মিহির

করোনামুক্ত রমজানে সরগরম ঈদের অর্থনীতি

ড: মিহির কুমার রায়ঃ রমজান মাস পবিত্র, বরকতময়, সংযম ও ধৈর্যের বার্তাবাহী একটি গুরুত্বপূর্ণ মাস। এ মাস সিয়াম সাধনার মাস, আত্মশুদ্ধির মাস ও ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা অধীর আগ্রহে এ মাসটির জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। এই বছর ৩রা এপ্রিল থেকে মাহে রমজান শুরু হয়েছে এমন একটি সময়ে যখন করোনার প্রভাব শুন্যের কোঠায় চলে এসেছে যা ঈদের আনন্দকে অনেক উচু মাত্রায় নিয়ে চলছে।  যদি সব ঠিক থাকে তবে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২রা অথবা ৩রা মে ঈদ অনুষ্ঠান উৎযাপিত হবে। মাহে রমজানের ফজিলতের কথা কম-বেশি আমরা সবাই জানি; আবার অন্যদিকে দেখা যায়,  রমজান মাসটা যেন খাদ্যোৎসবের মাস যেখানে রোজাদাররা বেশি বেশি খাবারের আয়োজনে ব্যাস্ত থাকে, দাম যতই বাড়ুক না কেন,  বেশি দাম দিয়ে হলেও তা কিনতে হবে,  ইফতার বা সেহরিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবার না-থাকলে রোজা যেন পূর্ণতা পায় না। কেউ কেউ রমজান মাসের কথা চিন্তা করে আগে থেকেই প্রয়োজনীয় খাদ্য দ্রব্য ঘরে মজুদ করতে থাকে। এবার ঈদ সামনে রেখে শুরু হয় কেনাকাটার ধুম, রমজানের প্রকৃত ফজিলত নিয়ে তেমনভাবে ভাবনার বিষয় কম দেখা যায়। 

গত দুটি বছর করোনার কারনে ঈদ আনন্দ ছিল অনেকটা ঘরমুখি  কিন্তু এবারের ঈদ আনন্দ বাজারমুখী যা এরি মধ্যে জমে উঠেছে বলে প্রতিয়মান হয়। রমজান এলে এ দেশের মুসলমান সম্প্রদায়ের মধ্যে এক ধরনের প্রস্ততি তৈরি হয়,  তারা এ পবিত্র মাসে আধ্যাত্মিকভাবে পুণ্য অর্জনের জন্য প্রস্ততি নেন,  আবার কেউ প্রস্তুতি নেন সেহরি-ইফতার নানা পরিকল্পনায় উদযাপনের  জন্য। পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে খ্রিষ্টান,  হিন্দু, বৌদ্ধসহ সব সম্প্রদায়ের ব্যবসায়ী যেখানে বিশেষ ছাড় দিয়ে দ্রব্য মূল্য কমিয়ে ধর্মীয় পর্বের উপহার নিয়ে আসেন সাধারণ ক্রেতার কাছে,  সেখানে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা রমজানে ভোগ্য পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিযোগিতায় নামেন যদিও তার ব্যতিক্রমও রয়েছে। যেমন ঈদ উপলক্ষে অনেক প্রতিষ্ঠান ভোগ্য পণ্যের মূল্যে অনেক ছাড় দিয়ে থাকে বিশেষত:   করোণা পরবর্তি মানুষের ক্রয় ক্ষমতা কমে যাওয়ার কথাটি বিবেচনা করে। তার মধ্যেও ব্যতিক্রমও আছে যেমন একজন ব্যবসায়ী বলছেন দোকান খোলা রাখা হয়েছে লাভের জন্য নয়, কেবল বেঁচে থাকার জন্য, কর্মচারীদের বেতন ও দোকানের ভাড়া পরিশোধের জন্য যা জীবনের এক চমৎকার শিক্ষা বলে বিবেচিত।  পবিত্র ইসলামে অতিরিক্ত মূল্য আদায় কঠোরভাবে নিষেধ করা হয়েছে। হাদিস শরিফে বলা হয়েছে, ‘ব্যবসায়ীরা যদি সীমাতিরিক্ত মূল্য আদায় করে এ সুযোগে যে,  ক্রেতা পণ্যের মূল্য জানে না; তাহলে অতিরিক্ত পরিমাণের মূল্য সুদ হিসেবে গণ্য হবে।’  আবার মজুতদারি সম্পর্কে হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন,  ‘মজুতদার খুব নিকৃষ্টতম ব্যক্তি। যদি জিনিস পত্রের দাম হ্রাস পায়, তবে তারা চিন্তিত হয়ে পড়ে, আর দাম বেড়ে গেলে আনন্দিত হয়’ (মেশকাত)। রহমত,  বরকত ও মাগফিরাতের অমীয় বার্তা নিয়ে হাজির হয়েছে মাহে রমজান। রমজান ও ঈদ ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। বিশ্বের সব মুসলমানের ধারণায় এটি সুদৃঢ় যে,  পবিত্র কোরআনের প্রথম ও শেষ আয়াত নাজিল হয় যথাক্রমে ৬১০ ও ৬৩২ সালে এবং দীর্ঘ তেইশ বছরের পরিক্রমায় এর পরিপূর্ণতা দৃশ্যমান হয়। অবাধ মুক্ত বিশ্বাস ও যথার্থ জীবন-দর্শন উন্মোচন করে হাজার বছরের সংস্কার এবং ধর্মান্ধতার বৃত্ত ভেঙে পবিত্র কোরআন মানব জগৎকে করেছে অপরিমেয় আলোকবর্তিকায় উদ্ভাসিত। ইমান, নামাজ, রোজা, হজ্ব, জাকাত-  এই পাঁচটি পবিত্র ইসলামের মূল ভিত্তি। এর মধ্যেই নামাজ-রোজা-জাকাতকে ঘিরে যে মাসটি সবচেয়ে সমাদৃত,  সে মাসকেই যথাযোগ্য মর্যাদাসীন করার উদ্দেশ্যে মাস শেষে সর্বজনীন ঈদ বা সর্বোচ্চ উৎসবের দিন ধার্য করা হয়। পবিত্র রমজান মাসে ধার্মিক মুসলমান আত্মিক উৎকর্ষ ও স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিশিষ্ট বৈশিষ্ট্য হিসেবে রোজা আদায় করেন। আবার এই মাসেই ইমাম সাহেবরা নামাজ পরিচালনা করে ও একটা অংকের টাকা উপার্জনের পথ খুজে পান। 

আশার কথা হলো, সুলভ মূল্যে সাধারণ মানুষের কাছে পণ্য পৌঁছে দিতে এবার সরকারি বিক্রয় সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)-এর সক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। আমদানি মূল্যের সঙ্গে বিক্রয় মূল্যের ব্যবধান যাতে বেশি না হয়,  তা তারা নজরে রাখছে। এমন পরিকল্পনার বাস্তবায়ন হলে আমরা সুন্দর,  সুশৃঙ্খল জীবন ও ভারসাম্যপূর্ণ সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারব। পাশাপাশি ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যে ও উৎ্সাহ-উদ্দীপনায় আসন্ন মাহে রমজান পালনে সক্ষম হব বলে আশা করা যায়। সংবিধান মতে ভোক্তা সাধারণের জন্য দাম সহনীয় রাখার দায়িত্ব রাষ্ট্রের যার জন্য প্রয়োজন শক্ত মনিটরিং ব্যবস্থা। সে যাই হউক না কেন রমজান ও ঈদকে ঘিরে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম অদ্যোশিত বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ব্যবসা বানিজ্যের যে প্রসার ঘটে তার একটি বিশ্লেষনধর্ম্মী আলোচনাই এই প্রবন্ধের মূখ্য উদ্দেশ্য যথা এক:  ঈফতার ও সেহারি দুটি বিশেষ পর্ব যার সাথে ভোগ্য পণ্যের যেমন চাল, ডাল, তৈল, ছোলা, পেয়াজ, মাছ মাংসের সহ বিশেষত:  শজ্বীর মধ্যে বেগুন, শসা, টমেটো, আলু ইত্যাদির সম্পর্ক রয়েছে এবং রমজান মাসে বিশেষ চাহিদার কারনে মূল্য কিছুটা বেড়ে যায় যা সরকারসহ জাগ্রত জনগন অবহিত আছেন। ঈফতার কেন্দ্রীক বিশেষ ধরনের যে সকল উদ্যোক্তা এরই মধ্যে সারা দেশের রাজধানী ঢাকাসহ জিলা উপজেলায় ছড়িয়ে রয়েছে তারা কি পরিমান রোজার মাস জুড়ে ব্যবসা করছে এবং  টাকায় এর মূল্য কত এ নিয়ে তেমন তথ্য উপাত্ব পাওয়া না গেলেও পরিমান যে বিশাল অংকের টাকা এ নিয়ে কারও দ্বিমত নেই যা দেশের জিডিপিতে মূল্য সংযোজন করছে। আবার যারা পারিবারিক পর্যায়ে ঈফতারের ব্যবস্থা করে থাকে তাদেরকেও একি ভাবে বাজারের উপর নির্ভর হতে হয়। যার বেশীরভাগ উপকরন আসে কৃষি খাত থেকে যার উৎপাদনে সরকার বাজেটের আওতায় কোটি কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়ে থাকে যাতে মূল্য সহনীয় পর্যায়ে থাকে। তার পর এই পবিত্র রমজান মাসের জন্য সরকারের কৃষি পণ্য/খাদ্য সরবরাহে বিশেষ আয়োজনের ব্যবস্থা করে থাকে বিশেষত:  মধ্যবিত্ত/দরিদ্র্য শ্রেণীর কথা বিবেচনায় রেখে। যেমনি রমজানের আগে থেকেই সরকার টিসিবির কার্যক্রম কিছুটা বাড়িয়েছে,  সুনির্দিষ্ট কিছু জায়গায় ট্রাকে করে নিত্য পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে এবং এসব পণ্য কিনতে ট্রাকের পেছনে লোকজনের দীর্ঘ সারি লক্ষ করা যাচ্ছে যা থেকে অনুমেয় নিম্ন আয়ের মানুষগুলো আসলে কতটা কষ্টে আছে। দামজনিত বহিস্থ অভিঘাত মোকাবেলার  আরেকটি উপায় হলো কর-শুল্ক কাঠামোর সমন্বয়। বিশ্ব ব্যাংকের তথ্য বলছে,  আন্তর্জাতিক বাজারে চাল,  চিনি থেকে শুরু করে ভোজ্য তেলজাত খাদ্য ও কৃষি খাতের সবধরনের পণ্যের দাম বাড়ছে। বিশ্ব বাজারে ঊর্ধ্বমুখী মূল্য মানেই এসব পণ্য বাড়তি দামেই কিনতে হবে বাংলাদেশকে। মানুষের জীবন ধারণ, কৃষি, অবকাঠামো,  শিল্পসহ পুরো অর্থনীতিতে এর প্রভাব অনেক। আমদানি শুল্ক কমানো হলে খরচ কম পড়বে এবং স্থানীয় বাজারেও দাম কমে রাখা যাবে। এখন পর্যন্ত সরকার কেবল চাল আমদানিতে শুল্ক কমিয়েছে,  পরিস্থিতি বিবেচনায় সব ধরনের পণ্যের ক্ষেত্রে শুল্ক সমন্বয়ের সময় এসেছে যা গ্রহন করা যেতে পারে যার সাথে ঈফতার সামগ্রী মূল্যেও কম বেশী হওয়ার একটা সম্পর্ক রয়েছে;  দ্বিতীয়ত: ঈদ উৎসবের আর একটি অনুসঙ্গ হলো বাহারি পোশাক যা নারী পুরুষ শিশুভেদে ভিন্নতর হয় এবং মুক্ত বাজার অর্থনীতির যুগে বিদেশী পণ্য বিশেষত: ভারতীয় কাপড়, শাড়ী,  সালোয়র কামিজ, পাঞ্জাবী ইত্যাদি  বাজার সয়লাব হয়ে উঠে যা ডিজাইনের বৈচিত্রের কারনে বাঙ্গালী নারীদের কাছে খুবি আকর্ষনীয়। তাছাড়াও দেশীয় তাঁত মালিক এই মাসটিতে বাজার চাহিদা মেটাতে বিনিদ্র রজনী কাজ করে থাকে এবং এই খাতে কত কোটি টাকার বিনিয়োগ/লেনদেন/বানিজ্য ও কত শত লোকের কর্মসংন্থান হয়ে থাকে তার সঠিক হিসাব না থাকলেও এ অংকটি যে বিশাল এ নিয়ে কারও দ্বিমত নেই। দোকানে দোকানে, সুপার মার্কেটে, শপিংমলগুলোতে, ফ্যাশন হাউসগুলোতে নতুন নতুন পোশাক, শাড়ি, গয়নার সমারোহ লক্ষ করা যাচ্ছে। এর মধ্যেই ক্রেতার ভিড়ও বেড়েছে ঈদকে সামনে রেখে সাধারণত নতুন নতুন পোশাক নিয়ে আসে বাংলাদেশের ফ্যাশন হাউজগুলো। সারা বছরে বিভিন্ন উৎসবকে ঘিরে ব্যবসা চললেও এই সময়টাকে লক্ষ্য করেই চলে তাদের মূল আয়োজন। ভারতীয় ও পাকিস্তানি পোশাকের আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ করে বাংলাদেশের ফ্যাশন হাউজগুলো গত কয়েক দশক সময়ে বেশ অনেকটা এগিয়ে গেছে। বড় বড় উৎসবকে সামনে রেখে ফ্যাশন হাউজগুলো দেশীয় কাপড়ে তৈরি দেশের ডিজাইনারদের তৈরি নতুন নতুন ধরনের নকশার পোশাক নিয়ে আসে সাধারণত। যার মধ্যে স্বকীয়তা থাকে। স্থানীয় বাজারে প্রায় শত ভাগ কাপড়ের চাহিদা মেটায় দেশের বস্ত্র কলগুলো। সারাদেশে এখন ছোট-বড় তিন হাজার বস্ত্র কল আছে। এই খাতে কাজ করেন কয়েক লাখ শ্রমিক। সরকার ঘোষিত বিধি নিষেধে দেশি বস্ত্র কলগুলো ভোগান্তিতে পড়েছিল। ঈদের আগে এই সময়েই কাপড়ের সবচেয়ে বেশি চাহিদা থাকে। শুধু নরসিংদীসহ সারা দেশের বস্ত্র কলগুলো থেকে কাপড় প্রথমে নরসিংদীর বাবুরহাট, নারায়ণগঞ্জের গাউসিয়া,  সিরাজগঞ্জসহ বিভিন্ন পাইকারি বাজারে যায়। সেখান থেকে সারাদেশে খুচরা পর্যায়ের ব্যবসায়ীদের হাতে পৌঁছায়। দেশের কাপড়ের চাহিদার প্রায় পুরোটাই সরবরাহ করে এসব কারখানা।; তৃতীয়ত:  উৎসবকেন্দ্রিক কেনাকাটার ব্যাপারটি যেন ঐতিহ্যের,  সংস্কৃতির অংশ হয়ে উঠেছে। দিনে দিনে আর্থিক সক্ষমতা,  ক্রয় সামর্থ্য বেড়ে যাওয়ায় উৎসবকে কেন্দ্র করে বাজারের সম্প্রসারণ ঘটেছে। তবে এ বছর বাংলা নববর্ষ,  মাহে রমজান এবং আমাদের অর্থনীতিতে চাঙাভাব ধরে রাখার স্বার্থে বাজার ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটাতে ভোক্তা অধিকার ও স্বার্থ সংরক্ষণের বিষয়টিকে বেশ জোর দিতে হবে। 

উৎসব খুব কাছাকাছি সময়ে অনুষ্ঠিত হওয়ায় তথা করোনা মহামারী পরিস্থিতির বেশ উন্নতি হওয়ায় সেই স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছে উৎসবকেন্দ্রিক বাজার। বাজারে চাহিদা সৃষ্টি হওয়ায় সংশ্লিষ্ট উৎপাদনকারী,  পণ্য সামগ্রী সরবরাহকারি, প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মচাঞ্চল্য বেড়ে গেছে ইদানিং। জামা কাপড় পোশাক,  শাড়ি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান, কারখানা তাঁতি,  বুনন শিল্পী সবার মধ্যে কর্মচাঞ্চল্য বিরাজ করছে এখন। ফলে গোটা অর্থনীতিতে নব জাগরণ সৃষ্টি হয়েছে ইতোমধ্যেই। বর্তমানে অনলাইনেও ঈদের পোশাক বিক্রি হচ্ছে। যেসব বড় প্রতিষ্ঠানের নির্দিষ্ট ক্রেতা গোষ্ঠী রয়েছে,  তারাই অনলাইনে ভালো বিক্রি করতে পারছে। অন্যরা ফেসবুকে বিক্রির চেষ্টা করছে; চতুর্থত:  এই জনবান্ধব সরকার সকল শ্রেণীর কর্মকর্তাদের এজন্য এবং কিছু বৃহৎ শিল্প/ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান তাদের কর্মকর্তাদের ঈদ বোনাস দিয়েছে যার ফলে বাজারে তার একটা প্রভাব পড়েছে ইতিমধ্যেই। তাছাড়াও ঈদ উলক্ষে অর্থনীতির সেবা খাতগুলো রম রমা ব্যবসায় ব্যাস্ত রয়েছে যেমন হোটেল রেস্তরা, যানবাহন, সিনেমা হল,  মিষ্ঠির দোকান ও সর্বপরি পর্যটন শিল্প। ঐতিহ্যগতভাবে ঈদের ছুটিতে মানুষ শহর থেকে গ্রামে এবং গ্রাম থেকে শহরে ছুটে যায়। কারণ এই সময়ে বেশ লম্বা ছুটি পাওয়া যায়,  তাই তারা পরিবার-পরিজন, বন্ধু বান্ধবের সঙ্গে উৎসবের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেয়। ভ্রমন পিপাসু মানুষদের শৈবাল দ্বীপ, সেন্ট মার্টিন, রামুর বৌদ্ধ মন্দির, হিমছড়ির ঝরনা,  ইনানী সমুদ্র সৈকত, বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক, হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপ, টাঙ্গুয়ার হাওড়,  টেকনাফ সহজেই পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। পার্বত্য চট্টগ্রামের সবুজ পাহাড়ী অঞ্চল দেখে কেউ কেউ আত্মভোলা হয়ে যায়। আবার আমাদের দেশে অনেক ঐতিহাসিক এবং প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানও রয়েছে যেমন বগুড়ার মহাস্থান গড়,  নওগাঁর পাহাড়পুর, দিনাজপুরের কান্তজীর মন্দির, ঢাকার লালবাগ কেল্লা, আহসান মঞ্জিল,  বাগেরহাটের ষাট গম্বুজ মসজিদ, খানজাহান আলীর মাজার, রাজশাহীর বরেন্দ্র জাদুঘর,  কুষ্টিয়ার লালন সাঁইয়ের মাজার, রবীন্দ্রনাথের কুঠি বাড়ি শুধু দেশীয় নয়,  বরং বিদেশী পর্যটক ও দর্শনার্থীদের নিকটও সমানভাবে জনপ্রিয়। সর্বপরি বলা যায় ঈদ অর্থনীতি বাংলাদেশের জিডিপিতে একটি বড় অবদান রাখছে। তাই অর্থনীতিতে চাঙাভাব ধরে রাখার স্বার্থে ঈদ সময়ে বাজার ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটাতে ভোক্তা অধিকার ও স্বার্থ সংরক্ষণের বিষয়টিকে বেশ জোর দিতে হবে।  

লেখক: উন্নয়ন অর্থনীতিবিদ, গবেষক, ডীন ও সিন্ডিকেট সদস্য, সিটি ইউনিভার্সিটি, ঢাকা।


Comment As:

Comment (0)