকে এফডিআই বৃদ্ধির বিষয়ে মতামত দেওয়ার জন্য কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। পরবর্তীতে গত ২৫ জুন অর্থ উপদেষ্টা ড.  সালেহ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে এই কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়। তার ভিত্তিতে খসড়া নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে।

নাহিয়ান রহমান নিশ্চিত করেন যে, খসড়া নীতিমালার ওপর বিডা বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সংস্থার মতামত চেয়েছে। মতামত পাওয়ার পর এটি চূড়ান্ত করে চলতি অর্থবছরই কার্যকর করার আশা করছে বিডা। এই উদ্যোগের যৌক্তিকতা তুলে ধরে তিনি বলেন,  বিভিন্ন দেশে এফডিআই আকৃষ্ট করার জন্য এ ধরনের ইনসেনটিভ (প্রণোদনা)  রয়েছে। অনেক বাংলাদেশি বিদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে। বাংলাদেশে এফডিআই আনার ক্ষেত্রে তারা যাতে প্রমোশনাল এজেন্ট হিসেবে কাজ করে বিনিয়োগ আনতে উৎসাহিত হন,  সেজন্যই এ ধরনের আর্থিক প্রণোদনার বিধান করা হচ্ছে। এ উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও বিশেষজ্ঞরা এর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে বাস্তবসম্মত মূল্যায়নের তাগিদ দিয়েছেন। বিশ্ব ব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড.  জাহিদ হোসেন বলেন,  প্রণোদনার নামে সরকারি অর্থের ব্যবহার অবশ্যই প্রত্যাশিত রিটার্নের যৌক্তিক হিসাব-নিকাশের ভিত্তিতে হতে হবে। এক্ষেত্রে প্রণোদনা কারা পাবে এবং এফডিআই আনার ক্ষেত্রে ইন্টারমিডিয়ারি (মধ্যস্ততাকারী)  হিসেবে কাজ করতে গিয়ে বিদেশিদের বিনিয়োগে আকৃষ্ট করতে এসব ব্যক্তির খরচ কেমন হবে,  সে বিষয়েও অ্যাসেসমেন্ট করা প্রয়োজন। সতর্ক করে তিনি বলেন,  রেমিটেন্সে প্রণোদনা দেওয়ার পর যেসব সিরিয়াস স্টাডি (গবেষণা) হয়েছে,  তার কোনটির ফলাফলেই প্রমাণিত হয়নি যে প্রণোদনার কারণে রেমিটেন্স বেড়েছে। তা সত্ত্বেও এক্ষেত্রে যে প্রণোদনা দেওয়া হয়,  তা দেশের গরিব পরিবারগুলো পায়। কিন্তু এফডিআই আনার ক্ষেত্রে জনগণের করের টাকা প্রণোদনা হিসেবে কারা পাবে, সেটিও বিবেচনা করতে হবে।

লেখক: অর্থনীতিবিদ, গবেষক ও সাবেক ডিন, সিটি ইউনির্ভাসিটি, ঢাকা।

বিনিয়োগবার্তা/ডিএফই//


Comment As:

Comment (0)