মুনতাসির মামুন (2)

হাইওয়েগুলোকে বাঁধামুক্ত ও প্রশস্ত করতে হবে

প্রকৌশলী মুনতাসির মামুন: একটি দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা যত উন্নত, সে দেশ তত উন্নত। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হলে মানুষের যাতায়ত দ্রুত, সহজ ও আরামদায়ক হয়, কৃষি পণ্য ও গার্মেন্টঁসসহ অন্যান্য মালামাল ও যন্ত্রপাতি পরিবহন দ্রুত হয়। একইসঙ্গে খরচ কম পড়ে, বড বড শহরের উপর চাপ কম পড়ে এবং পরিবেশ দূষন কম হয় এবং দূর্ঘটনা অনেক কমে যায়। আর এসব লক্ষ্য অর্জনের জন্য দরকার বাঁধামুক্ত এবং প্রশস্ত হাইওয়ে।

নিন্মোক্ত উপায়ে এই লক্ষ্য বাস্তবায়ন করা যেতে পারে:

১। হাইওয়ের উপর থেকে হাটবাজার ও বাস স্টপেজ উঠিয়ে দিতে হবে, যেখানে উঠানো সম্ভব নয় সেখানে ফ্লাইওভার নির্মান করতে হবে। যেসব বাস মধ্যবর্তী শহর হতে যাত্রী ওঠা-নামা করাবে সেগুলোর জন্য হাইওয়ে থেকে রাম্প থাকবে এবং রাম্পের অদূরে বাসষ্ট্যান্ড নির্মাণ করতে হবে।

২। হাইওয়েগুলোকে চার লেনে উন্নীত করতে হবে এবং মধ্য ডিভাইডার থাকবে। ডিভাইডের কারনে মুখামুখি সংঘর্ষ হবে না এবং দূর্ঘটনা অনেকাংশ কমে যাবে- অনেক জীবন রক্ষা পাবে।

৩। পাঁচ কিলোমিটার পরপর স্পীড সাইন দিতে হবে এবং সর্বোচ্চ স্পীড হবে ১০০ কিলোমিটার/ঘন্টা। কেউ এই গতি সীমা অতিক্রম করলে দশ হাজার টাকা জরিমানার ব্যবস্থা রাখতে হবে, ১০০ এর কম গতির গাড়ীগুলো প্রথম লেনে চলবে এবং যেগুলো ১০০তে চলাচল করবে সেগুলো ২য় লেনে চলবে।

৪। দূর্ঘটনা রোধে রিক্সা, সিএনজি ও ইন্জিনচালিত অন্যান্য কম গতির যানবাহন হাইওয়েতে চলাচল সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে।

৫। ট্রাকগুলো যাতে অতিরিক্ত মালামাল বহন না করতে পারে তার জন্য ৫০ কিলোমিটার পর পর ওজন ষ্টেশন নির্মান করতে হবে, অতিরিক্ত ওজন বহন করলে ২৫০০০ টাকা জরিমানার ব্যবস্থা রাখতে হবে, ক্যামেরার ব্যবস্থা রাখতে হবে, যাতে পুলিশ ঘুষ খেয়ে বেশি ওজেনর গাড়ী ছেড়ে দিতে না পারে, এতে হাইওয়ে গুলো দীর্ঘস্থায়ী হবে।

৬। হাইওয়েগুলোতে পটহোল বা ছোট ছোট ফাটল দেখার সাথে সাথে মেরামত করে ফেলতে হবে, তাতে রাস্তাগুলো কম খরচে দীর্ঘস্থায়ী করা যাবে।

৭। হাইওয়েতে ষ্টপেজ না থাকলে জায়গায় জায়গায় চাঁদাবাজিও বন্ধ হয়ে যাবে, এতে  কৃষকরা কৃষি পণ্যের সঠিক মূল্য পাবে এবং শহরবাসীও কম মূল্যে শাক-সবজি, ফলমূলসহ অন্যান্য কৃষিপণ্য ভোগ করতে পারবে।

৮। চলাচল বাধামুক্ত হলে ১০০ কিলোমিটার দূর থেকে মানুষ অফিস ও ব্যবসা বানিজ্য পরিচালনা করতে পারবে। এতে রাজধানীসহ অন্যান্য বড শহরগুলোর উপর চাপ কমে যাবে, পরিবেশ রক্ষা পাবে এবং মানুষের জীবন শান্তিপূর্ণ হবে।

৯। চারলেন করার অর্থের সংস্থান না থাকলে পাবলিক- প্রাইভেট পার্টানারশীপের মাধ্যমে করা যেতে পারে, তাও সম্ভব না হলে ১০ কিলোমিটার পর পর দ্রুতগামী গাড়ীর জন্য ২ কিলোমিটার করে পাসিং লেন নির্মান করা যেতে পারে। তাও সম্ভব না হলে সবগুলো হাইওয়েতে ডিভাইডার নির্মান করে এবং হাট বাজার ও বাস ষ্টপেজ উঠিয়ে দিয়ে অন্যান্য বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করা যেতে পারে।

লেখক:  পিইন্জি (কানাডা) পিএমপি।

বিনিয়োগবার্তা/এমএম/এসএএম//


Comment As:

Comment (0)