মিথ্যা ঘোষণায় চট্টগ্রাম বন্দরে ১৩৯ কোটি টাকার পণ্য আমদানি

প্রতিবেদক, বিনিয়োগবার্তা, চট্টগাম: মিথ্যা ঘোষণায় চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আনা ১২টি কনটেইনারে ১৩৯ কোটি টাকা মূল্যের সিগারেট, মদ, এলইডি টিভি এবং ফটোকপির মেশিন পাওয়া গেছে। গতকাল রোববার ও সোমবার ১২টি কনটেইনার পরীক্ষা করে এসব বিষয় নিশ্চিত হয়েছেন শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।

পরীক্ষার প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, রোববার ছয়টি কনটেইনার খোলা হলেও পণ্যের তালিকা সম্পন্ন হয়েছে চারটি কনটেইনারের। আর সোমবার বাকি দুইটিসহ এগ্রো বিডি প্রতিষ্ঠানের ছয়টিসহ মোট আটটি কনটেইনারে সব পণ্য শতভাগ কায়িক পরীক্ষা করা হয়। এসব কনটেইনারে ৭৪ কোটি টাকা মূল্যের তিন কোটি ৮৭ লাখ শলাকা সিগারেট পাওয়া গেছে। এসব পণ্য আমদানি করেছে ‘হেনান আনহুই এলসি’ ও ‘এগ্রো বিডি এন্ড জেপি’ নামের দুই প্রতিষ্ঠান।

এসব সিগারেটের মধ্যে রয়েছে- ইজি, ইজিক্স, বেনসন অ্যান্ড হেজেজ, মন্ড, ৩০৩ ও ব্ল্যাক। ৪৫ কোটি টাকা মূল্যের ৯০, ৬৫, ৫৫, ৪৯, ৪৮, ৪০ ও ৩২ ইঞ্চির ৪০৭৪ টি স্যামসাং ও সনি ব্যান্ডের এলইডি টিভি এবং বিভিন্ন ব্যান্ডের ১৬ হাজার ১৭০টি মদের বোতল পাওয়া যায়। এসব মদের মূল্য প্রায় ১৭ কোটি টাকা। দুই কোটি ৭১ লাখ টাকা মূল্যের ২৮১ টি পুরাতন ফটোকপির মেশিন রয়েছে এসব কনটেইনারে।

এক শতাংশ শুল্কযুক্ত মুলধনী যন্ত্রপাতি ঘোষণায় ১২০ থেকে ৬০০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্কযুক্ত এসব পণ্য আমদানি করা হয়েছে। মোট ১২টি কনটেইনারে ১৩৮ কোটি ৭১ লাখ টাকার অঘোষিত পণ্য পেয়েছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।

কায়িক পরীক্ষার প্রধান ড. মইনুল খান সাংবাদিকদের জানান, এক শতাংশ শুল্কযুক্ত মুলধনী যন্ত্রাংশ আমদানির ঘোষণা দিলেও প্রতিষ্ঠানটি ৬০০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্কযুক্ত পণ্য নিয়ে আসে। ‘হেনান আনহুই এগ্রোর ছয়টি কনটেইনারে সিগারেট, এলইডি টিভি ও মদ পাওয়া যায়। এগ্রো বিডি এন্ড জেপি প্রতিষ্ঠানের নামে আনা ছয়টি কনটেইনারও সিগারেট, এলইডি টিভি, ফটোকপি মেশিন ও মদ পাওয়া যায়। এসব পণ্যের মূল্য ১৩৪ কোটি টাকা।

তিনি বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে দুটি প্রতিষ্ঠানটির মালিকের নাম খোরশেদ আলম। বিষয়টি জানার পর প্রতিষ্ঠানির ঠিকানায় গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। একইভাবে খালাসের দায়িত্বপ্রাপ্ত সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠান রাবেয়া অ্যান্ড সন্স প্রতিষ্ঠানের মালিক জালাল উদ্দিন পলাতক রয়েছেন। প্রতিষ্ঠানের যন্ত্রপাতির নাম দিয়ে একটি শক্তিশালী চক্রের সহায়তায় এসব জালিয়াতি করা হয়েছে। চীন থেকে আমদানি করা হলেও পণ্য সিঙ্গাপুর বন্দর থেকে এসেছে বলে ধারণা করছি।

চট্টগ্রাম কাস্টমসের কমিশনার এ এফ এম আবদুল্লাহ খান বলেন, এক শতাংশের মুলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি করলে শিল্প সুবিধা বিবেচনায় তা কায়িক পরীক্ষা ছাড়াই ছাড় দেওয়া হয়। এ ঘটনার পর শূন্য ও এক শতাংশ পণ্যের চালানেও নজরদারি বাড়ানো হবে। অপরদিকে সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিলের জন্য নির্দেশনা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

 

(ইউএম/ এসএএম/০৬ মার্চ ২০১৭)


Comment As:

Comment (0)