ই-অরেঞ্জ ও হাইকোর্ট

ই-অরেঞ্জের ১০ গাড়ি ও আড়াই কোটি টাকার এফডিআর জব্দের নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জ থেকে প্রতিষ্ঠাতা সোনিয়া মেহজাবীনের ২ কোটি ৫০ লাখ টাকার এফডিআর ও সংশ্লিষ্ট ১০টি গাড়ি জব্দের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। অন্যদিকে, শেখ সোহেল রানার অবস্থানের বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষ বলেছে সে পলাতক। তার বিষয়ে রেড নোটিশ জারি হয়েছে।

রবিবার (১৮ জুন) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এম. আব্দুল কাইয়ুম। বিএফআইইউর পক্ষে ছিলেন শামীম খালেদ আহমেদ। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন খালেদ।

হাইকোর্টের আদেশের বিষয়ে আইনজীবী আব্দুল কাইয়ুম জানান, বিএফআইইউ এক প্রতিবেদনে বলছে সোনিয়া মেহজাবীনের আয় করা ২ কোটি ৫০ লাখ টাকার এফডিআর আছে। আর এনবিআর বলছে ১০টি গাড়ি আছে। তবে আয়করে শুধু একটির কথা উল্লেখ করেছে। আদালত পরবর্তী আদেশ পর্যন্ত এফডিআর ও গাড়ি জব্দের নির্দেশ দিয়েছেন। বিআরটিএর চেয়ারম্যানকে বলেছেন-এসব গাড়ি যেন হস্তান্তর না হয়। পাশাপাশি এসব গাড়ির অবস্থান নিয়ে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন। আগামী ২৩ জুলাই পরবর্তী আদেশের জন্য দিন রেখেছেন।

এছাড়া গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের ঘটনায় অভিযুক্ত ই-অরেঞ্জের সঙ্গে সম্পৃক্ত সোনিয়ার ভাই বরখাস্ত পুলিশ পরিদর্শক শেখ সোহেল রানাকে ২০২১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর সীমান্ত এলাকা থেকে আটক করা হয়। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সদস্যরা অনুপ্রবেশের অভিযোগে পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার চ্যাংড়াবান্ধা সীমান্ত থেকে তাকে আটক করে। শেখ সোহেল রানার অবস্থানের বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আদলতকে বলেছেন- সে পলাতক। তার বিষয়ে রেড নোটিশ জারি হয়েছে।

প্রসঙ্গত, বহুল আলেচিত ই-কর্মাস প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জ থেকে ৭৭ কোটি টাকার পণ্য কিনে প্রতারণার শিকার ৫৪৭ জন গ্রাহকের পক্ষে মো. আফজাল হোসেন, মো. আরাফাত আলী, মো. তরিকুল আলম, সাকিবুল ইসলাম, রানা খান ও মো. হাবিবুল্লাহ জাহিদ নামের ছয়জন গ্রাহক গত বছরের মার্চে হাইকোর্টে রিট করেন।

রিটে ই-অরেঞ্জের মালিক সোনিয়া মেহজাবিন ও তার ভাই সোহেল রানা, বিথি আক্তারসহ ই-অরেঞ্জের সঙ্গে সম্পৃক্তদের কার কোথায় কত সম্পদ আছে তা তদন্ত করতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এবং বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) কর্মকর্তাদের দিয়ে কমিটি গঠনের নির্দেশনাসহ রুল চাওয়া হয়।

রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে একই বছরের ৭ এপ্রিল হাইকোর্ট রুল জারি করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) এর কাছে প্রতিবেদন চান।

একইসঙ্গে সোহেল রানা, সোনিয়া মেহজাবিন ও বিথি আক্তারসহ সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে টাকা উদ্ধার করে ক্ষতির অনুপাতে রিট আবেদনকারীসহ প্রতারিত অন্য গ্রাহকদের মাঝে সে টাকা বণ্টনের নির্দেশ কেন দেয়া হবে না তা জানতে চাওয়া হয়।

স্বরাষ্ট্র সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, দুদক চেয়ারম্যান, পুলিশের মহাপরিদর্শক, বাণিজ্য সচিব, বিএফআইউ’র প্রধান, সোহেল রানা, সোনিয়া মেহজাবিন ও বিথি আক্তারকে রুলের জবাব দিতে বলেন আদালত।

বিনিয়োগবার্তা/এএইচএস//


Comment As:

Comment (0)