সৌদি আরবের স্টার্টআপ

স্টার্টআপ ব্যবসায় শতকোটি ডলার বিনিয়োগ সৌদির

ডেস্ক রিপোর্ট: জ্বালানি তেল নির্ভরশীলতা কমিয়ে অর্থনীতিকে বৈচিত্র্যময় করতে প্রযুক্তি ও স্টার্টআপ ব্যবসার দিকে ঝুঁকছেন সৌদি প্রধানমন্ত্রী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। এরফলে সৌদি আরব ঘিরে মনোযোগী হয়ে উঠছে স্টার্টআপ বিনিয়োগকারীরা। ম্যাগনিটের তথ্য-উপাত্তে দেখা গেছে, ২০২২ সালে প্রায় শতকোটি ডলার বিনিয়োগ পেয়েছে স্টার্টআপগুলো। পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় যা ৭২ শতাংশ বেড়েছে। খবর: দ্য ন্যাশনাল।

স্টার্টআপ ডাটা সরবরাহকারী প্লাটফর্ম ম্যাগনিটের ভেঞ্চার ক্যাপিটাল রিপোর্টে দেখা গেছে, গত বছর সৌদি স্টার্টআপগুলো ১৪৪টি চুক্তিতে ৯৮ কোটি ৭০ লাখ ডলার বিনিয়োগ পেয়েছে। একই সময়ে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) সর্বোচ্চ ১১৯ কোটি ডলার বিনিয়োগ পেয়েছে। আরব বিশ্বে তৃতীয় সর্বোচ্চ ৫১ কোটি ৭০ লাখ ডলার বিনিয়োগ পেয়েছে মিসর। এরই ধারাবাহিকতায় গত বছর দেশটির স্টার্টআপ তহবিল বেড়েছে ৭২ শতাংশ, অর্থের অংকে যার পরিমাণ ৯৮ কোটি ৭ লাখ ডলার। খবর: রয়টার্স।

ম্যাগনিটের প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়, মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা (মেনা) অঞ্চলে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল লেনদেনের ক্ষেত্রে আরব বিশ্ব তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে সৌদি। সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী ফিলিপ বাহোশি বলেন, ‘ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ইকোসিস্টেম মেনা অঞ্চলের বাজারগুলোর অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব দেখেনি। যদি আমরা তৃতীয় প্রান্তিকের দিকে তাকাই, তাহলে অন্যান্য উদীয়মান বাজারের মতো একই প্রবণতা দেখি বছরের পর বছর ধরে। আমরা দেখি তহবিল ও লেনদেন ধীরে ধীরে পিছিয়ে যাচ্ছে। এ সত্ত্বেও সৌদি ভিশন ২০৩০-এর লক্ষ্যমাত্রা অনুসারে বিনিয়োগ আর্কষণের জন্য জোরালো প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

জ্বালানি তেলের ওপর নির্ভরশীলতা কমানোর পাশাপাশি অর্থনীতিকে বৈচিত্র্যময় করা, চাকরির বাজার সম্প্রসারণ এবং দক্ষতাসম্পন্ন মেধাবীদের আকর্ষণ করতে সৌদি আরব তাদের স্টার্টআপসহ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতগুলোকে সম্প্রসারণ করতে মনোযোগী। সৌদি ভিশন ২০৩০ পরিকল্পনার শক্তিশালী স্তম্ভ হিসেবে প্রযুক্তিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। দেশের অর্থনীতিতে বৈচিত্র্যময়তার সন্নিবেশ ঘটিয়ে তেলের ওপর নির্ভরতা কমানোর বিষয়টি মূলত সৌদি আরবের জাতীয় কৌশলের অংশ হিসেবেই গৃহীত। তাই রিয়াদ উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করছে এবং খাতটির উন্নয়ন ও সম্প্রসারণে দেশী ও বিদেশী উভয় প্রতিষ্ঠানের থেকে বিনিয়োগ চাইছে।

ম্যাগনিটের তথ্যানুসারে, সৌদি আরব ঘিরে গত বছর বিনিয়োগকারীদের পছন্দের খাত ছিল ফিনটেক। এ খাতে চুক্তির সংখ্যা ২৮টি, অর্থের অংকে এ পরিমাণ ২৩ কোটি ৯ লাখ ডলার, যা মোট বিনিয়োগের ২৪ শতাংশ। স্টার্টআপের পর দ্বিতীয় বৃহত্তম বিনিয়োগ গিয়েছে সৌদির খাদ্য ও পরিষেবা খাতের ঘরে, অর্থায়নের পরিমাণ ১৮ কোটি ৭৫ লাখ। তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে পরিবহন ও লজিস্টিকস। এ খাতে বিনিয়োগ এসেছে ১৮ কোটি ডলার।

বিশ্বের শীর্ষ তেল রফতানিকারক দেশটি গত বছর খাদ্য ও পানীয়ভিত্তিক স্টার্টআপ ফুডিকস, ফিনটেক তামারা এবং পরিবহন ও লজিস্টিক স্টার্টআপ ট্রুকারের সঙ্গে চুক্তি করে। এ তিন মেগা চুক্তির মূল্য ১০ কোটি ডলারেরও বেশি। প্রতিবেদনে যোগ করা হয়েছে, মূলত তিনটি মেগা চুক্তিই ৩৭ শতাংশ বৃদ্ধির জন্য দায়ী।

২০২২ সালে রেকর্ড ১০৪ জন বিনিয়োগকারী সৌদি আরবের স্টার্টআপ ব্যবসাগুলোয় বিনিয়োগ করে। ফলে এ খাতে বার্ষিক বিনিয়োগ ৩০ শতাংশ বাড়ে। যদিও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ৭৯ শতাংশই সৌদি আরবের ছিলেন।

বিনিয়োগবার্তা/এসএএম//


Comment As:

Comment (0)