মিহির কুমার রায়

নির্বাচনের রাজনীতি বনাম অর্থনীতি

ড. মিহির কুমার রায়: বোস্টন কনসাল্টিং গ্রুপ বলেছে, ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ১ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি হতে যাচ্ছে। জাপানভিত্তিক পৃথিবীর বৃহত্তম আর্থিক সংবাদমাধ্যম নিক্কেই এশিয়ার (২৩ নভেম্বর, ২০২০) সংবাদ ছিল- ‘বাংলাদেশ সঠিক কারণে তার সমালোচনাকারীদের হতবাক করে দিয়েছে।

বাংলাদেশ ভারতের চেয়ে সঠিকভাবে পূর্ব এশিয়ার মডেল হওয়ার পথে হাঁটছে। মানব পুঁজিতে বাংলাদেশের বড় বিনিয়োগ ঢাকার উন্নয়ন ত্বরান্বিত করছে।’ আশা করা যাচ্ছে আগামী দ্বাদশ নির্বাচন সবার অংশগ্রহণে সম্পন্ন হবে এবং যে দলই  ক্ষমতায় আসবে জনগণ সেটা মেনে নেবে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ঘোষিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল প্রত্যাখ্যান করেছে বিএনপি, জামায়াত ও যুগপৎ আন্দোলনে থাকা সমমনা রাজনৈতিক দল ও জোট। 

এছাড়া ইসলামী আন্দোলন ও বাম রাজনৈতিক জোট একতরফা নির্বাচনী তফসিল প্রত্যাখ্যান করে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এরই অংশ হিসেবে ঘেরাও, অবরোধ ও হরতাল বিগত ২৮ অক্টোবরের পর থেকেই শুরু হয়েছে এবং তা চলমান থাকবে বলে জানিয়েছে  বিরোধী বলয়। তাদের দাবি একটাই- দলীয় সরকারের অধীনে আর নির্বাচন নয়। কেননা, বিগত দুটি নির্বাচন স্বাভাবিকভাবে অনুষ্ঠিত হয়নি।

এবারকার নির্বাচনেও স্বাভাবিক পরিবেশ নেই, তা ইসি যাই বলুক না কেন। যেমন- বিগত নির্বাচনগুলো নিয়ে কেউ কেউ মনে করেন কোনো কোনো ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন সরকারকে খুশি করার জন্য এক ধরনের অভিপ্রায় নিয়ে কাজ করেছে। ফলে সেসব ক্ষেত্রে নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। এই অবস্থায় নির্বাচন কমিশনের ওপর জনগণের আস্থা রাখার বিষয়টি নির্বাচন কমিশনকেই অর্জন করতে হবে। কিন্তু বিগত ১১টি জাতীয় নির্বাচনে ইসি নির্বাচন অনুষ্ঠিত করে রাজনৈতিক দলের আস্থাভাজন হয়েছে এমন দেখা যায়নি। সমস্যাটি গণতান্ত্রিক আচরণের ও অনুশীলনের। উল্লেখ্য, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন-২০২২’ অনুযায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ করা হয়ে থাকে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক, যা একটি স্বাধীন নিরপেক্ষ সংস্থা হিসেবে সংবিধান স্বীকৃত। 

পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে এবারের নির্বাচনে স্বাভাবিক পরিবেশ ধীরে ধীরে ফিরে আসছে, তা নিয়ে যে যাই বলুক না কেন। নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন করার ‘বাধ্যবাধকতা’য় সিইসি নির্বাচন আয়োজনের কোনো সমস্যা নেই। নির্বাচন আয়োজনে সমস্যা নেই; তবে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে সমস্যা রয়েছে। 

এখন পর্যন্ত যে আলামত পাওয়া যাচ্ছে তাতে মনে হয় প্রধান সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে নির্বাচনটা হতে যাচ্ছে এমন বলা  যাচ্ছে না। প্রধান সব রাজনৈতিক দল অংশ নিলে কেমন হয় নির্বাচনের পরিবেশ সেটা আমাদের জানা আছে। তবে বিরোধীগোষ্ঠী তেমন পরিবেশ এখনো দেখতে পায়নি। কেননা বিগত দুটি নির্বাচন স্বাভাবিকভাবে অনুষ্ঠিত হয়নি, যা নির্বাচন প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। 

এখন বিএনপি জোট কি করবে? হয়তো বর্তমান সরকারের অধীনে হতে যাওয়া নির্বাচনটি প্রতিহত করার চেষ্টা চালাবে তারা। বস্তুত তাই করছে এবং তফসিল ঘোষণার পর আন্দোলন আরও জোরদারের চেষ্টা চালাচ্ছে, যা তারা ২০১৪ সালের নির্বাচনে করেছিল। যাকে বলা হয়েছিল আগুনসন্ত্রাস। ভোটের দিনও হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচি থাকবে নিশ্চয়ই। তাতে জনমনে ভয়ভীতি থাকবে, ভোট পড়তে পারে প্রত্যাশার চেয়েও কম, যা বিজয়ী দলের জন্য সমালোচনার ক্ষেত্র সৃষ্টি করতে সহায়ক হবে। এ ধরনের কাজে আমজনতাসহ দেশের অর্থনীতি যে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তা নিয়ে রাজনীতিবিদগণ কিছু কি ভাবছেন? এমনিতেই সারা বছর ধরে বাজার অস্থির। মানুষের ক্রয় ক্ষমতা তলানিতে।

জমা করা অর্থ ভেঙ্গে খাচ্ছে, যা নিয়ে অর্থনীতিবিদগণ হিসাব-নিকাশ করছেন প্রতিনিয়ত। এক গবেষণায় দেখা যায় ২০১৩-১৪ সালের জুলাই-জানুয়ারির ১৮০ দিনের মধ্যে সংঘটিত হরতাল-অবরোধের নামে মোট ৫৫ দিনের নজিরবিহীন অগ্নিসন্ত্রাস-সহিংসতায় দেশের ক্ষতি হয়েছিল ৪৯ হাজার কোটি টাকা (দৈনিক ৮৯১ কোটি টাকা)। আর এখন চলমান হরতাল-অবরোধের প্রথম কয়েকদিনে সারাদেশে নিহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন এবং প্রায় তিনশ’ গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে। আগুন দেওয়া হয়েছে কয়েকটি ট্রেনেও।

অর্থনীতির সমীকরণ আর রাজনীতির সমীকরণ কি এক তা নিয়ে বিতর্ক আছে। কেননা, নির্বাচনকে ঘিরে অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে এক ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। ক্ষমতার পালাবদল হলে কোন কোন খাত গুরুত্ব পাবে তা নিয়ে চলে পর্যালোচনা। নীতিকাঠামোর ধারাবাহিকতা থাকা নিয়েও দেখা দেয় এক ধরনের অনিশ্চয়তা। যার প্রভাব পড়ে বিনিয়োগে, আয়ে ও কর্মসংস্থানে। যেমন– রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে গত অক্টোবরে পণ্য রপ্তানি কমেছে আগের অর্থবছরের তুলনায় ১৪ শতাংশ। সেপ্টেম্বরের চেয়ে অক্টোবরে পোশাক রপ্তানি কমেছে ১৩ শতাংশ।

এ হিসাবে মোট রপ্তানি অক্টোবরে ১২৪ কোটি ডলার কম হয়েছে। এছাড়াও চলতি অর্থবছরের সেপ্টেম্বর শেষে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ১১৮ কোটি ৮০ লাখ ডলার। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আর্থিক হিসাবে ঘাটতি ৩৯২ কোটি ৯০ লাখ ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে উদ্বৃত্ত ছিল ৮৩ কোটি ৯০ লাখ ডলার। রেমিটেন্স আয় অক্টোবরে বাড়লেও লক্ষ্য পূরণের কোনো নিশ্চয়তা নেই। এখন  যুক্ত হয়েছে বিএনপি-জামায়াত ও সমমনা দলগুলোর ডাকা হরতাল-অবরোধসৃষ্ট আগুনসন্ত্রাসের সহিংস রাজনীতি। স্বাভাবিক পরিবেশ বিনষ্টকারী এসব কর্মকাণ্ডের ফলে প্রাণ হারাচ্ছেন নিরীহ মানুষ এবং ধ্বংস হচ্ছে দেশের সম্পদ। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আমদানি-রপ্তানি, ব্যবসা-বাণিজ্য ও মানুষের আয়-উপার্জন। উপরন্তু সরবরাহ ব্যবস্থায় নতুন করে উচ্চ মূল্যস্ফীতির মধ্যেও নিত্যপণ্যের দাম আরও বাড়ছে।

এখন বাংলাদেশ নিজের ঘরের সমস্যা সমাধানে ব্যর্থ হয়ে বহির্দেশের অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে ভূরাজনীতির অংশে পরিণত হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়। অতীতের দু-একটি নির্বাচন ছাড়া সব কটি নির্বাচনের আগে এবং পরে নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে দেশের অভ্যন্তরে বিরোধী দলের অভিযোগ শোনা গেলেও বিদেশীদের তখন অনুষ্ঠিত নির্বাচন নিয়ে খুব বেশি কথা বলতে শোনা যায়নি। এবার বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে বিদেশীদের আগ্রহের পরিধি মনে হয় আগের চেয়ে বেশি বেড়েছে। ছোট হলেও ভূরাজনৈতিকভাবে বাংলাদেশ এখন অনেক দেশেরই বিশেষ নজরে পড়েছে।

কারণ, বিশ্ব রাজনীতি এখন অনেক দ্রুত বদলে যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে আমরা অনেকের কাছে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছি। এটি আমাদের স্বস্তির খবর হওয়ারই কথা। কিন্তু আমাদের নিয়ে যখন বড় দেশগুলোর এত সব কথাবার্তা, উপদেশ, টানাটানি, আবার নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞা, হুমকি-ধমকি আসতে থাকে তখন এই স্বস্তি বিড়ম্বনার বিষয় হয়ে ওঠে। এমনটি তো হওয়ার কথা ছিল না। যত ভালো কথাই বড় বড় রাষ্ট্রের মুখ থেকে শুনি না কেন তারা মানবিকতার দিক থেকে ততটা যদি উদার এবং বড় থাকত তাহলে আমাদের মতো ছোট দেশের জন্য অনেক বেশি শান্তি এনে দিতে পারত। বিশ্ব রাজনীতি এখন বোধ হয় জটিল থেকে আরও কুটিল হওয়ার দিকেই মোড় নিয়েছে। মুখে চমৎকার উপদেশ, কূটনীতির শব্দচয়ন; কিন্তু ভেতরে নিজেদের স্বার্থোদ্ধারের বিষয়টি প্রাধান্য পাচ্ছে। এখানেই যত বিপত্তি।

আমরা স্বস্তি এবং শান্তি চাই। ১৭ কোটি মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটানো আমাদের জন্য মস্ত বড় চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে আমাদের অভ্যন্তরীণ প্রতিকূলতার যে বিশাল চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করতে হয় তার ওপর বিদেশীদের জটিল ও কুটিল উদ্দেশ্য সাধনের খড়গ যখন মাথার ওপর থাকে তখন আমাদের পড়তে হয় বেশি বিপাকে। 

কিন্তু বাংলাদেশের বিশ্বমোড়লদের ভূরাজনৈতিক স্বার্থে জড়ানোর কোনো নীতিগত অবস্থান নেই। সব দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখেই বাংলাদেশকে চলতে দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু দেশ বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এই মুহূর্তে বাংলাদেশের জন্য কোনো পরাশক্তির সঙ্গে গাঁটছড়া অথবা সামরিক বলয়ে অবস্থান নেওয়ার কোনো ইচ্ছাই যে নেই সেটি বারবার বলার পরও স্বস্তি নেই। চাপ বাড়ছে আমাদের ওপরে।

সেই চাপ তীব্রতর করার জন্য আগামী নির্বাচনকে কোনো কোনো দেশ বাছাই করে নিয়েছে। তাদের কথাবার্তা, আচার-আচরণ এবং ঘনঘন প্রতিনিধি দল পাঠানোর দৃশ্য দেখে মনে হচ্ছে তাদের স্বার্থরক্ষা করবে এমন কাউকেই আগামী নির্বাচনে জিতিয়ে আনার জন্য ঘনঘন ঢাকা সফর। তাদের এই আসা-যাওয়ার আসল লক্ষ্য বোঝা যাবে আর কিছুদিন পরেই। আওয়ামী লীগ সরকার ভারতের অনেক সহায়তায় এগিয়ে এসেছে। যেমন– উগ্র ইসলামপন্থিদের দমন থেকে শুরু করে বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোতে পণ্য চলাচলের অবাধ সুবিধা দেওয়া ইত্যাদি। নয়াদিল্লির জন্য এখন সবচেয়ে বড় উদ্বেগ হলো চীনের সঙ্গে বর্তমান সরকারের নৈকট্য।

বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনের ক্ষেত্রে এই ফ্যাক্টরটি ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে প্রায় একই জায়গায় নিয়ে এসেছে। উভয়পক্ষই এ বিষয়ে একমত হয়েছেÑ বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনকে পর্যাপ্ত ক্ষমতা প্রদান এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের নিশ্চয়তা দিতে হবে। নির্বাচনে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের অনুমতি দিতে হবে। সম্প্রতি বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি আলোচনার ঝড় তুলেছে, যা কাম্য নয়। নির্বাচনে হস্তক্ষেপ, প্রভাব বিস্তার, কালোটাকা, ধর্মের অপব্যবহার, সাম্প্রদায়িকতার বীজ ছড়ানো ইত্যাদিকে কঠোরভাবে নজরদারিতে রাখতেই হবে।

প্রতিবেশী দেশ ভারত ও চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক গত কয়েক বছরে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে। একই অবস্থা জাপানের সঙ্গেও। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তো আগাগোড়াই আমাদের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক বাড়ছে। বাংলাদেশ গত দেড় দশকে অর্থনীতিতে দারুণভাবে সক্ষমতা দেখাতে পেরেছে। সে কারণে বিশ্ব রাজনীতির নতুন প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশকে নিয়ে বৃহৎ এসব রাষ্ট্রের ভূরাজনৈতিক অবস্থানের কারণে নানা ধরনের স্বার্থ বিবেচিত হচ্ছে। সেজন্যই এবার আগের চেয়ে পশ্চিমা বিশ্ব বাংলাদেশে তাদের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক স্বার্থ নিয়ে অনেক বেশি দৃষ্টি দিচ্ছে বলে মনে হতে পারে। সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকারের প্রশংসা করেছেন মার্কিন কংগ্রেসম্যান।

যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসম্যান অ্যান্ড্্র গারবারিনো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত ১৫ বছরের বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। বাংলাদেশ গত দেড় দশকে যে সাফল্য দেখিয়েছে তা অর্জনের জন্য অন্যান্য দেশের চেষ্টা করা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি। গত ১৮ আগস্ট  কংগ্রেসম্যান অ্যান্ড্র গারবারিনোর (নিউইয়র্ক কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্ট-২) সম্মানে নিউইয়র্কে মোর্শেদ আলমের নেতৃত্বে বাংলাদেশী মার্কিন প্রবাসীদের একটি শুভেচ্ছা সাক্ষাৎ অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। মার্কিন কংগ্রেসম্যান বলেন, ‘আসন্ন জানুয়ারিতে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়াটি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি স্বাধীন কমিশনের হাতে তুলে দিয়েছেন। নির্বাচনী প্রক্রিয়া স্বাধীন কমিশনের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

যাতে করে তারা দেশকে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিতে পারে এবং তা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি আশা করি অর্থনীতিতে বাংলাদেশ যে প্রবৃদ্ধি প্রত্যক্ষ করেছে, জ্বালানি সংকট মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফলতা, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং সর্বোপরি সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে তার যে ভূমিকা তা অন্য দেশগুলোর জন্য অনুকরণীয় হবে। ২০০৯ সাল থেকে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর বাংলাদেশের অর্থনীতিতে দ্রুত রূপান্তর ঘটেছে এবং আগামী অর্ধশতাব্দীর মধ্যে বাংলাদেশের শুধু আঞ্চলিক পাওয়ার হাউজ নয়, বরং বৈশ্বিক পাওয়ার হাউজ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’ বোস্টন কনসাল্টিং গ্রুপ বলেছে, ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ১ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি হতে যাচ্ছে।

জাপানভিত্তিক পৃথিবীর বৃহত্তম আর্থিক সংবাদমাধ্যম নিক্কেই এশিয়ার (২৩ নভেম্বর, ২০২০) সংবাদ ছিল ‘বাংলাদেশ সঠিক কারণে তার সমালোচনাকারীদের হতবাক করে দিয়েছে। বাংলাদেশ ভারতের চেয়ে সঠিকভাবে পূর্ব এশিয়ার মডেল হওয়ার পথে হাঁটছে। মানব পুঁজিতে বাংলাদেশের বড় বিনিয়োগ ঢাকার উন্নয়ন ত্বরান্বিত করছে।’ আশা করা যাচ্ছে আগামী দ্বাদশ নির্বাচন সবার অংশগ্রহণে সম্পন্ন হবে এবং যে দলই  ক্ষমতায় আসবে জনগণ সেটা মেনে নেবে। এটাই গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের মূলমন্ত্র।

লেখক: গবেষক ও অর্থনীতিবিদ। 

বিনিয়োগবার্তা/কেএইচকে/এসএএম//


Comment As:

Comment (0)