455_1

চীনে ২০২৬ সালে দ্বিগুণ হবে মিলিয়নেয়ারের সংখ্যা

বিনিয়োগবার্তা ডেস্ক: আড়াই বছরেরও বেশি সময় জিরো কভিড নীতি অব্যাহত রেখেছে চীন। সংক্রমণ বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে বারবার আরোপ করা হচ্ছে লকডাউন। পাশাপাশি রিয়েল এস্টেট খাতে মন্দার কারণে ধীর হয়ে পড়ছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির কার্যক্রম। আবার সম্পদের বৈষম্য কমানোর জন্য বেইজিং নানামুখী পদক্ষেপ নিচ্ছে। এ অবস্থায়ও দেশটিতে ধনকুবেরের সংখ্যা বাড়ছে। ক্রেডিট সুইস একটি প্রতিবেদনে পূর্বাভাস দিয়েছে, ২০২৬ সাল নাগাদ চীনে মিলিয়নেয়ারের সংখ্যা দ্বিগুণ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, চীনে মোট পারিবারিক সম্পদ ২০২১ সালে ৮৫ লাখ ১০ হাজার কোটি ডলারে পৌঁছেছে। এ সম্পদের পরিমাণ ২০২০ সালের ১১ লাখ ২০ হাজার কোটি ডলারের চেয়ে ১৫ দশমিক ১ শতাংশ বেশি।

বেইজিংয়ের সাধারণ সমৃদ্ধির ঘোষণা সাম্প্রতিক বছরগুলোয় রাজনৈতিক বক্তৃতায় ব্যাপকভাবে বেড়েছে। সম্পদের বৈষম্য কমাতে নেয়া এ উদ্যোগের অংশ হিসেবে প্রযুক্তি ও বেসরকারি শিক্ষাসহ কিছু শিল্পে নিয়ন্ত্রণ আরোপ জোরদার করেছে সরকার। এ পদক্ষেপ বিনিয়োগকারীদের বিচলিত করেছে এবং অনেক প্রতিষ্ঠান দেশটির বাইরে কার্যক্রম সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিয়েছে।

সুইস বিনিয়োগ ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২১ সালে চীনে ৬২ লাখ মিলিয়নেয়ার ছিল। এ সংখ্যা আগের বছরের চেয়ে ১০ লাখ বেশি। গত বছর বিশ্বব্যাপী মোট মিলিয়নেয়ারের সংখ্যা ছিল ৫২ লাখ। পাঁচ বছরের মধ্যে এ সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে ১ কোটি ২২ লাখে উন্নীত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

কভিডজনিত লকডাউনের কারণে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি দ্বিতীয় প্রান্তিকে মাত্র ১ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়েছে। যদিও প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় দেশটির মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ২ দশমিক ৫ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে। তবে কভিড ও রিয়েল এস্টেট খাতের সংকট ভোক্তা এবং ব্যবসায়িক আস্থায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এমন পরিস্থিতিতেও দেশটিতে ধনকুবের বাড়ার পূর্বাভাস প্রকাশ করল ক্রেডিট সুইস।

গত বছর বিশ্বজুড়ে পারিবারিক সম্পদ ১২ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছে। মুদ্রার বিনিময় হারের বিষয়গুলো বাদ দিলে এটা সবচেয়ে দ্রুততম বার্ষিক বৃদ্ধি। এমন পরিস্থিতিতে সম্ভাবনা ভূরাজনৈতিক সংকট ও আর্থিক অনিশ্চয়তার কারণে সৃষ্ট ঝুঁকিকে ছাপিয়ে গিয়েছে। ২০২১ সালের শেষ নাগাদ বৈশ্বিক পারিবারিক সম্পদ ৪৬৩ লাখ ৬০ হাজার কোটি ডলারে পৌঁছেছে। আর্থিক সম্পদে উল্লম্ফনের কারণে পারিবারিক সম্পদ বেড়ে গিয়েছে। তবে এ সময়ে সম্পদবৈষম্য আরো বেড়েছে।

গত বছর যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও কানাডার পারিবারিক সম্পদ সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। ক্রেডিট সুইস জানিয়েছে, দেশগুলোর পারিবারিক সম্পদে যথাক্রমে ১৯ লাখ ৫০ হাজার, ১১ লাখ ২০ হাজার ও ১ লাখ ৮০ হাজার কোটি ডলার যুক্ত হয়েছে।

ক্রেডিট সুইস বোর্ডের চেয়ারম্যান অ্যাক্সেল লেহম্যান বলেন, মূল্যস্ফীতি, ইউক্রেন যুদ্ধ, সরবরাহ ব্যবস্থায় প্রতিবন্ধকতার প্রভাব এখনই মূল্যায়ন করা কঠিন। তবে চলতি বছর বৈশ্বিক সম্পদ বৃদ্ধি নিয়ে অনিশ্চয়তা অনেক বেশি। এজন্য সম্পদ বৃদ্ধির বিপরীতমুখী প্রভাব দেখা যেতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

যদিও সুইজারল্যান্ডের বেসরকারি এ ব্যাংক পাঁচ বছরের সম্পদ বৃদ্ধি নিয়ে আশাবাদী। ২০২৬ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী পারিবারিক সম্পদ ১৬৯ লাখ কোটি ডলার বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।

সম্প্রতি প্রকাশিত লন্ডনভিত্তিক অভিবাসন পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্সের সমীক্ষায় বলা হয়েছে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে মিলিয়নেয়ার বসবাসে বিশ্বের শীর্ষ শহর নিউইয়র্ক। যুক্তরাষ্ট্রের শহরটিতে ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৬০০ জন ধনকুবেরের বসবাস। মিলিয়নেয়ারের সংখ্যায় এর পরেই রয়েছে জাপানের আর্থিক কেন্দ্র টোকিও। এর পরে সান ফ্রান্সিসকো বে এরিয়া, লন্ডন ও সিঙ্গাপুর। এছাড়া ১ লাখ ৯২ হাজার ৪০০ জন মিলিয়নেয়ার নিয়ে তালিকায় ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে লস অ্যাঞ্জেলেস। এর পর শিকাগোয় ১ লাখ ৬০ হাজার ১০০, হিউস্টনে ১ লাখ ৩২ হাজার ৬০০, বেইজিংয়ে ১ লাখ ৩১ হাজার ৫০০ ও সাংহাইয়ে ১ লাখ ৩০ হাজার ১০০ জন মিলিয়নেয়ার রয়েছেন।

বিনিয়োগার্তা/এসএল//


Comment As:

Comment (0)