জিসিসিভুক্ত দেশ

জিসিসিভুক্ত দেশগুলোর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৩ শতাংশ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যেও গালফ কো-অপারেশন কাউন্সিলভুক্ত (জিসিসি) দেশগুলোর নীতিনির্ধারকরা সফল ভূমিকা রাখছেন। বিশেষ করে জ্বালানি তেলবহির্ভূত খাতের সম্প্রসারণের প্রভাব পড়েছে এ অঞ্চলের অর্থনীতিতে। গত বছর অঞ্চলটিতে প্রবৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ৩ শতাংশে পৌঁছেছে। 

সম্প্রতি ওয়ার্ল্ড ব্যাংক গ্রুপের প্রেসিডেন্ট অজয় ভাঙ্গার সঙ্গে বৈঠক শেষে জিসিসির মহাসচিব জসিম মুহাম্মদ আল-বুদাইভি এ তথ্য প্রকাশ করেন। খবর আরব নিউজ। 

বৈঠক শেষে দেয়া বক্তব্যে আল-বুদাইভি দারিদ্র্যমুক্ত পৃথিবী গড়ে তোলা এবং টেকসই উন্নয়নে জোর দেন। এক্ষেত্রে বৈশ্বিক প্রতিবন্ধকতাগুলো মোকাবেলায় ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘‌বৈশ্বিক অর্থনীতি এ মুহূর্তে ঝুঁকিপূর্ণ পথে যাচ্ছে। বৈশ্বিক অর্থনীতির জন্যই সহনশীলতা ও সহযোগিতার প্রয়োজন বর্তমানে। সংকট মোকাবেলায় প্রয়োজন সবাইকে একসঙ্গে কাজ করা। এক্ষেত্রে বৈশ্বিক উন্নয়নের স্বার্থেই দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় চুক্তির মাধ্যমে এগিয়ে যাওয়া হয়।’

বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে জিসিসিভুক্ত অঞ্চলের দেশগুলোয় প্রবৃদ্ধি ছিল তুলনামূলক বেশি। জ্বালানি তেলবহির্ভূত খাতের সম্প্রসারণের পেছনে ২০২২ সালে অনুষ্ঠিত ফিফা বিশ্বকাপ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এর মধ্য দিয়ে কাতারের পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যের বাকি দেশগুলোর পর্যটন খাতে প্রবৃদ্ধি ঘটেছে। 

পর্যটন খাত মূলত আমিরাতের অর্থনীতির মূল ভিত্তি। নভেল করোনাভাইরাসের কারণে তৈরি হওয়া মন্থরতার পর বেশ শক্তিশালীভাবে প্রত্যাবর্তন করে এ খাত। গত বছর দুবাইয়ের হোটেলগুলোর অর্থনীতি বেশ শক্তিশালী অবস্থানে ছিল। কেননা ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার পর এ শহরে পর্যটকদের আনাগোনা বেড়েছে। সেই সঙ্গে ঠাণ্ডা আবহাওয়া আর নতুন বছরের উদযাপনও বেশ ভূমিকা রাখে। সংযুক্ত আরব আমিরাত আগামী বছর জাতিসংঘের জলবায়ুবিষয়ক সম্মেলনের আয়োজক হবে। দেশগুলোর জন্য সক্ষমতা প্রমাণের আরো এক দফা সুযোগ তৈরি হবে। পর্যটন খাত সম্প্রসারণ ঘটবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন আল-বুদাইভি। 

আল-বুদাইভি জিসিসি অঞ্চলের অগ্রগতির প্রশংসা করেন। জলবায়ু সমস্যা, প্রতিযোগিতা ও নারীশক্তির অংশগ্রহণের কথা তুলে ধরেন। ২০২২ সালে জিসিসি অঞ্চলের জ্বালানি তেলবহির্ভূত খাতে ৪ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। জিসিসি অঞ্চলের দেশগুলো অর্থনীতিতে বৈচিত্র্য আনতে কাজ করছে। বিশেষ করে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত গুরুত্ব দিয়েছে পর্যটন, ডিজিটাল ইকোনমি, শিল্পোৎপাদন ও পরিষেবা খাতে। 

এদিকে জ্বালানি তেলবহির্ভূত খাতের সম্প্রসারণের অংশ হিসেবেই জিসিসি অঞ্চল চীনের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করছে। 

কাঁচামালসামগ্রী ও বাণিজ্যিক সেবা নিয়ে দেশগুলোয় সক্রিয় চীন। গত ডিসেম্বরে হওয়া চুক্তি সে সম্পর্ককে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। তেল ব্যতীত অন্যান্য পণ্যও চুক্তির মধ্যে পালন করেছে অনুঘটকের ভূমিকা। এফটিএতে প্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও রোবোটিকসের মতো নতুন কিছু খাততে রাখা হয়েছে। যুক্ত হয়েছে উৎপাদন, পর্যটন ও মহাকাশ গবেষণা। উপসাগরীয় দেশগুলো তাদের বাণিজ্যিক ভবিষ্যতের জন্য প্রাচ্যের দিকে ঝুঁকে পড়ছে কৌশলগত দিক দিয়ে পশ্চিমা মিত্রদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থিতিশীল রেখেই। আল-বুদাইভি চীনের সঙ্গে জিসিসি অঞ্চলের সম্পর্ক শক্তিশালী করার প্রতি গুরুত্ব দিয়েছেন। 

বিনিয়োগবার্তা/এসআর//


Comment As:

Comment (0)