এহসানুল হক খান

ভৌগোলিক অবস্থানের সুযোগ নিতে পারে বাংলাদেশ

মো: এহসানুল হব খান পাঠান: ‘আঞ্চলিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ একটি চমৎকার ভৌগোলিক অবস্থানে রয়েছে। আমাদের কোস্ট লাইন বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাণিজ্য করার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। সুযোগটি কিন্তু প্রতিবেশী ভারতের সেভেন সিস্টারস, নেপাল বা ভুটানের নেই। সেই জায়গায় বাংলাদেশ তার ভৌগোলিক অবস্থানের সুযোগ নিতে পারে।

পঞ্চগড় থেকে নেপাল এবং ভুটানের দুরত্ব খুবই কম, এবং দুটি দেশই ল্যান্ডলক অর্থাৎ কোন সী এক্সেস নাই। বাংলাবান্ধা পোর্ট দিয়ে যদি নেপাল এবং ভুটানকে রেলসংযোগে বাংলাদেশের মোংলা পোর্টে এক্সেস দেয়া যায়, তবে প্রচুর রাজস্ব অর্জন সম্ভব! সুন্দর পরিকল্পনা, সমস্যা একটাই। বাংলাবান্ধার পরে ভারতের রেল কোরিডোর ব্যাবহার করে দেশদুটিকে কানেক্ট করতে হবে! সমাধান করতে পারলে প্রচন্ড সম্ভাবনাময় একটি প্রোজেক্ট। 

ভারত বাংলাদেশের যে রেলপথ দিয়ে আন্তর্দেশীয় যোগাযোগ অবকাঠামো নির্মাণ করতে চায়, সেই রেলপথের জন্য পূর্ণাঙ্গ সমীক্ষা করতে হবে। অন্য একটি দেশের ট্রেন যখন দেশে ঢুকবে, তখন কিন্তু ট্রেনের অপারেশনাল ডিজরাপশন (পরিচালনায় ব্যাঘাত) তৈরি হবে। তারপর সিকিউরিটির জন্য টাকা খরচ আছে। আমার অবকাঠামো অবচয় কত হবে, প্রতি বছর সেটি হিসাব করতে হবে। ভারত যে সুবিধা পাবে তা যেন নেপাল ও ভুটানও সমভাবে পায়। শুধু যেন একটি দেশ সুবিধা না পায়, সেটিও দেখতে হবে।

আমি যখন মাশুল নির্ধারণ করার ক্ষেত্রে আলোচনার টেবিলে বসব, তখন জেনে নিতে হবে প্যাসেঞ্জার বা কার্গো রেল-চলাচলে আমাদের হিস্যা কী হবে। কারণ, আমরা দেখছি, নৌ-বন্দর আর সমুদ্র বন্দরে আমাদের হিস্যা ন্যায্য নয়।

বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারত যে রেল-সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে যোগাযোগের যে নতুন ক্ষেত্র তৈরি করতে চায়, তা আদতে একটি ‘ওপেন ডোর’ পলিসি। এ সম্পর্ক উন্নয়নের মূল কথা হলো, ন্যায্যতার ভিত্তিতে সমতাভিত্তিক উন্নয়নের সুযোগ দেওয়া। কেউ এগিয়ে যাবে, কেউ পিছিয়ে যাবে— এ নীতিতে আসলে উন্নয়ন স্থিতিশীল হয় না।

লেখক: সাংবাদিক ও বিশ্লেষক।

বিনিয়োগবার্তা/এসএএম//


Comment As:

Comment (0)