আল হুদা সেন্টার অব ইসলামিক ব্যাংকিং অ্যান্ড ইকোনমিকস

আল হুদা সেন্টার অব ইসলামিক ব্যাংকিং অ্যান্ড ইকোনমিকসে প্রতিবেদন

বিশ্বব্যাপী ইসলামী ব্যাংকিংয়ের সম্পদ ৪ ট্রিলিয়ন ডলার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ইসলামী ব্যাংকিং। মুসলিমপ্রধান দেশগুলোর পাশাপাশি অমুসলিম দেশগুলোয়ও বাড়ছে এর আধিপত্য। যার কারণে বৈশ্বিকভাবে ইসলামী ব্যাংকিংয়ের সম্পদ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ ট্রিলিয়ন ডলার। সম্প্রতি আল হুদা সেন্টার অব ইসলামিক ব্যাংকিং অ্যান্ড ইকোনমিকস প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। খবর অ্যারাবিয়ান বিজনেস।

বিশ্বের বড় অংশজুড়েই দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য ইসলামী ব্যাংকিংকে সম্ভাব্য উপায় হিসেবে দেখা হচ্ছে। মালয়েশিয়া থেকে আফ্রিকা পর্যন্ত দেশগুলোয় ইসলামী ব্যাংকিং দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ অংশে পরিণত হয়েছে। ২০২১ সালে শিল্পটিতে সম্পদের পরিমাণ ছিল ৩ দশমিক ৬ ট্রিলিয়ন ডলার। যদি সবকিছু এমন গতিতে থাকে। তবে ২০২৫ সালের মধ্যে খাতটি ৫ ট্রিলিয়নে উন্নীত হবে।

ইসলামী ব্যাংকিংয়ে প্রবৃদ্ধির প্রধান কারণ শরিয়াহনির্ভর অর্থ লেনদেনের প্রতি চাহিদা বৃদ্ধি। পাশাপাশি মুসলিম সংখ্যাগুরু দেশগুলোয় জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং ইসলামী ব্যাংকিংয়ের সুবিধা সম্পর্কে সচেতনতার প্রভাবও রয়েছে। অমুসলিম দেশগুলোয় ইসলামী ব্যাংকিংয়ের প্রসার নতুন সম্ভাবনা খুলে দিয়েছে খাতটির জন্য। প্রমাণ করে খাতের সক্ষমতাও।

ইসলামী অর্থ ব্যবস্থার দুই প্রধান চালিকাশক্তি হলো ইসলামী ব্যাংকিং ও সুকুক। ২০২২ সালের জরিপ অনুযায়ী, ইসলামী ব্যাংক খাতে মোট সম্পদের ৪৪ শতাংশের অবদান গালফ কো-অপারেশন কাউন্সিল (জিসিসি) ভুক্ত দেশগুলোর। ২৬ দশমিক ৩ শতাংশের অবদান মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা (এমইএনএ) এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অবদান ২৪ শতাংশ। ইউরোপ, এশিয়া, আমেরিকা ও আফ্রিকা মিলিয়ে রয়েছে বাকি অংশ।

ইসলামী অর্থ ব্যবস্থা অনেকটাই বিচ্ছিন্নভাবে কার্যক্রম পরিচালিত করছে। এশিয়া ও আফ্রিকার মতো অঞ্চলগুলোয় প্রবৃদ্ধির গতি উচ্চ থাকলেও প্রতিযোগিতা তুলনামূলক কম। সেখানে স্থানীয়দের আধিপত্য বেশি। বিদেশী বিনিয়োগকারী কম। অন্যদিকে, জিসিসিভুক্ত অঞ্চলে ইসলামী ব্যাংকিং অনেক বেশি প্রতিযোগিতা পূর্ণ। ফলে বিদেশী বিনিয়োগকারীর সংখ্যাও প্রচুর। 

ইসলামী অর্থ ব্যবস্থার অধীনে মোট সম্পদের ৭০ শতাংশই রয়েছে ইসলামী ব্যাংকিংয়ে। সেখানকার ১৯ শতাংশ রয়েছে সুকুক। বাকি ৫ শতাংশ ইসলামী তহবিল, ৪ শতাংশ আইএফআই ও ২ শতাংশ তাকাফুল।

ইসলামী অর্থ ব্যবস্থায় প্রযুক্তির অধিগ্রহণ শিল্পটির সম্প্রসারণকে আরো দ্রুত ত্বরান্বিত করেছে। তৈরি করেছে সৃজনশীলতা, দক্ষতা ও সরকারি সুবিধার সুযোগ। ২০২১ সালের গ্লোবাল ইসলামিক ফিনটেক প্রতিবেদন অনুসারে, মালয়েশিয়া তালিকায় শীর্ষে। ৬৪টি দেশে কার্যক্রম পরিচালনা করে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটি। 

এর আগে গত বছর রেফিনিটিভের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ২০২৬ সালের মধ্যে ইসলামী অর্থ ব্যবস্থা ৫ দশমিক ৯ ট্রিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে। বিশেষ করে মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, ইন্দোনেশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, কুয়েত, কাতার, পাকিস্তান ও বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য গতিতে বাড়ছে ইসলামী ব্যাংকিংয়ের জনপ্রিয়তা। আল হুদা সেন্টার অব ইসলামিক ব্যাংকিং অ্যান্ড ইকোনমিকসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ জুবায়ের বলেন, ‘‌ইসলামী ব্যাংকিং একটি টেকসই ও বৈধ আর্থিক লেনদেন। এটি যেকোনো বিশ্বাসের মানুষের জন্য উপকারী হয়ে উঠতে পারে।’

বিনিয়োগবার্তা/এমআর//


Comment As:

Comment (0)