25367

বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ-২০২৫

পুঁজিবাজারে প্রযুক্তিগত, কাঠামোগত ও জবাবদিহিতার জায়গাগুলো চিহ্নিত করা জরুরি

নিজস্ব প্রতিবেদক: পুঁজিবাজারে প্রযুক্তিগত দূরবরতা, কাঠামোগত ঘাটতি এবং জবাবদিহিতার জায়গাগুলো চিহ্নিত করা জরুরি বলে উল্লেখ করেছেন বিএসইসি’র কমিশনার মোঃ সাইফুদ্দিন, সিএফএ। এছাড়া তথ্য প্রকাশে স্বচ্ছতা (Disclosure of Information) এখনো বাজারের অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ—যা বিনিয়োগকারীদের দীর্ঘদিন ধরে ভোগান্তির কারণ হয়ে আছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বিশ্ব বিনিয়োগ সপ্তাহ-২০২৫ এর ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে বুধবার (৮ অক্টোবর, ২০২৫) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ পিএলসি, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ পিএলসি, ডিএসই ব্রোকারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এবং সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড-এর যৌথ উদ্যোগে হাইব্রিড পদ্ধতিতে “Empowering Investors through Emerging Technology and Digital Finance” শীর্ষক এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

ডিবিএ'র প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ডিএসই’র চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম, সিএসই’র চেয়ারম্যান একেএম হাবিবুর রহমান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ডিএসই’র সহকারি মহাব্যবস্থাপক কামরুন নাহার৷ 

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন ডিএসই’র প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ আসাদুর রহমান, এফসিএস৷ তিনি বলেন, বিশ্বের পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বয়কারী ও তাদের বৈশ্বিক মান নিরূপনকারী প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অব সিকিউরিটিজ কমিশন (আইওএসসিও)-এর আহবানে প্রতি বছরের মত এবছরও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সুরক্ষা ও বিনিয়োগ সচেতন করতে নবম বারের মত ৬-১২ অক্টোবর “বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ-২০২৫” ঘোষণা করেন। 

বিশ্ব বিনিয়োগ সপ্তাহের প্রচারণায় ২০২৫ সালে IOSCO তিনটি প্রধান বিষয়কে গুরুত্ব দিয়েছে: ১. প্রযুক্তি ও ডিজিটাল ফাইন্যান্স ২. কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এবং ৩. জালিয়াতি ও কেলেঙ্কারি প্রতিরোধ৷ ৬ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে ভার্চুয়ালি প্ল্যাটফর্মে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন স্টেকহাল্ডারদের অংশগ্রহণে “বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ-২০২৫” এর শুভ উদ্ভোধন সূচিত হয়। বিএসইসি কার্যালয়ে বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।

তিনি আরো বলেন, এই সপ্তাহটি বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগকারীদের শিক্ষা ও সুরক্ষা প্রচার এবং ব্যক্তি ও সম্প্রদায়ের মধ্যে বিনিয়োগ শিক্ষা বৃদ্ধি করার একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ। আমরা আমাদের বাজারে স্বচ্ছতা এবং বিশ্বাসকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেই। সুশাসন ও জবাবদিহিতার মান বজায় রাখতে এবং নিয়ন্ত্রক কাঠামো আরও শক্তিশালী করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এর ফলে আমাদের বিনিয়োগকারীরা তাদের লেনদেনে নিরাপদ বোধ করবে এবং বিনিয়োগে আত্মবিশ্বাসী হবে। আসুন, আমরা এই বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহকে সচেতনতা, ক্ষমতায়ন এবং সহযোগিতার দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিই।

সিডিবিএল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও (সিসি) মোঃ আব্দুল মোতালেব চৌধুরী তাঁর বক্তব্যে বলেন, উদীয়মান প্রযুক্তির ব্লকচেইন ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মতো উদ্ভাবনী বিষয়গুলো গুরুত্ব পাচ্ছে। সিডিবিএল ইতোমধ্যে বিনিয়োগকারীদের সুবিধার্থে বেশ কিছু কার্যক্রম চালু করেছে, যার মধ্যে লেনদেন সংক্রান্ত তথ্য বিনিয়োগকারীদের ই-মেইল ও মোবাইল নম্বরে প্রেরণ অন্যতম।

তিনি বলেন, বিনিয়োগকারীদের নাম, ব্যাংক হিসাব, মোবাইল নম্বর বা ই-মেইল পরিবর্তনের তথ্যও বার্তার মাধ্যমে জানানো হয়। এমনকি বিও হিসাব বন্ধ হলেও সংশ্লিষ্ট তথ্য বিনিয়োগকারীরা পান। তবে এই সেবা উপভোগের জন্য সঠিক মোবাইল নম্বর ও ই-মেইল ঠিকানা প্রদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বিনিয়োগকারীদের অনুরোধ করেন, তাঁদের যোগাযোগের তথ্য ও টিআইএন নম্বর হালনাগাদ রাখতে, কারণ উৎসে করের ক্ষেত্রে টিআইএনধারীরা ছাড়ের সুবিধা পান। তিনি আরও বলেন, মোবাইল অ্যাপে শেয়ারবাজারের সংবাদ যুক্ত থাকবে, যাতে বিনিয়োগকারীরা আপডেট থাকতে পারেন। এসব সুবিধা সঠিকভাবে ব্যবহার করলে বিনিয়োগকারীরা তাঁদের বিও অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে সবসময় অবগত থাকবেন ও উপকৃত হবেন৷

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডিবিএ-এর প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলাম। মূল প্রবন্ধে তিনি বলেন, অগ্রসরমান প্রযুক্তি ও ডিজিটাল ফাইন্যান্স বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের ক্ষমতায়নের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। সচেতন ও তথ্যসমৃদ্ধ বিনিয়োগকারীই একটি টেকসই, স্বচ্ছ ও কার্যকর বাজার গঠনের মূল চালিকাশক্তি।

মূল প্রবন্ধে তিনি আরও বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর অংশগ্রহণ দ্রুত বাড়ছে এবং ডিজিটাল ট্রেডিং প্ল্যাটফর্মের ব্যবহার বিনিয়োগকে আরও সহজ করেছে। তবে এখনও অনেক বিনিয়োগকারী রিয়েল-টাইম তথ্যের সীমিত প্রাপ্যতা, আর্থিক পণ্যের জটিলতা, কম আর্থিক সাক্ষরতা এবং ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে ভুল তথ্য ও প্রতারণার ঝুঁকির মুখে রয়েছে।

 সাইফুল ইসলাম আরও বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ব্লকচেইন, ডেটা অ্যানালিটিক্স ও রোবো-অ্যাডভাইজরের মতো উদীয়মান প্রযুক্তি পুঁজিবাজারে বিপ্লব ঘটাচ্ছে। এসব প্রযুক্তি বিনিয়োগ সিদ্ধান্তকে তথ্যভিত্তিক ও নিরাপদ করছে, একই সঙ্গে বাজারে স্বচ্ছতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি করছে।

বিনিয়োগকারীদের ক্ষমতায়নের জন্য চারটি মূল কৌশলের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। সেগুলো হলো শিক্ষা ও সচেতনতা বৃদ্ধি, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার ডিজিটাল টুলস, অন্তর্ভুক্তিমূলক ডিজিটাল অংশগ্রহণ এবং স্বচ্ছ তথ্য প্রকাশ।

মূল প্রবন্ধে তিনি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে প্রযুক্তি ও তথ্যভিত্তিক বিনিয়োগ সংস্কৃতি গড়ে তোলার আহ্বান জানান, যা ভবিষ্যতে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারকে আরও গতিশীল ও বিনিয়োগবান্ধব করে তুলবে।

সব শেষে IOSCO আয়োজিত বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ-২০২৫ -এর মূল বার্তাগুলোও তুলে ধরা হয়। এতে বিনিয়োগকারীদের প্রতি বিনিয়োগের আগে যথাযথ তথ্য যাচাই ও স্বাধীনভাবে গবেষণা করার, ডিজিটাল টুল ও ফিনটেক অ্যাপ ব্যবহারে সতর্কতা ও সচেতনতা অবলম্বন এবং অনলাইন ভুয়া তথ্য বা বিভ্রান্তিমূলক প্রভাব থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেয়া হয়।

পরে সিএসই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম. সাই্ফুর রহমান মজুমদার, এফসিএ, এফসিএমএ এর সঞ্চালনায় প্যানেল আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন সিএফএ সোসাইটি-এর প্রেসিডেন্ট আসিফ খান, সিএফএ, আইসিএমএবি প্রেসিডেন্ট মাহতাব উদ্দিন আহমেদ, এফসিএমএ এবং আইসিএবি’র, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং প্রাক্তন সিনিয়র সচিব শুভাশীষ বোস৷

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম বলেন, বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে পুঁজিবাজারে নতুন নতুন প্রোডাক্ট আসছে। সাথে সাথে পুঁজিবাজারে দক্ষতা ও স্বচ্ছতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা প্রযুক্তিতে বড় বড় বিনিয়োগ করেছি। কিন্তু সেখান থেকে সুফল খুব ভালভাবে পাইনি। একটা বড় কারণ হলো পুঁজিবাজারের স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে সম্বয়ের অভাব। আর্থিকখাত ও পুঁজিবাজারের টেকনোলজি আর্কিটেক্ট করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপের জন্য যদি অবাধ তথ্য প্রবাহ না থাকে তবে প্রযুক্তির মাধ্যমে যেসব পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন তার অনেক কিছু সিস্টেম ধরতে পারছে না। এজন্য অনেক অনিচ্ছাকৃত ননকমপ্লায়েন্স হচ্ছে। এক্ষেত্রে আমাদের কাজ করার সুযোগ রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ফাইন্যান্সিয়াল প্রোডাক্ট নির্ভর করে তার আন্ডারলাইন অ্যাসেটের উপর। ডিএসই'র প্রোডাক্টগুলোর অধিকাংশই হলো ইক্যুইটি। একটি বড় অংশের কোম্পানির তথ্যগুলো সঠিকভাবে আসছে না। সেক্ষেত্রে পুরো দেশের ইকোসিস্টেম পরিবর্তনের প্রয়োজন আছে। আমাদের কার্যক্রমগুলোকে টেকনোলজি ব্যবহার করে ডিজিটাইলাইজ করতে পারলে স্বচ্ছতা বৃদ্দি পাবে। সেক্ষেত্রে শুধু পুঁজিবাজার নয় ব্যাংকিং খাত ও রাজস্ব আদায়সহ আরও সকল ক্ষেত্রে দক্ষতা বৃদ্ধি করে অর্থনীতিকে আরও দ্রুত সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবো।

চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান একেএম হাবিবুর রহমান বলেন, শেয়ারবাজারে অটোমেশন ও ডিজিটালাইজেশনের পরও কিছু অনিয়ম ও প্রতারণা ঘটেছে, যা ইঙ্গিত করে যে প্রযুক্তির সঠিক প্রয়োগ ও তদারকি এখনো পুরোপুরি কার্যকর হয়নি। তিনি বলেন, প্রযুক্তি ব্যবহারের মূল উদ্দেশ্য হলো দক্ষতা, স্বচ্ছতা ও উত্পাদনশীলতা বৃদ্ধি; তবে তা সফল করতে রিপোর্টিং, সারভেলেন্স ও মনিটরিং সিস্টেম শক্তিশালী করা জরুরি।

তিনি আরও বলেন, পুঁজিবাজারের ইকোসিস্টেমে এখনো কিছু ‘মিসিং লিংক’ রয়েছে, যা স্ক্যামের ঝুঁকি বাড়ায়। এজন্য তথ্যের সঠিক ব্যবহার, যাচাই ও ডিজিটাল টুলস ব্যবহারে দক্ষতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।
হাবীবুর রহমান উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ৭৫ শতাংশের বেশি মানুষের আর্থিক জ্ঞান সীমিত, ফলে অনেক বিনিয়োগকারী গুজবের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেন ও ক্ষতিগ্রস্ত হন।

তিনি বলেন, বিনিয়োগের আগে তথ্য যাচাই, উপযুক্ত প্রযুক্তি ব্যবহার ও আর্থিক সাক্ষরতা বৃদ্ধি করতে হবে। প্রযুক্তি সহায়ক হলেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে বিনিয়োগকারীর সচেতনতা ও জ্ঞানই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি  বিএসইসি'র কমিশনার মো. সাইফুদ্দিন, সিএফএ বলেন, আমাদের পুঁজিবাজারে একটি সম্পূর্ণ ইনভেস্টমেন্ট ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে আমরা এখন কোথায় আছি, তা স্পষ্টভাবে বুঝতে হবে। প্রযুক্তিগত দিক থেকে আমাদের বর্তমান অবস্থা, কাঠামোগত ঘাটতি এবং জবাবদিহিতার জায়গাগুলো চিহ্নিত করা জরুরি। তথ্য প্রকাশে স্বচ্ছতা (Disclosure of Information) এখনো বাজারের অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ—যা বিনিয়োগকারীদের দীর্ঘদিন ধরে ভোগান্তির কারণ হয়ে আছে।

তিনি বলেন, পুঁজিবাজারের প্রযুক্তিগত কাঠামোয় রয়েছে এক্সচেঞ্জ ও অন্যান্য স্টেকহোল্ডারগণ যেমন সিডিবিএল, সিসিবিএল ইত্যাদি। কিন্তু এই প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে এখনো যথাযথ যোগাযোগ ও সমন্বয়ের অভাব আছে। এখন সময় এসেছে সব প্রতিষ্ঠানের একসাথে সমন্বয় করে কাজ করার।

তিনি আরও বলেন, বিএসইসি সম্প্রতি একটি বড় উদ্যোগ নিয়েছে—এসবিআরএম (Extended Business Reporting Model) ফরম্যাটে আর্থিক প্রতিবেদন দাখিলের ব্যবস্থা চালু করার। এটি একটি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন মেশিন-রিডেবল ফরম্যাট, যা আইএফআরএস স্ট্যান্ডার্ড অনুসারে তৈরি। এতে গবেষণা, বিশ্লেষণ, এবং নজরদারি অনেক সহজ হবে। এটি করতে হলে অডিটরসহ সকল স্টেকহোল্ডারদের সহযোগিতার প্রয়োজন।

প্রোডাক্ট ডাইভার্সিফিকেশন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অনেকে প্রোডাক্ট ডাইভার্সিফিকেশনের কথা বলেন, কিন্তু প্রকৃত অর্থে এটি ইনভেস্টেবল অ্যাসেট বা বিনিয়োগযোগ্য সম্পদের প্রসার ঘটানো বোঝায়। কেবল নতুন পণ্য নয়, এমন সম্পদ তৈরি করতে হবে যেখানে মানুষ তার ভবিষ্যতের প্রবৃদ্ধি দেখতে পাবে।

তিনি বলেন, বাস্তবতা হচ্ছে বাজারের অংশগ্রহণ কমছে, ফলে সম্পদের বৈষম্য বাড়ছে। যাঁরা পুঁজিবাজারে আছেন তাঁদের সম্পদ বাড়ছে না, বরং বাজারের আকার বছরে প্রায় ৩ শতাংশ হারে সঙ্কুচিত হচ্ছে, যা দেশের সামগ্রিক প্রবৃদ্ধির বিপরীত চিত্র। এখনই সময় যৌথভাবে দায়িত্ব নেওয়ার। আর্থিক ইকোসিস্টেমকে পুনর্গঠনের এই দায়িত্ব অত্যন্ত পবিত্র। যত আত্মপক্ষ সমর্থনই করা হোক, বাস্তব ফলাফলই আসল মানদণ্ড।

তিনি বলেন, প্রযুক্তি এখন আমাদেরকে নতুনভাবে গড়ে ওঠার সুযোগ দিয়েছে। আগে যেসব কাজে সীমাবদ্ধতা ছিল, আজ তা সম্ভব। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ও আধুনিক প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে আমরা যদি উদ্যোগ নিই, তাহলে পুরো কাঠামোকে বদলে দেওয়া সম্ভব। আসুন, আমরা সবাই মিলে সেটি বাস্তবায়ন করি।

সব শেষে সমাপণী বক্তব্য দেন ডিএসই’র পরিচালক মেজর জেনারেল (অব:) মোহাম্মদ কামরুজ্জাান, পিএইচডি৷ সমাপণী বক্তব্যে তিনি বলেন, আমরা যে সকল টেকনোলজি ব্যবহার করি সেগুলো আমাদের নিজেদের তৈরি করা শিখতে হবে। সেটি যদি আমরা না করি আমরা প্রযুক্তি সরবরাহকারীদের অধিনস্ত হয়ে থাকবো। আমাদের নতুন প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ করে এ সকল কাজে যুক্ত করতে হবে। তাহলেই আমরা প্রযুক্তিতে উন্নত হতে পারবো, যা আমাদের দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

বিবা/শামীম//


Comment As:

Comment (0)