পুঁজিবাজারে বাংলার প্রচলন বাড়ান

সম্পাদকীয়: শেয়ারবাজার, প্রাইমারি মার্কেট, সেকেন্ডারি মার্কেট, সিকিউরিটিজ, ব্রোকার, পিই রেশিও, পাবলিক ইস্যু রুলস, ইনভেস্টর এ্যাওয়ারনেস, স্টেক হোল্ডার, ট্রেক হোল্ডার, ডিভিডেন্ড, কমপ্লায়েন্স, ডেরিভেটিভ, লট- দেশের পুঁজিবাজারে প্রচলিত এসব শব্দগুলোর প্রায় সবই ইংরেজী শব্দ। বাংলা ভাষাভাষির এদেশের সকল ক্ষেত্রে বাংলা ভাষাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার বিধান প্রচলিত রয়েছে। এমনকি বৃটিশ আমল থেকে প্রচলিত বিচার ব্যবস্থা ও আদালতের দেওয়া রায়ের ক্ষেত্রেও বাংলা ব্যবহার করতে বলা হচ্ছে। অথচ দেশের পুঁজিবাজারে এখনো সিংহভাগ ক্ষেত্রে ইংরেজী ভাষার ব্যবহার হচ্ছে। এ বাজারে ইংরেজী ব্যবহারের অধিক্যতার কারণে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা পদে পদে প্রতারিত হচ্ছেন। অপ্রিয় হলেও সত্য যে, আমাদের দেশের অধিকাংশ শিক্ষিত লোকের মধ্যেও ইংরেজী শব্দ বা ভাষা বলা বা ব্যবহার করার ক্ষেত্রে অনেক জড়তা লক্ষনীয়।

প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ি, দেশের পুঁজিবাজারে প্রায় ৩২ লাখ বিনিয়োগকারী রয়েছেন। এসব বিনিয়োগকারীদের সবাই কি উচ্চ শিক্ষিত? না-তা নয়। একজন বিনিয়োগকারী বা উপার্জনযোগ্য লোকের সঙ্গে তার বাবা-মা, স্ত্রী-পুত্র-কন্যাসহ গড়ে অন্তত ৫জন লোকের রিজিক বা ভরণ পোষণ জড়িত বলে আমরা ধরে নিচ্ছি। এ হিসাবে প্রায় দেড় কোটি লোক পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের উপর নির্ভরশীল। অথচ বাংলা ভাষার ব্যবহার না থাকায় এসব বিনিয়োগকারীদের আপনজনরা তার ব্যবসা-বাণিজ্য বা আয় দায় সম্মন্ধে মোটেও ওয়াকিবহাল থাকতে পারছেন না। এছাড়া ইংরেজী ব্যবহারের ফলে দেশের আপামোর সাধারণ মানুষও পুঁজিবাজার সম্মন্ধে অনেক কিছুই বুঝতে সক্ষম হচ্ছে না।

তাই আমরা মনে করি, দেশের পুঁজিবাজারের গভীরতা বাড়াতে ও বাজারকে আরও গতিশীল করতে, সর্বোপরি, এ  বাজারে অধিক হারে বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে এবং দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে পুঁজিবাজারের ভূমিকা বাড়াতে এখানে বাংলার প্রচলন বাড়ানো উচিত।

(বিনিয়োগবার্তা/ ২০ আগস্ট ২০১৬)


Comment As:

Comment (0)