undefined

মতামত/বিশ্লেষণ

উৎসবমুখর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানঃ চাই স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনের অঙ্গীকার

ড: মিহির কুমার রায়ঃ করোনাকালে বন্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর ছাত্রছাত্রীরা প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে পায়, উৎসবের আমেজে মেতে ওঠে। ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনায় টানা দেড় বছর পর প্রিয় শ্রেণীকক্ষে বসল শিক্ষার্থীরা। আর তাদেরকে ফুল, চকোলেট, মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে স্বাগত জানাল শিক্ষকরা। কোনো কোনো স্কুলে বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে বরণ করা হয় শিক্ষার্থীদের। দীর্ঘ ছুটির পর শিক্ষার্থীদের শ্রেণীকক্ষে পেয়ে শিক্ষকদের মধ্যেও ছিল খুশির আমেজ। শ্রেণীকক্ষগুলো পরিণত হয় মিলনমেলায়। রাজধানীর সব প্রান্তের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই ছিল উৎসবের আমেজ। প্রথমদিন যথারীতি স্বাস্থ্যবিধি মেনেই বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে শিক্ষার্থীরা। স্বাস্থ্যবিধি মানতে শিক্ষকদের পাশাপাশি অভিভাবকদের তৎপরতাও দেখা গেছে চোখে পড়ার মতো। শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন কীভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শ্রেণীকক্ষে প্রবেশ করতে হবে ও শ্রেণী কক্ষে বসবে। অবিভাবকরাও দীর্ঘদিন পর তাদের সন্তানদের বিদ্যালয়ে নিয়ে আসতে পেরে খুশি।

তাদের অনেকেই জানিয়েছেন, এতদিন ছেলেমেয়েরা বাসায় থাকার কারণে অস্থির হয়ে থাকত। এখন বিদ্যালয় খোলার কারণে কিছুটা স্বস্তি চলে এসেছে। সংক্রমণের নিম্নমুখী প্রবণতায় আবারও প্রাণ ফিরেছে দেশের স্কুল-কলেজগুলোতে। দীর্ঘদিন পর নিজ শিক্ষাঙ্গনে তাই ফুল-বেলুনে এদিন বরণ করা হলো শিক্ষার্থীদের। সর্বোচ্চ স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে এবার থেকে আবারও নিয়মিত জীবন-যাপনে ফিরবে শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘ বন্ধের পর প্রিয় ক্যাম্পাসে আসতে পারার খুশিটা ছিল চোখে পড়ার মতো। সেই চিরচেনা স্কুল ড্রেস, কাঁধে বইয়ের ব্যাগের সঙ্গে এবার নতুন পরিধান যোগ হয়েছে মাস্ক। তবে দীর্ঘদিন পর স্কুল খুললেও সহপাঠীদের সঙ্গে আগের সেই হইহুল্লোড় নেই। সামনের বেঞ্চ ধরা নিয়ে নেই হুড়োহুড়িও। শিক্ষকদের নির্দেশনা মেনে শিক্ষার্থীরা দূরত্ব বজায় রেখে প্রবেশ করছে প্রিয় অঙ্গনে। তবে কয়েকজন অভিভাবক জানায়, সময়মতো স্কুল ড্রেস তৈরি না হওয়ায় অনেক শিক্ষার্থী প্রথম দিন আসতে পারেনি।  প্রথম দিন সারাদেশে গড়ে ৮০ শতাংশ শিক্ষার্থীর উপস্থিতি ছিল বলে জানিয়েছেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। শিক্ষা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে সারাদেশে প্রায় এক লাখ সাড়ে পাঁচ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শ্রেণী কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

বিগত ৫ই সেপ্টেম্বর শিক্ষামন্ত্রীর সভাপতিত্বে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত নেয়া সহ বেশ কিছু দিক নির্দেশনা আসে। যেমন- প্রথম দিন চার-পাঁচ ঘণ্টা ক্লাস হবে, পর্যায়ক্রমে এ ক্লাসের সংখ্যা আরও বাড়বে, শ্রেণীকক্ষে পাঠদানকালে শিক্ষার্থী-শিক্ষকসহ সবাইকে মাস্ক পরিধান করতে হবে,  শুরুর দিকে ২০২১ সালে যারা এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থী, তাদের প্রতিদিন স্কুলে আসতে হবে, এছাড়াও পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন ক্লাসে আসবে, স্কুলে প্রবেশের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের সারিবদ্ধভাবে প্রবেশ করাতে হবে, স্কুলে আপাতত কোন এ্যাসেম্বলি হবে না, তবে ফিজিক্যাল এ্যাক্টিভিটি বা খেলাধুলা চলবে, যাতে শারীরিক ও মানসিকভাবে ভাল অবস্থানে থাকতে পারে, প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে চেকলিস্ট পূরণ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে হবেএবং র‌্যান্ডম স্যাম্পলিং করে সংক্রমণের ঝুঁকি থাকলে বন্ধ করার সিদ্ধান্তও নেয়া যেতেহতে পারে। তাছাড়াও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতিদিনের উপস্থিতি সংক্রান্ত তথ্য পাঠাতে নির্দেশ দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই)। 

এতে বলা হয়, কোভিড-১৯ সংক্রমণ পরিস্থিতিতে আন্তঃমন্ত্রণালয সভার সিদ্ধান্তের আলোকে জনস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিদ্যালযগুলোয় ১২ই সেপ্টেম্বর বিকাল থেকে রুটিন অনুযাযী সরাসরি শ্রেণি পাঠদান শুরু হযেছে। প্রতিদিন বিদ্যালযে কতজন শিক্ষার্থী সরাসরি পাঠদানে উপস্থিত রয়েছে সে সম্পর্কিত তথ্য প্রত্যেক বিভাগের জেলাভিত্তিক সমন্বয করে নির্ধারিত ছক অনুযাযী পাঠানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বা দেহে কোনো ধরনের উপসর্গের কারণে যদি শিক্ষার্থীরা সশরীরে উপস্থিত হয়ে ক্লাসে যোগদান করতে না পারে, তাহলে (যথোপযুক্ত প্রমাণ সাপেক্ষে) তাদের অনুপস্থিত হিসেবে গণ্য করা হবে না। সবাইকে মাস্ক পরে স্কুলে আসার নির্দেশনা রয়েছে। আবার মাস্ক পরার কারণে কোনো শিশু শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ে কি না, সে বিষয়েও শিক্ষকদের দৃষ্টি রাখতে বলা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীও বলেন, দীর্ঘদিন পর গত ১২ই সেপ্টেম্বর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হয়েছে ও ধীরে ধীরে সবগুলো স্কুল খুলে যাবে যার ফলে আবার নতুনভাবে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হবে। তিনি বলেন, আমাদের অত্যন্ত দুর্ভাগ্য আমরা প্রায় দেড় বছরের মতো আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলতে পারিনি। যদিও অনলাইনে বা টেলিভিশনের মাধ্যমে বা ঘরে বসে শিক্ষা কার্যক্রম চলেছে। ঘরেই আমার স্কুল, এই ধরনের বহুমুখী কার্যক্রম তার সরকার পরিচালনা করলেও স্কুল বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে পারার আনন্দ থেকে শিক্ষার্থীদের বঞ্চিত থাকতে হয়েছে। ১৯৯৬ সালে সরকার পরিচালনার সময়ও সে সময়কার বিশ্বমন্দার প্রেক্ষাপট স্মরণ করে সরকার প্রধান বলেন, আমরা আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি, নানারকম প্রতিবন্ধকতা-অসুবিধা ছিল। প্রথমবার সমরকার গঠন করার পরই বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা আর এবার এলো করোনা ভাইরাস। এই সবকিছু মিলে যে প্রতিবন্ধকতা এসেছে সেখানে সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আমাদের শিশুরা অর্থাৎ শিক্ষার্থীরা। করোনাকালে শিক্ষা কার্যক্রম সচল রাখতে সংশ্লিষ্টদের ভূমিকার প্রশংসা করে শেখ হাসিনা বলেন, করোনাকালে যখন সব কিছু স্থবির তখন আপনারা যথেষ্ট উদ্যোগ নিয়েছেন। বিশেষ করে শিক্ষার ক্ষেত্রে এখনকার যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কীভাবে শিক্ষা ব্যবস্থাটাকে আরও আমাদের শিক্ষার্থীদের কাছে আকর্ষণীয় করা যায়। আবার সেই সঙ্গে জীবন জীবিকার পথটাও যেন খোলে। সেই বিষয়টার দিকে বিশেষ দৃষ্টি দিয়ে আপনারা জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখার কার্যক্রমগুলো খসড়া করেছেন।

সরকার প্রধান বলেন, করোনাকালে যখন সবকিছু স্থবির, তখন আপনারা যথেষ্ট উদ্যোগ নিয়েছেন। বিশেষ করে শিক্ষার ক্ষেত্রে এখনকার যুগের সঙ্গে তালমিলিয়ে কীভাবে শিক্ষাব্যবস্থাটাকে আরও আমাদের শিক্ষার্থীদের কাছে আকর্ষণীয় করা যায়। আবার সেই সঙ্গে সঙ্গে জীবন-জীবিকার পথটাও যেন খোলে। সেই বিষয়টির দিকে বিশেষ দৃষ্টি দিয়ে আপনারা এ কার্যক্রমগুলো করেছেন। শিক্ষার্থীদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে বিভিন্ন এলাকায় নতুন নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ করার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা এ পর্যন্ত যথেষ্ট পদক্ষেপ নিয়েছি। যেসব এলাকায় স্কুল ছিল না, সেসব এলাকায় আমরা স্কুল তৈরি করে দিচ্ছি। আমাদের নদী-নালা, খাল-বিলের দেশ। ছোট ছোট শিশুদের যোগাযোগ ও যাতায়াতের ব্যবস্থা বিবেচনা করেই কিন্তু আমরা বিভিন্ন এলাকায় স্কুল তৈরি করার ব্যবস্থা নিয়েছি।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সারাদেশে প্রায় ৪০ হাজার স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এ ছাড়া প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে সারাদেশে ৬৫ হাজার ৫৬৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। করোনা সংক্রমণের কারণে গত বছরের ১৭ মাচ,২০২র্০ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি ছিল। ১১ সেপ্টেম্বও,২০২১ সেই ছুটি শেষ হয়। এতোদিন অ্যাসাইনমেন্ট, অনলাইন-টিভি ও রেডিওর মাধ্যমে ক্লাস চলেছে। শিক্ষার্থীরা ঘরে বসেই ‘পাঠলাভ’ করেছে। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সভাপতিত্বে গত ৬ সেপ্টম্বর সচিবালয়ে এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশনা বলা হয়েছে, ১২ সেপ্টেম্বর থেকে সব প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং মাদ্রাসাসমূহে শ্রেণীকক্ষে পাঠদান শুরু হয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন সার্বক্ষণিক তদারকি করবে যার মধ্যে রয়েছে ইউনিফর্মের সঙ্গে নতুন যোগ হয়েছে মাস্ক ওস্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে সর্বোচ্চ সতর্কতা।

সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চালানো হয়েছে পরিচ্ছন্নতা অভিযান। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানেই শিক্ষার্থীদের বরণ করা হয় ফুল বেলুন দিয়ে। উৎসাহ ও উদ্দীপনা নিয়ে শিক্ষার্থীরা শ্রেণীকক্ষে প্রবেশ করেছে। সব স্কুল-কলেজই নতুনভাবে সেজেছে। শিক্ষার্থীদের চোখেমুখে ছিল উচ্ছ্বাস। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আবারও খোলায় শুধু শিক্ষার্থী নয় শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যেও ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে। তবে একই সঙ্গে করোনার সংক্রমণ ফের বাড়ার শঙ্কায় তাদের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠাও রয়েছে।

স্বাস্থ্যবিধি হুমকি বাড়াতে পারে বলে মন্তব্য করে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র বলেছেন, দীর্ঘদিন পর  দেশের স্কুল-কলেজ খুলার ফলে তাতে প্রাণ ফিরেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থী মাঝে সত্যি কিন্তু স্কুলের সামনে অভিভাবকরা জটলা দেশের করোনা সংক্রমণের বর্তমানের নিম্নমুখিতাকে প্রভাবিত করতে পারে বিধায় অভিভাবকদের আরও দায়িত্বশীল হওয়া উচিত। কারন সংক্রমণের এই নিম্নমুখিতায় স্কুল-কলেজ খুলে দেয়া হয়েছে যেখানে শিশু-কিশোরদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে, একে-অপরকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে উদ্বুদ্ধ করতে হবে যেন কোন অবস্থাতেই সংক্রমণের আগের পর্যায়ে ফিরে না যায় যদিও প্রতিষ্ঠান খুলতে না খুলতেই (১২ই সেপ্টেস্বর) মৃত্যুর সংখ্যাটি ৫১ এর উপরে চলে গেছে।

স্বাস্থ্য অধিদফতর গত আগস্টের এক জরিপে জানায়, পুরান ঢাকায় ডেঙ্গুর প্রকোপ অপেক্ষাকৃত বেশি।  পুরান ঢাকার সূত্রাপুর থানার ডেঙ্গু রোধে সচেতনতামূলক নানা কাজ দেখা যায়। এই থানায় প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৮টি, কিন্ডারগার্টেন স্কুল ৯৬টি, সরকারী হাইস্কুল ১৫টি ও শিশুকল্যাণ স্কুল রয়েছে ৩টি। এই থানার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা হচ্ছে, কঠোর নজরদারিও রয়েছে এবং প্রতিটি শ্রেণীকক্ষে শিক্ষার্থীদের দূরত্ব নিশ্চিত করা হয়েছে।

এইত গেল ঢাকা শহরের কথা কিন্তু মফস্বল শহরের চিত্র ভিন্ন এবং দেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলীয জেলাগুলুতে এখন বণ্যার সংক্রামক বেশি বিধায় প্রাথমিক/মাধ্যমিক পর্যায়ের সরকারী/বেসরকারি স্কুলগুলোতে বণ্যার পানি প্রবেশ করেছে কিংবা বন্যার্তদের আশ্রয় কেন্দ্র হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, সবচেয়ে বন্যাপ্রবণ নদ ব্রহ্মপুত্রের পানিও বাড়ছে ,আশঙ্কা রয়েছে এই নদের অববাহিকাও প্লাবিত হওয়ার ব্রহ্মপুত্র-যমুনা ও পদ্মার পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা অব্যাহত থাকতে পারে। এছাড়া স্থিতিশীল হতে পারে তিস্তা নদীর পানিও। এ অবস্থায় কুড়িগ্রাম, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, কুষ্টিয়া, মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর ও শরিয়তপুর জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে চলেছে। সেই সকল জেলাগুলোর স্কুল-কলেজের পরিস্থিতি নিয়ে কেউ কোন কথা বলছে না অথচ সারাদেশে মিলে গ্রামের শিক্ষার্থীর  সংখ্যাই বেশী। এই ধরনের একটি পরিস্থিতিতে একদিকে করোনা অপরদিকে ডেঙ্গু আতঙ্ক। এর মাঝে স্কুলে যাওয়ার আনন্দ সারাদেশের শিক্ষার্থীরা কতটুকু ভাগাভাগি করে নিতে পারবে- তা শিক্ষাপ্রশাসন ভেবে দেখবেন কি?

এমনিতেই বিগত বছরে করোনার কারনে মানুষের আয় কমেছে এবং ব্যয় বেড়েছে, গ্রামে বাল্য বিবাহসহ তালাকের সংখ্যাও অনেকাংশে বেড়েছে -যা সমাজ চিন্তাবীদদের আশংকার কারণ। তারপর শিক্ষার গুরুত্বও তুলনামূলক বিচারে  হ্রাস পেয়েছে অবস্থানগত কারনে। এ ধরনের একটি পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, স্কুলে যাওয়ার কারনে যদি করোনা পরিস্থিতির অবনতি ঘটে তবে আবারও  প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে আবাস দিয়েছেন।

তাই আসুন প্রতিষ্ঠান, শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও আভবাবক মিলে  স্বাস্থ্য সুরক্ষার ক্ষেত্রে এমন একটি নজির সৃষ্ঠি করি- যা জাতির কাছে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। যেমনটি হয়েছিল ভারতের কেরালা রাজ্যে যেখানে শিক্ষার হার শতকরা একশত ভাগ। করোনায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় যে ক্ষতি হয়েছে- তা অপুরনীয বিধায় সরকারী প্রণোদনা ও বিনিয়োগ অব্যাহত থাকুক- এই আশাই রইল।

লেখক: অধ্যাপক,গবেষক, ডীন ও সিন্ডিকেট সদস্য, সিটি ইউনিভার্সিটি, ঢাকা।

 

 


Comment As:

Comment (0)