মিহির

জাতীয় বাজেট ও অর্থনীতির চ্যালেঞ্জসমূহ

ড: মিহিরি কুমার রায়: বিগত ৯ই জুন মহান জাতীয় সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট উপস্খাপিত হয়েছে যা অর্থমন্ত্রী হিসেবে এটি তার চতুর্থ বাজেট এবং দেশের জন্য সরকারের ৫১তম বাজেট। এই উপস্থাপিত বাজেটে কতগুলো চ্যালেঞ্জ উল্লেখিত হয়েছে যার মধ্যে রয়েছে বৈশ্বিক অর্থনীতি, মূল্যস্ফীতি,  ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্য হ্রাস, রপ্তানি ও রেমিট্যান্স আয়ে ঘাটতির,  বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ক্রমাবনতি,  জীবন যাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির প্রবণতা ইত্যাদি। অর্থনীতিতে করোনার যে অভিঘাত, তা কাটিয়ে ওঠা এখনো সম্ভব হয়নি কিংবা অর্থনীতি করোনা-পূর্ব অবস্থায় ফিরে যায়নি যার ফলে চাপে রয়েছে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি। যার ফলে এবারের পরিস্থিতি অন্যবারের চেয়ে ভিন্ন যা বাজেটে সংশ্নিষ্টরা এই বাস্তবতা বিশ্নেষণ করেই দেশের দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্যের আলোকে যেমন ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ-মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সালে উন্নত দেশে পরিণত বাজেট প্রণয়ন করবেন যা প্রত্যাশিত। সেই বাস্তবতায় প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা যা মোট জিডিপির ১৫.৩ শতাংশ,;  জিডিপির প্রাক্কলন করা হয়েছে ৪৪ লাখ ১৭ হাজার ১০০ কোটি টাকা, আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা যা জিডিপির ৯.৮ শতাংশ, বাজেটে ঘাটতি দাড়াচ্ছে ২ লাখ ৪৪ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকা যা জিডিপির ৫.৫ শতাংশ যা মোট বাজেটের প্রায় ৩৬ শতাংশের মতো, মোট জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭.৫ শতাংশ ও মূল্যস্ফীতি ৫.৬ শতাংশ। প্রস্তাবিত বাজেটে দেশের মানুষের মাথাপিছু বরাদ্দ বেড়েছে ৪,৬০০ টাকা, আয় বেড়েছে ২,৫০৫ টাকা এবং ঘাটতি বেড়েছে ১,৮৭৯ টাকা। আবার বিবিএস সূত্র মতে দেশের জনসংখ্যা যদি ১৭ কোটি ১৭ লাখ হয় তবে প্রস্তাবিত বাজেটে মাথাপিছু বরাদ্দ দাড়ায় ৪১ হাজার ৯৩৩ টাকা যা চলতি বছরে ছিল ৩৭ হাজার ৩৩৩ টাকা।

প্রস্তাবিত বাজেটে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার ধরা হয়েছে ২ লাখ ৪৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকা যার মধ্যে অভ্যন্তরীণ উৎস হতে অর্থায়ন করা হবে ১ লাখ ৫৩ হাজার ৬৬ কোটি ৯ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক উৎস হতে আসবে ৯৩ হাজার কোটি টাকা। আবার মূল এডিপির বাইরে স্বায়ত্ত শাসিত সংস্থা ও করপোরেশনের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ৯ হাজার ৩৯০ কোটি ১৮ লাখ টাকা,  এতে মোট এডিপির আকার দাঁড়ায় ২ লাখ ৫৬ হাজার ৩ কোটি টাকা। নতুন অর্থবছরে সর্বমোট প্রকল্প থাকছে ১ হাজার ৪৩৫টি,  এর মধ্যে বিনিয়োগ প্রকল্প ১ হাজার ২৪৪টি,  কারিগরি সহায়তা প্রকল্প ১০৬টি। স্বায়ত্ত শাসিত সংস্থা ও করপোরেশনের নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়নের লক্ষ্য ৮৫টি প্রকল্প। প্রস্তাবিত বাজেটে মাথাপিছু এডিপি বরাদ্দ রয়েছে ১৫ হাজার ২১৭ টাকা যা বর্তমান বছরে ছিল ১ হাজার ২৮৩ টাকা।
প্রস্তাবিত বাজেটে যেসব খাতে বেশি করে ভর্তুকি ও প্রণোদনা দেয়া হয়েছে,  সেগুলো হচ্ছে বিদ্যুৎ খাত ১৮ হাজার কোটি টাকা, তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি)  আমদানি মূল্য পরিশোধ ও প্রণোদনা প্যাকেজের সুদ ভর্তুকি ১৭ হাজার ৩০০ কোটি,  খাদ্য ভর্তুকি ৬ হাজার ৭৪৫ কোটি এবং কৃষি প্রণোদনা বাবদ ১৫ হাজার কোটি টাকা। এখন মন্ত্রনালয় ওয়ারী বাজেট বিভাজনে দেখা যায় জাতীয় বাজেট মোট ৬২টি মন্ত্রণালয়/বিভাগের আওতায় সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ পাচ্ছে অর্থ মন্ত্রণালয় ১ লাখ ৯০ হাজার ৭১৩ কোটি টাকা,  দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ পাচ্ছে স্থানীয় সরকার বিভাগ ৪১ হাজার ৭০৭ কোটি টাকা এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ পাচ্ছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ৪০ হাজার ৩৬০ কোটি টাকা;  সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের ৩৬ হাজার ৬৪৮ কোটি টাকা, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ৩১ হাজার ৭৫৯ কোটি টাকা,  মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের ৩৯ হাজার ৯৬১ কোটি টাকা,  বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে ১৬ হাজার ৬১৪ কোটি টাকা,  স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের বরাদ্দ ২৯ হাজার ২৮২ কোটি টাকা, কৃষি মন্ত্রণালয়ের ২৪ হাজার ২২৪ কোটি, রেলপথ মন্ত্রণালয় ১৮ হাজার ৮৫২ কোটি টাকা, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ১০ হাজার ১৯৬ কোটি টাকা, খাদ্য মন্ত্রণালয় ৬ হাজার ২১৩ কোটি টাকা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ১০ হাজার ২২৯ কোটি টাকা ইত্যাদি।

এই সংখ্যাতাত্বিক উপস্থাপনার পাশাপাশি এটিও দেখা যায় যে তিনটি প্রধান চ্যালেঞ্জ - করোনা ভাইরাসে ধরাশায়ী অর্থনীতির উঠে দাঁড়ানো,  কিয়েভ-ক্রেমলিন যুদ্ধের অভিঘাতে আমদানি নির্ভর অর্থনীতিতে সৃষ্ট বিপর্যয় মোকাবিলা এবং আগামী বছর শেষে মাথায় মধ্যম আয়ের দেশের যাওয়ার জোর প্রস্তুতির প্রাক্কালে বাংলাদেশের ঘোষিত বাজেট গুরুত্ববহ এই কারনে যে, মহামারি মোকাবিলায় একটি উদীয়মান  উন্নয়নশীল অর্থনীতির জন্য যে সব চ্যালেঞ্জ ইতোমধ্যে দৃশ্যমান হয়ে উঠছে,  তা কী ধরনের কৌশল অবলম্বনের মাধ্যমে উতরানো যাবে,  পুনরুদ্ধার তথা আগের অবস্থায় ফিরে আসা যাবে, তার একটা পথনকশা বাজেটে প্রত্যাশিত। 

তারই আলোকে অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তব্যে আগামী অর্থবছরের জন্য ৬ ধরনের চ্যালেঞ্জ শনাক্ত করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে-মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনা এবং অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা; গ্যাস, বিদ্যুৎ ও সারের মূল্য বৃদ্ধির কারণে বাড়তি হারে ভর্তুকির জন্য অর্থের সংস্থান;  বৈদেশিক সহায়তার অর্থ ব্যবহার এবং উচ্চ-অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত প্রকল্পগুলোর কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ করা;  শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের প্রকল্প যথাসময়ে বাস্তবায়ন;  অভ্যন্তরীণ মূল্য সংযোজন কর সংগ্রহের পরিমাণ ও ব্যক্তি আয়কর দাতার সংখ্যা বৃদ্ধি এবং টাকার বিনিময় হার স্থিতিশীল ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সন্তোষজনক পর্যায়ে রাখা। তিনি উল্লিখিত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আট ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন, এগুলো হচ্ছে-ভর্তুকি বাড়ানো, দরিদ্রদের খাদ্য বিতরণ, নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিতে শুল্ক হ্রাস, বিলাসী পণ্য আমদানি শুল্ক ও রপ্তানি আয় বাড়ানো, রেমিট্যান্স,  দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ, কৃষি উৎপাদন এবং কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, এজন্য করমুক্ত আয়সীমানা বাড়ানো,  আমদানিকৃত ব্যবহার্য পণ্যে বেশি শুল্ক আরোপ,  অভ্যন্তরীণ ভ্যাট বেশি আদায়, নতুন করে ব্যক্তি আয়কর দাতার সংখ্যা বাড়ানো, গ্যাস,  বিদ্যুৎ ও জ্বালানি তেলের দাম পর্যায়ক্রমে সমন্বয় করা হবে - ইত্যাদি। 

এখন বাজেট পর্যালোচনায় দেখা যায় যে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় অর্থমন্ত্রী যে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেছেন তা কিভাবে বাস্তবায়িত হবে তার কোন রোডম্যাপ উল্লেখ করেন নি এবং অতীতের বাজেট বাস্তবায়নের রেকর্ড তেমন সাফল্য দেখাতে কম সফল হয়েছে। যেমন চলতি বছরের বিগত দশ মাসে বাজেট বাস্তবায়ন হয়েছে মাত্র ৪৯ শতাংশ এবং বাকি ২ মাসে (মে ও জুন)  বাস্তবায়ন করতে হবে বাজেট ব্যয়ের ৫১ শতাংশ। এই সমস্ত প্রকল্পের ব্যয় মান নিয়ে অনেক প্রশ্ন রয়েছে। এই ধরনের একটি পরিস্থিতিতে এখন বাজেট বাস্তবায়নের সক্ষমতা রোডম্যাপ তৈরি,  রাজস্ব আদায়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা,  প্রকল্পের গুনগত বাস্তবায়ন ইত্যাদি বিষয় বিবেচনা করলে অনেক চ্যালেঞ্জই মোকাবেলা করা সম্ভব হবে। এখন প্রশ্নটি হলো তা কিভাবে সম্ভব। প্রধানমন্ত্রী  করোনা কালীন সময়ে (২০২০-২০২১)  তার বাজেট সমাপনী বক্তৃতায় মহান জাতীয় সংসদে বলেছিলেন করোনা মোকাবেলা করে বাজেট বাস্তায়ন সম্ভব হবে এবং অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন অর্থের কোন রকম অভাব হবে না।  এখন বাজেট বাস্তবায়নের সক্ষমতা মানেই এর সাথে সংযুক্ত জনশক্তি তথা প্রতিষ্ঠানিক কাঠামোর সক্ষমতা যা নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে যা সরকার অবগত আছে। কিন্তু এর উন্নয়নের গতিধারায় কবে নাগাদ এই সক্ষমতা একটি গ্রহনযোগ্য পর্যায়ে পৌছাবে তা বলা দুস্কর কিন্তু দেশ  উন্নয়নের দিকে যাচ্ছে যে গতিতে তারচেয়ে সক্ষমতা বৃদ্ধির গতি আরও বাড়ানো প্রয়োজন। এর জন্য প্রশিক্ষন ও তদারকির কোন বিকল্প নেই সত্যি কিন্তু একটি রোডম্যাপ ধরে আগাতে হবে। প্রায়শই জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এন,বি,আর,)  এর সক্ষমতা এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীভূক্ত প্রকল্পগুলোর ব্যয় দক্ষতা/ব্যয়ের মান নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন শোনা যায় বিশেষত;  অর্থনীতিবিদদের কাছ থেকে যার ভিত্তিগুলো সরকারকে আমলে নেয়া উচিত। কারণ রাজস্ব আয়ের আহরণের একটি বড় প্রতিষ্ঠান হলো এন,বি,আর যার সাথে সরকারের স্থায়ীত্বশিলতার প্রশ্নটি জড়িত। সেক্ষেত্রে উক্ত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের নৈতিকভিত্তি তথা প্রশাসনিক কাঠামো আরো জোরদার করতে হবে, নতুন নতুন করদাতা সংগ্রহ উপজেলায় আরও অফিস স্থানান্তর করতে হবে  এবং বেশী বেশী কর মেলার আয়োজন নতুন অঞ্চলগুলোতে করতে হবে। আবার উন্নয়ন প্রকল্পের বাস্তবায়ন দক্ষতা বৃদ্ধি, ব্যয়ের মান উন্নয়ন ও অব্যাহত দুর্নীতি প্রতিরোধে উদ্যেগী মন্ত্রনালয়, বাস্তবায়নকারী সংস্থা, পরিকল্পনা কমিশন, অর্থ মন্ত্রনালয়ের অর্থ অনুবিভাগকে উন্নয়নের সহযাত্রী হিসাবে কাজ করতে হবে।

দ্বিতীয়: প্রসংগটি হলো বৈশ্বিক অবস্থার উন্নতি না হলে দেশের আমদানী-রফতানীতে পুর্বের অবস্থায় ফিরে যেতে সময় লাগবে তার সাথে যুক্ত হতে পারে বৈদেশিক ও আভ্যন্তরীন বিনিয়োগে স্থবিরতা, কর্মহীনতা, ভোগ চাহিদা ও সরবরাহ চেইনে বাধাগ্রস্থতা, রাজস্ব আদায়ে স্থবিরতা ইত্যাদি। বর্তমান সরকার যে গতিতে এই পরিস্থিতির মোকাবেলা করছে তা আন্তর্জ্যাতিকভাবে প্রশংশীত হয়েছে এবং অর্থনীতি আবার ঘুরে দাড়াতে পাড়বে কারন  প্রবৃদ্ধির চেয়ে এখন টিকে থাকাটাই বিবেচ্য বিষয়; 

তৃতীয়ত: আয়কর আইনের পরিবর্তনের ফলে প্রত্যক্ষ কর কমে যেতে পারে এবং কাল টাকার সাদা করার/পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনা বিষয়টি উন্মোক্ত করায় এই সুযোগটিও সদ্ব্যবহার করা উচিত। রফতানি শুল্ক হারে যে সকল পরিবর্তন এসেছে তা বিনিয়োগ তথা ব্যবসা বান্ধব বিশেষত: করোনার সৃষ্ট অর্থনৈতিক অবস্থা ও ব্যবসায়ীদের চাহিদার বিবেচনায়। কিন্তু ইন্টারনেট ও সিম ব্যবহারে যে মুসক বৃদ্ধি করা হয়েছে তাতে হয়ত রাজস্ব বাড়বে কিন্তু সমালেচনা বাড়বে অনেক বেশী। আমানতকারীদের ব্যাংক হিসাব থেবে এস্কাইজ কর কেটে নেয়া অজনপ্রিয় আর একটি পদক্ষেপ যা আমানতের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। বড় বাজেট কোন সমস্যা নয়, বাস্তবায়নের সক্ষমতা বাড়াতে হবে, অপচয় কমাতে হবে, সরকার ষোষিত যে প্রনোদনা ঘোষনা দেওয়া হয়েছে তা সঠিক সময়ে যোগ্য লোকদের হাতে যাতে যায় এদিকে নজর দিতে হবে। 

চতুর্থত: বর্তমান সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে অচল অর্থনীতিকে সচল রাখা, বেকার ও ক্ষুধা রোখা, করোনায় ক্ষতি পুনরুদ্ধার ও পুনর্বাসন, করোনায় সৃষ্ট মন্দা মোকাবিলা এবং সম্ভাব্য সুযোগের  (কৃষি, স্বাস্থ্য খাত, আইটি,  দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার খাতে অধিক মনোযোগ ও দক্ষ জনবল সৃষ্টিসহ বিদেশ ফেরত বিদেশি বিনিয়োগ ঘরে আনা)  সদ্ব্যবহার ও অনিশ্চিত পরিস্থিতি মোকাবিলার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ,  কর্ম পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন দিক নির্দেশনা প্রস্তাবিত বাজেটে প্রতিফলন থাকতে হবে; 

সর্বশেষ: বাংলাদেশ বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে যাচ্ছে, ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগে বড় উলম্ফন হতে যাচ্ছে- এ ধরনের অনুমান আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে ভুল বার্তা দিতে পারে যা কোভিড মোকাবিলায় তহবিল পাওয়ার ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এখন প্রবৃদ্ধির চেয়ে মানুষের জীবনযাত্রা ও কর্মসংস্থান কতটা টেকসই হবে, সেদিকে নজর রাখতেই হবে। বাজেট বছরে করোনা, সম্ভাব্য বৈশ্বিক মন্দা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা ও জাতীয় পুঁজি সংবর্ধন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারলে আশাতিত প্রবৃদ্ধি অর্জন হয়তো সহজ হবে।

লেখক: অধ্যাপক (অর্থনীতি), ডীন, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ ও সিন্ডিকেট সদস্য, সিটি ইউনিভার্সিটি, ঢাকা।
 


Comment As:

Comment (0)