মিহির কুমার রায়

উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফল বনাম উচ্চশিক্ষায় ভর্তি যুদ্ধ

ড: মিহির কুমার রায়ঃ উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা হলো উচ্চশিক্ষার প্রবেশ দাড় বিধায় এর ফলাফরের উপর শীক্ষার্থীর ভবিষ্যত অনেকাংশে নির্ভরশীল। 

বিগত ৮ই ফেব্রোয়ারী বুধবার দুপুরে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপুমনি এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করেন। এই পাবলিক পরীক্ষা ২০২২ সালের ৬ নভেম্বর শুর হয়েছিল। এতে ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা বোর্ড ও কারিগরি বোর্ড মিলিয়ে ১২ লাখ ৩ হাজার ৪০৭ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছিল যার মধ্যে ছয় লাখ ২২ হাজার ৭৬৯ জন ছাত্র ও পাঁচ লাখ ৮০ হাজার ৬১১ জন ছাত্রী। এ বছর দুই হাজার ৬৪৯টি কেন্দ্র ও ৯ হাজার ১৮১টি প্রতিষ্ঠানে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। 

এই ফলাফলের একটি বৈশিষ্ঠ হলো গতবারের তুলনায় এবারে পাসের হার ও জিপিএ ৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে , যেমন এবার পাস করেছে ৮৫. ৯৫ শতাংশ শিক্ষার্থী, গত বছর এই হার ছিল ৯৫ . ২৬ শতাংশ , সেই হিসাবে এবার পাসের হার কমেছে ৯ .৩১ শতাংশ, অন্যদিকে এবার জিপিএ ৫ পেয়েছে ১ লাখ ৭৬ হাজার ২৮২ শিক্ষার্থী যা গত বছর ছিল ১ লাখ ৮৯ হাজার ১৬৯ শিক্ষার্থী , জিপিএ ৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে ১২ হাজার ৮৮৭ জন। বিষয় হিসাবে ইংরেজী ও অর্থনীতিতে ফেলের হার তুলনামুলক ভাবে বশেী , করোনা মহামারির কারণে এসএসসি ও এইচএসসির পুরো শিক্ষাপঞ্জি এলোমেলো হয়ে গেছে যেমন ২০২১ সালে নেয়া হয়েছিল তিন বিষয়ে পরীক্ষা। 

২০২২ সালের পরীক্ষায় বিষয় বাড়লেও তা হয়েছে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে। বিভিন্ন বোর্ডে ইংরেজি প্রথম পত্রে প্রায় ১০ শতাংশ এবং দ্বিতীয় পত্রে ১৭ শতাংশেরও বেশি পরীক্ষার্থী ফেল করেছেন, বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা তিন বিভাগের পরীক্ষার্থীরাই ইংরেজিতে খারাপ ফল করায় সামগ্রিক ফলাফলে প্রভাব পড়েছে, এছাড়া অর্থনীতি প্রথম পত্রেও প্রায় ২১ শতাংশ শিক্ষার্থী ফেল করেছে।

এবার পাসের হার কমার মূল কারণ বেশি বিষয়ে পরীক্ষা হওয়া। পাসের হার কমার এ ধারা আরো কয়েক বছর থাকবে। কেননা অটোপাশ ও তিন বিষয় পরীক্ষা নেয়ার মধ্য দিয়ে পাসের হার অনেক বেড়েছিল।২০২২ সালে এইচএসসি পরীক্ষা পুনর্বিন্যাস পাঠ্যসূচি অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হয়। 

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি পরীক্ষা ছাড়া বাকি ১২ বিষয়ে পরীক্ষা নেয়া হয়। এর আগের বছর অর্থাৎ ২০২১ সালে পরীক্ষা হয় শুধু নৈর্বাচনিক তিন বিষয়ে। আর ২০২০ সালে করোনা মহামারির কারণে পরীক্ষা না নিয়ে সবাইকে অটোপাশ দেয়া হয়।

সাধারণত প্রতি বছর এপ্রিলে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হলেও বন্যাসহ বিভিন্ন কারণে পিছিয়ে যাওয়া এই পাবলিক পরীক্ষা ২০২২ সালের ৬ নভেম্বর শুরু হয়। গত বছরের তুলনায় কমেছে শতভাগ পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা। আর বেড়েছে শূন্য পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা।

ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে শতভাগ পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কমেছে ৩১ শতাংশ, ২০২২ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় ২ হাজার ৬৩৭ কেন্দ্রে অংশ নেয় ৯ হাজার ১৩৯টি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা, এর মধ্যে শতভাগ পাস করেছে ১ হাজার ৩৩০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, গতবার এই সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৯৩৪, গতবারের তুলনায় শতভাগ পাস করা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কমেছে ৬০৪টি, এছাড়া এবার শূন্য পাস করা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৫০টি, যা গতবার ছিল ৫টি। 

অর্থাৎ গতবারের তুলনায় এবার শূন্য পাস করা প্রতিষ্ঠান বেড়েছে ৪৫টি। তথ্য বলছে শত ভাগ ফেল করা প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশই নন এমপিওভুক্ত, এদের মধ্যে কোনোটিতে ১ কিংবা দুজন শিক্ষার্থী, এই একজন শিক্ষার্থী ফেল করলেই শতভাগ ফেলের তকমা প্রতিষ্ঠানের গায়ে পড়ে।

এ ব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেনএবারের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় পাসের হার কমার এবং শতভাগ ফেল করা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বাড়ার পেছনে গতবারের চেয়ে বর্ধিত সিলেবাসকে কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে ।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বিলেছেন, “গতবার মাত্র তিনটি বিষয়ে পরীক্ষা হয়েছে, সংক্ষিপ্তভাবে, সেখানে বেশিরভাগই ভালো করেছে, সেজন্য আমাদের পাশের হারও প্রায় ৯৫ শতাংশ ছিল। এবার যখন ১২টি পত্রে পরীক্ষা হয়েছে, তখন সবাই তত ভালো করতে পারেনি।“সেজন্যই যে সকল প্রতিষ্ঠানে শূন্য সংখ্যক পরীক্ষার্থী পাস করেছে, সেই ধরনের প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে, এবার এইচএসসিতেও ৫০টি প্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষার্থী পাস করেনি। 

আমরা সেগুলো দেখতে গিয়ে দেখেছি, অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানই নন এমপিও ভুক্ত। অল্প কয়েকটি এমপিওভুক্ত, অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান মাদ্রাসা ছিল।“ শতভাগ ফেল করা প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়ে ওয়ার্কশপ করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, “তাদেরকে আমরা বলেছিলাম, কোন সহযোগিতা তাদের প্রয়োজন, কীভাবে তাদেরকে আমরা পাশে দাঁড়াতে পারি, যেন তাদের শিক্ষার্থীরা কৃতকার্য হতে পারে।

তাদের কাছে আমরা গত কয়েক বছরের তথ্য চেয়েছি, আমরা যা যা চেয়েছি তারা তা পাঠিয়েছে। আমরা মার্চের প্রথম সপ্তাহে তাদেরকে নিয়ে একটি ওয়ার্কশপ করব। সেখানে দক্ষ অভিজ্ঞ প্রতিষ্ঠান প্রধানদের তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য এবং কোন কোন ক্ষেত্রে কীভাবে আমরা সহযোগিতা করতে পারব সেই বিষয়গুলো দেখব।

ফলাফল পর্যালোচনায় দেখা যায় এবার ছাত্রীদের পাসের হার ৮৭. ৪৮ শতাংশ অর্থ্যাৎ ৫ লাখ ৬৭ হাজার ৮৬৫ জন ছাত্রী পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছেন প্রায় পাঁচ লাখ, অন্যদিকে ছাত্রদের পাসের হার ৮৪ . ৫৩ শতাংশ অর্থ্যাৎ ৬ লাখের বেশি ছাত্র পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছেন ৫ লাখের বেশি, আর ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে উত্তীর্ণ মোট ছাত্রের চেয়ে ৩৭ হাজার ২৩২ জন বেশি ছাত্রী উত্তীর্ণ হয়েছে এবং ছাত্রের চেয়ে ১৫ হাজার ১৬০ জন বেশি ছাত্রী জিপিএ ৫ পেয়েছে। এবার কমেছে জিপিএ ৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা। 

২০২২ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়েছে ১ লাখ ৭৬ হাজার ২৮২ জন শিক্ষার্থী। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৮৯ হাজার ১৬৯ জন। অর্থাৎ জিপিএ ৫ পাওয়া শিক্ষার্থী কমেছে ১২ হাজার ৮৮৭ জন। বরাবরের মতো এবারো জিপিএ ৫ পাশের হারে এগিয়ে রয়েছে মেয়েরা, সব শিক্ষা বোর্ডে উত্তীর্ণ মোট ছাত্রের চেয়ে ২ . ৯৫ শতাংশ বেশি ছাত্রী পাস করেছে, আর ১৫ হাজার ১৬০টি বেশি জিপিএ ৫ পেয়েছে ছাত্রীরা। 

৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে পাসের হারে শীর্ষে অবস্থানে আছে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড সেখানে গড় পাসের হার ৯০.৭২ শতাংশ। অন্যদিকে পাসের হার কম দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ড, ৭৯ . ০৮ শতাংশ।

পাসের হার কম হওয়ার কারণ ইংরেজি পরীক্ষার ফল তুলনামূলক খারাপ হওয়ায় এর প্রভাব পড়েছে গড় পাশের হারে। । এই ফল দ্বারা বোঝা মুশকিল শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মানসিক তৃপ্তি বলতে কিছু আছে কি ?। সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে লিখিত ও সেমি অটোপাসের আদলে পাওয়া জিপিএ ফলাফল স্বস্তি দিলেও মূল প্রতিযোগিতা শুরু হবে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায়। 

পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী এবার ১ লক্ষ ৭৬ হাজার ২৮২ জন শীক্ষার্থী জিপিএ ৫ পেয়েছে । এই বিশালসংখ্যক শিক্ষার্থী দেশের ৫২টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ৬০ হাজার আসনের বিপরীতে ভর্তি পরীক্ষার জন্য লড়বেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অধীন ৮৮১টি কলেজে স্নাতকে ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৮৫টি আসন রয়েছে, আবার দেশের সরকারী নূতন পোরাতন মিলে ২০ টিরও বেশী মেডিকেল কলেজ রয়েছে যেগুলোতে ভর্তির আসন সংখ্যা ৫ হাজারের কাছাকাছি রয়েছে যে খানে ভর্তি যুদ্ধ খুবি প্রতিযোগীতামূলক বিশেষত সেরা ছাত্রদের মধ্যে। 

যারা সরকারী কাঠামোতে ভর্তির স্থান করে নিতে পারবে না তারারাই বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় (বর্তমানে ১০৮টি) বেসরকারী কলেজ গুলোতে ভর্তিল জন্য আসবে যা অত্যন্ত ব্যয়বহুল বিধায় আর্থিক ভাবে দুর্বল শ্রেনীর ছাত্রদের জন্য কষ্ঠেরত বটেই। 

এখন আসা যাক বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে ভর্তির পদ্বতি গত বিষয়াদি নিয়ে যা অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় তাদের নিজস্ব ভর্তি যোগ্যতা ও নিয়মের বলয়ে ভর্তি পরীক্ষা নেয় যেখানে সুনির্দিষ্টভাবে একক কোনো
নিয়ম না থাকায় । 

ফলে কাঙ্কিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় টিকতে হলে নির্দিষ্ট প্রশ্নপত্রের কাঠামো ঘিরে শিক্ষার্থীদের প্র¯ুÍতি নিতে হয়। তুমুল প্রতিযোগিতাপূর্ণ এসব ভর্তি পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরে মাত্র ০. ১ পার্থক্য থাকলেই কেউ সুযোগ পাচ্ছেন আবার কেউ অকৃতকায হচ্ছেন। আবার দেখা যায়, এসব ভর্তি পরীক্ষায় টিকে যাওয়া শিক্ষার্থীরা মূল পরীক্ষায় অকৃতকার্য শিক্ষার্থীর চেয়ে কম নম্বর পেয়েও মেধাক্রম স্কোরকে এগিয়ে নেন। 

দেখা যায় যে দেশের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই দশকেরও
বেশি সময় ধরে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএ স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভর্তি পরীক্ষার স্কোরে যোগ হচ্ছে। ফলে কম জিপিএ পাওয়া শিক্ষার্থী মূল ভর্তি পরীক্ষায় অনেক সময় বেশি নম্বর পেয়েও মেধা স্কোরে টিকতে পারছেন না। 

কিন্তু কেন এই নিয়ম, তার সুনির্দিষ্ট সন্তোষজনক ব্যাখ্যা নেউ দেয় নি। বরং এসব জিপিএ স্কোর থাকার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো একটি নির্দিষ্ট গ্রুপকে উচ্চশিক্ষার সুযোগ করে দিচ্ছে। বিশ বছর আগেও যেখানে জিপিএ-৫ পাচ হাজারের ঘরে থাকত, সেটি প্রায় ২০ গুণ বৃদ্ধি পেয়ে ঘরে ঘরে জিপিএ-৫ এ ঠেকছে, যা দেশের শিক্ষার মানকে সংকুচিতই করছে না, বরং রাষ্ট্রকে ভুল পথে পরিচালিত করার প্রয়াস জোগাচ্ছে। জিপিএ-৫ কে যে বা যাহারা মেধার মানদন্ড মনে করছেন, তাঁরা হয়তো জানেন না, এই জিপিএ-৫ পাওয়া মানেই মেধাবী নয়, এটি কেবল একটি নির্দেশক হতে পারে, সেটি কিছুতেই একজন শিক্ষার্থীর মেধা যাচাইয়ের মাধ্যম হতে পারে না। 

সৃজনশীল চিন্তাধারায় বিশ্বাসী শিক্ষার্থী গড়ায় নজর না দিয়ে কেবল নিয়মতান্ত্রিক প্রশ্ন আয়ত্ত করে পরীক্ষার খাতায় উগরে দিয়ে জিপিএ-৫ বাগিয়ে নেওয়া গেলেও আমাদের শিক্ষার্থীরা কতটা কম জানেন, তা নিয়ে যেমন প্রশ্ন থাকছে, তেমনি দেশের বাইরে যখন উচ্চশিক্ষায় আসছেন তখন তাঁরা ঠিকই টের পাচ্ছেন। প্রতিবেশী দেশ যেমন ভারত ,নেপালশ
তারা তাদের উচ্চ শিক্ষার ভর্তিও বিষয়টি খুবি মানসম্মত ভাবে নিয়ন্ত্রন করে থাকে যেখানে মেধার প্রকৃত মূল্যায়ন হয় । 

তাহলে আমাদের যে সকল বিষয়ের উপর নজর দেয়া উচিত তা হলো

১. বিশ্বের অনেক বিশ্ববিদ্যালয় স্নাতক ভর্তি পরীক্ষায় পূর্বের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রাপ্ত জিপিএ মূল ভর্তি পরীক্ষায় প্রাপ্ত স্কোরে বিবেচনায় নেয় না অতছ বাংলাদেশে এই নিয়ম চালু রখেছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরি কমিশন কিংবা শিক্ষা মন্ত্রণালয় কেউ এই বিষয়টি নিয়ে কথা বলেনি। এর মধ্য দিয়ে দেশে এক শ্রেণি শিক্ষার্থীদের সুবিধা দেয়া হচ্ছে, অন্যদিকে বঞ্চিত হচ্ছে কম জিপিএ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা অথচ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে প্রতিযোগিতা করার অধিকার সব শিক্ষার্থীদের হওয়া উচিত, প্রকৃত মেধাবীদের বের করে আনার দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিক। তারা যে প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা করে, সেই প্রতিযোগিতার আরও একটু আধুনিকায়নের সুযোগ নিক।

২. করোনা মহামারীর পরিবর্তিত পরিস্থিতি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, শ্রেণীকক্ষের মূল্যায়ন, অবিরত মূল্যায়ন বিষয়টি অত্যন্ত জরুরি। দেশের শিক্ষক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং সর্বোপরি পুরো ব্যবস্থা অবিরত মূল্যায়ন পদ্ধতির জন্য প্রস্তুুত করতে হবে, উচ্চশিক্ষায় ভর্তির ক্ষেত্রে যাতে বাস্ববধর্মী পরীক্ষা নেওয়া হয় সে বিষয়টি লক্ষ্য রাখতে হবে। কারন শিক্ষার্থীরা বহুদিন যাবৎ প্রকৃত লেখপড়ার সঙ্গে সেভাবে সংযুক্ত নেই। পরীক্ষা দিয়ে ফলাফল অর্জন করার মধ্যে যে আনন্দ উচ্ছশিক্ষার ক্ষেত্রে সেটি যাতে বহাল থাকে সেদিকে সবার দৃষ্টি দিতে হবে।

৩. পাসের হারে এক বোর্ড থেকে আরেক বোর্ডের এগিয়ে থাকা কিংবা পিছিয়ে যাওয়ার কারণ কোন বছরেই খতিয়ে দেখা হয় না যা সঠিক নয়। এ ব্যাপারে প্রতিটি বোর্ডেই এজন্য একটি গবেষণা সেল থাকা উচিত।সর্বশেষে বলা যায় উচ্চশিক্ষা উন্মুক্ত রাখা উচিত কেবলমাত্র মেধাবিদের জন্য এবং অন্যান্য দের জন্য কারিগরী/উদ্যোগক্তা উন্নয়নে ক্ষিাার প্রতি জোর দেয়া উচিত ।

লেখক: অধ্যাপক (অর্থনীতি), ডিন (ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ) ও সিন্ডিকেট সদস্য, সিটি ইউনিভার্সিটি, সাভার, ঢাকা।

বিনিয়োগবার্তা/এমআর/এসএএম//


Comment As:

Comment (0)